মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুদ্ধ আর নিষেধাজ্ঞা বন্ধ করুন: জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বান


প্রকাশের সময় :২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ৫:০৮ : পূর্বাহ্ণ

স্টাফ রিপোর্টারঃ

জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “আসুন, সবাইকে এক সঙ্গে নিয়ে হাতে হাত মিলিয়ে আমরা একটি উত্তম ভবিষ্যৎ তৈরির পথে এগিয়ে যাই।“

বিশ্ব যখন সঙ্কটে, পারস্পরিক সংহতি যখন সবচেয়ে বেশি জরুরি, তখন যুদ্ধ আর ক্ষমতাধরদের পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞার চক্করে বিশ্বে মানুষের জীবন-জীবিকা যে মহাসঙ্কটে পড়ছে, জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে সেই বাস্তবতা বিশ্ব মোড়লদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশের সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের নেতা হিসেবে শুক্রবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা বললেন, যুদ্ধ বা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা-নিষেধাজ্ঞার মত বৈরীপন্থা কখনও কোনো জাতির মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। আলাপ-আলোচনাই সঙ্কট ও বিরোধ নিষ্পত্তির সর্বোত্তম উপায়।

“আমরা ইউক্রেন ও রাশিয়ার সংঘাতের অবসান চাই। নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা-নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে একটি দেশকে শাস্তি দিতে গিয়ে নারী, শিশুসহ ও গোটা মানবজাতিকেই শাস্তি দেওয়া হয়। এর প্রভাব কেবল একটি দেশেই সীমাবদ্ধ থাকে না বরং সকল মানুষের জীবন-জীবিকা মহাসঙ্কটে পতিত হয়। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়।

“খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়। বিশেষ করে, শিশুরাই বেশি কষ্ট ভোগ করে। তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে হারিয়ে যায়।”

বিশ্বের মানুষ ২০২০ সাল শুরু করেছিল ভয়াল এক মহামারীর দুঃস্বপ্ন নিয়ে। এরপর আড়াই বছরে চোখে না দেখা এক ভাইরাস কেড়ে নিয়েছে সাড়ে ৬৫ লাখ মানুষের প্রাণ, যারা বেঁচে গেছে, তাদের জীবন-জীবিকাকে করেছে বিপর্যস্ত, অর্থনীতিকে করেছে স্থবির।

টিকা উদ্ভাবনের কল্যাণে সেই বিপদ কাটিয়ে ওঠার স্বপ্ন যখন মানুষ দেখতে শুরু করলো তখন শুরু হলো ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্র আর ইউরোপের তরফ থেকে একের পর এক অবরোধ আর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা এল, রাশিয়াও দিল পাল্টা নিষেধাজ্ঞা। তার ফল হল ভয়ঙ্কর।

গত ফেব্রুয়ারিতে ওই যুদ্ধ শুরুর পর থেকে জ্বালানি তেলের দাম আর খাদ্যের দাম বেড়ে গিয়ে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন করে তুলেছে। বিশ্বকে ফেলে দিয়েছে নতুন এক অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কায়।

সেই বিপদের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে শেখ হাসিনা জাতিসংঘে তার ভাষণে বলেন, “বিশ্ব বিবেকের কাছে আমার আবেদন, অস্ত্র প্রতিযোগিতা, যুদ্ধ, স্যাংশন বন্ধ করুন। শিশুকে খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপত্তা দিন। শান্তি প্রতিষ্ঠা করুন।”

প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত পররাষ্ট্রনীতির মূল প্রতিপাদ্য– সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরীতা নয়।

১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া প্রথম ভাষণ থেকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন “শান্তির প্রতি যে আমাদের পূর্ণ আনুগত্য তা এই উপলব্ধি থেকে জন্মেছে যে, একমাত্র শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই আমরা আমাদের কষ্টার্জিত জাতীয় স্বাধীনতার ফল আস্বাদন করতে পারব এবং ক্ষুধা, দারিদ্র্য, রোগ-শোক, অশিক্ষা ও বেকারত্বের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার জন্য আমাদের সকল সম্পদ ও শক্তি নিয়োগ করতে সক্ষম হব।

“সুতরাং আমরা স্বাগত জানাই সেই সকল প্রচেষ্টাকে, যার লক্ষ্য বিশ্বে উত্তেজনা হ্রাস করা, অস্ত্র প্রতিযোগিতা সীমিত করা, এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকাসহ পৃথিবীর প্রত্যেকটি স্থানে শান্তিপূর্ণ সহ-অবস্থান নীতি জোরদার করা।”

২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে বাংলাদেশ সীমান্তে রোহিঙ্গাদের ঢল নামার পর থেকে জাতিসংঘের প্রতিটি সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিশ্ব নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এবারও তার ব্যতিক্রম নয়।

তিনি বলেন, গত মাসে রোহিঙ্গাদের গণহারে বাংলাদেশে প্রবেশের পাঁচ বছর পূর্ণ হয়েছে। তাদের মিয়ানমারে নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরিতে দ্বিপক্ষীয়, ত্রিপক্ষীয় এবং জাতিসংঘসহ অন্যান্য অংশীজনদের নিয়ে আলোচনার পরও একজন রোহিঙ্গাকেও তাদের মাতৃভূমিতে ফেরত পাঠানো যায়নি।

“মিয়ানমারে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সশস্ত্র সংঘাত বাস্তচ্যূত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনকে আরও দুরূহ করে তুলেছে। আশা করি, এ বিষয়ে জাতিসংঘ কার্যকর ভূমিকা রাখবে।”

ট্যাগ :