মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিয়ে মেয়র ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ


প্রকাশের সময় :১৪ আগস্ট, ২০২৩ ৪:২৪ : পূর্বাহ্ণ

স্টাফ রিপোর্টার:

সামান্য বৃষ্টি হলেই ডুবে যাচ্ছে চট্টগ্রম নগরী। এবার নগরীতে জলাবদ্ধতা যে ভয়ংকর রূপ নিয়েছে, তা অতীতে কখনও দেখেনি নগরবাসী। টানা চার দিনের বৃষ্টিতে হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এমন পরিস্থিতিতে নগরবাসীর মনে ক্ষোভ ও হতাশা বাড়ছে।

নগরীর এই জলাবদ্ধতা নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) এখন মুখোমুখি অবস্থানে। জলাবদ্ধতা ও দুর্ভোগের জন্য দুই সংস্থা একে অপরকে দোষারোপে ব্যস্ত। এ যেন ‘উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে’ চাপানোর চেষ্টা।

গত ৪ থেকে ৭ আগস্ট চার দিন টানা বৃষ্টিপাত হয়। এতে নগরীর ৪০ শতাংশ এলাকা ডুবে যায়। অন্তত ১৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এ দুর্ভোগ থেকে বাদ যায়নি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর বাড়িও। জলাবদ্ধতার পানি তার বাড়িতেও ঢুকেছে।

চসিক-সিডিএ বিরোধ শুরু যেভাবে

জলাবদ্ধতার দ্বিতীয় দিনে শনিবার (৫ আগস্ট) দুপুরে রিকশায় চড়ে নিজ বাড়িতে যাওয়ার সময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘মানুষ সিটি করপোরেশনকে গালিগালাজ করছে। অথচ জলাবদ্ধতা নিরসনে সিটি করপোরেশনের কোনও হাত নেই। আমি বলেছি, ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার জন্য। এ পর্যন্ত কোনও দিন কোনও কাউন্সিলরকে ডাকেনি সিডিএ।’

মেয়র অভিযোগ করে বলেন, ‘সিডিএ বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে যোগ্য নয়। প্রকল্প বাস্তবায়নে সিডিএ’র গাফিলতি রয়েছে।’

এ নিয়ে গত ৬ আগস্ট মেয়র মো. রেজাউল করিম তার ব্যবহৃত ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘ওপর থেকে ময়লা পরিষ্কার করে দিলাম, কতগুলো পলিথিন পরিষ্কার করে দিলাম, সেটাকে তো খাল পরিষ্কার বলা যাবে না। মাটি উত্তোলন করতে হবে। যত দোষ নন্দ ঘোষ, সব মেয়রের দোষ। কিন্তু এ মেগা প্রকল্পে তো মেয়রের কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই। এ প্রকল্পে কিছু করার মতো ক্ষমতাও নেই মেয়রের।’

‘শুধু খালের দুই পাড়ে দেয়াল দিলে হবে না। খাল থেকে মাটি তুলতে হবে। প্রকল্পের ডিপিপিতে ৯ দশমিক ৫ (১১ লাখ কিউবেক মিটার) মাটি উত্তোলনের কথা লেখা আছে। সে পরিমাণ মাটি তুলেছে? মাটি উত্তোলন করা না হলে প্রকল্পের সাফল্য আসবে না।’

‘যে ওয়ার্ডের কাজ (মেগা প্রকল্পের) করবে, ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে বলেছি। তারা (সিডিএ) তো করপোরেশনকে কোনও কিছু জানায়নি। তারা তাদের ইচ্ছেমতো কাজ করছে। এত বড় প্রকল্প, চট্টগ্রামবাসীর বাঁচা-মরার প্রশ্ন, এরপরও তারা সমন্বয় করছে না।’—লেখেন মেয়র।

চসিক মেয়রের অভিযোগের জবাবে বুধবার (৯ আগস্ট) সংবাদ সম্মেলনে সিডিএর চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, ‘চসিক মেয়র ভুল তথ্য দিয়ে সিডিএ’র বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন। নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ সিডিএ’র না। সিটি করপোরেশন জলাবদ্ধতার কাজ ঠিকভাবে করতে না পারায় সিডিএকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে আমরা কাজ করছি। প্রকল্প বাস্তবায়নে সিডিএ’র কোনও গাফিলতি নেই। কাজ চলমান আছে। প্রকল্পের আওতায় থাকা খালে কোনও ময়লা নেই, পরিষ্কার রয়েছে। নালা-ড্রেন পরিষ্কার না করায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। নালা-ড্রেন পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব তো সিটি করপোরেশনের। যেটা সত্য, সেটাই বলছি। আমরা কাউকে দোষারোপ করছি না।’

সিডিএ চেয়ারম্যানের এমন বক্তব্যের জবাবে বুধবার বিকালে মেয়র সাংবাদিকদের বলেন, ‘একজন আরেকজনকে দোষারোপ করার সংস্কৃতিতে আমি বিশ্বাস করি না। জলাবদ্ধতা হচ্ছে, মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। মানুষ আমাকে ও কাউন্সিলরদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। অন্য কোনও সংস্থায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নেই। তাই ভালোমন্দ হলে মানুষ আঙুল তোলে মেয়রের দিকে। তারা গালি দেয়, সুনামও করে। এটা তাদের অধিকার।’

মেয়র বলেন, ‘আমি কাউকে দোষারোপ করবো না। কিন্তু সিডিএ’র চিফ ইঞ্জিনিয়ার একজন সরকারি কর্মচারী। উনি সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত কাউন্সিলরদের প্রতি আঙুল উঁচু করে কথা বলতে পারেন না। সিটি করপোরেশনকে দোষারোপ করতে পারে না। উনি কোন জরিপের ওপর ভিত্তি করে বলছেন যে, নালাগুলো ভরাট তাই জলাবদ্ধতা হচ্ছে। উনি কি জরিপ চালিয়েছেন? অনুমান করে কাউকে দোষারোপ করা সমীচীন নয়। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প সিটি করপোরেশনের হাতে নেই।’

ভুক্তভোগী নগরবাসী যা বলছেন

চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাট এলাকার বাসিন্দা মইন উদ্দিন বলেন, আগে জলাবদ্ধতা হলে বহদ্দারহাট এলাকায় হাঁটুপানি হলেও এবার কোমর থেকে বুকসমান পানিতে ডুবেছে বহদ্দারহাট। যেখানে আগে পানি ওঠেনি, সেসব অলিগলি, সড়ক ছাড়িয়ে অধিকাংশ বাসা-বাড়ির নিচতলা ডুবে গেছে।

বাকলিয়া থানাধীন মাস্টারপুল এলাকার বাসিন্দা মো. সাইফুল আলম বলেন, এবারের মতো নগরীতে জলাবদ্ধতা অতীতে কখনও দেখিনি। পুরো চার দিনই বাকলিয়াসহ আশপাশের অধিকাংশ এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটিয়েছে। অধিকাংশ ঘরের চুলা পর্যন্ত ডুবে গেছে। এ কারণে ঘরে রান্না হয়নি। পানিবন্দি মানুষগুলোকে দেওয়া হয়নি পর্যাপ্ত ত্রাণসহায়তা।

চকবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. ওয়াসিম বলেন, চকবাজারের জলাবদ্ধতা অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করেছে। অথচ নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে হাজার কোটি টাকার কাজ চলমান। আমরা নগরবাসীরা আশা করবো এই সমস্যা সমাধানে যথাযথ কর্তৃপক্ষ অতিসত্বর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

ট্যাগ :