মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ! দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিলেন ইমরান


প্রকাশের সময় :১১ এপ্রিল, ২০২২ ৯:৫৪ : অপরাহ্ণ

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

পাকিস্তানের নয়া প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন মিয়া মোহাম্মদ শাহবাজ শরিফ। সোমবার (১১ এপ্রিল) পাকিস্তান পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি তাকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেছে।

শাহবাজের নিজের দল মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)-এর পাশাপাশি পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি), মুত্তাহিদা মজলিস-ই-আমল-সহ বেশ কয়েকটি দলের সমর্থন পেয়েছেন শাহবাজ। তবে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির বৃহত্তম দল, সদ্য-প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফ পাকিস্তান (পিটিআই) নয়া প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের উদ্যোগের বিরোধিতা করে সভা থেকে ওয়াকআউট করে।

দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন বলছে, পাকিস্তানের ২৩ তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন পিএমএল-এনের প্রেসিডেন্ট শেহবাজ শরিফ। পিটিআইয়ের সদস্যরা ভোট বর্জন করায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে ১৭৪ জন আইনপ্রণেতা তার পক্ষে ভোট দেন।

পার্লামেন্টে এই ভোটাভুটিতে শাহবাজ শরিফের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন পিটিআইয়ের সহ–সভাপতি ও সদ্য বিদায়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি। তাঁর নেতৃত্বে পিটিআইয়ের আইনপ্রণেতারা অধিবেশন বর্জন করায় শাহবাজের আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো না। পরে ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ১৭২ জন সদস্যের সমর্থন লাগে, সেখানে ১৭৪ জনের রায় পেয়েছেন শাহবাজ শরিফ।

৭০ বছর বয়সী শাহবাজের জন্ম লাহোরে। ধনী ব্যবসায়ী পরিবারের এই সন্তানের পড়াশোনা পাকিস্তানেই। পড়াশোনা শেষে পারিবারিক ব্যবসায় যোগ দেন তিনি। বর্তমানে পাকিস্তানের একটি ইস্পাত কারখানায় যৌথ মালিকানা রয়েছে তার।

শাহবাজের রাজনৈতিক জীবন শুরু ১৯৯৭ সালে, পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে। ১৯৯৯ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানে কারারুদ্ধ হন তিনি। পরের বছরেই সৌদি আরবে নির্বাসনে পাঠানো হয় তাঁকে।

দীর্ঘদিন নির্বাসনে থাকার পর ২০০৭ সালে নিজ দেশে ফিরে আসেন শাহবাজ। আবার পা রাখেন রাজনীতিতে। ২০০৮ সালে নির্বাচনে জিতে ফের পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। তৃতীয় মেয়াদে শাহবাজ প্রদেশটির মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন ২০১৩ সালে।

শাহবাজ জাতীয় রাজনীতিতে পা রাখেন তাঁর ভাই নওয়াজ শরিফ দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে পাকিস্তান ত্যাগের পর। এরপর তিনি পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ) সভাপতির দায়িত্ব পান। তবে নওয়াজের বিরুদ্ধে ওই মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল বলে দাবি করে আসছে তাঁর পরিবার ও সমর্থকেরা।

শাহবাজ শরিফের বিরুদ্ধেও একাধিক দুর্নীতির মামলা হয়েছে। ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালেও মামলার মুখে পড়েছেন তিনি। তবে সেসব মামলায় শাহবাজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আদালতে প্রমাণিত হয়নি।

এদিকে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে সুসম্পর্কের দিক দিয়ে ভাই নওয়াজের চেয়ে শাহবাজ আলাদা বলে উল্লেখ করেছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁদের ভাষ্য, শাহবাজের সঙ্গে সেনাবাহিনীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। পারমাণবিক শক্তিধর এ দেশটিতে পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত নীতিতে ব্যাপক প্রভাব রয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর।

পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন ইমরান খান। গত শনিবার বিরোধী দলীয় এমপিদের অনাস্থা ভোটের কারণে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন তিনি।

সোমবার (১১ এপ্রিল) ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) জ্যেষ্ঠ নেতা ও কেন্দ্রীয় সরকারের সাবেক তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধরি পকিস্তানের জাতীয় দৈনিক ডনকে বলেন, ‘আগামী বুধবার (১৩ এপ্রিল) থেকে দেশজুড়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু করছি আমরা। দলের প্রথম বিক্ষোভ সমাবেশ হবে পেশোয়ারে।’

সফল ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিতে আসা ইমরান ২০১৮ সালে দুর্নীতিমুক্ত, সমৃদ্ধ, বিশ্বের কাছে শ্রদ্ধা পাওয়ার মতো দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়ে ভোটে জিতে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন।

তবে ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে সেনা শাসনে থাকা পাকিস্তানে তার ক্ষমতা আরোহনের নেপথ্যে সেনাবাহিনীর আশির্বাদ ছিল বলেই মনে করা হয়। যার উপর ভর করে বড় দুই দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ও মুসলিম লিগকে (নওয়াজ) হটিয়ে ক্ষমতায় বসেন তিনি।

সম্প্রতি সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গে ইমরানের সম্পর্কের অবনতির মধ্যে বিরোধী দলগুলো জোট বেঁধে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে জাতীয় পরিষদে।

সেটা আটকাতে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার মতো কৌশল ইমরান করলেও পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট তা আটকে দেয়। আদালতের আদেশেই শনিবার মধ্যরাতে অনাস্থা ভোটে ইমরানের বিদায় ঘণ্টা বাজে। তার আগে জাতীয় পরিষদের স্পিকার আসাদ কাইসার ও ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি পদত্যাগ করেন।

পাকিস্তানের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত কোনো সরকার প্রধান মেয়াদ পূর্ণ করতে না পারলেও ইমরানের আগে আর কাউকে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়নি।

শনিবার ক্ষমতা হারানোর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে প্রথম টুইটেই আন্দোলনের ডাক দিয়েছেলেন ইমরান খান। সেই টুইটবার্তায় তিনি বলেছিলেন, ‘পাকিস্তান ১৯৪৭ সালে স্বাধীন রাষ্ট্র হয়েছে ঠিকই, কিন্তু স্বাধীন হওয়ার সংগ্রাম আজ শুরু হল, ক্ষমতা পরিবর্তনে বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে। আর সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষার কাজটি বরাবর জনগণই করে আসছে।’

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইতোমধ্যে ইসলামাবাদ, করাচি, পেশোয়ার, লাহোরসহ সব বড় বড় শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ইমরানের সমর্থকরা। রোববার রাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়েও প্রবাসী পাকিস্তানীদের একাংশ ইমরান খানের সমর্থনে মিছিল করেছেন।

বিক্ষোভ মিছিল করার জন্য দলের সমর্থকদের ধন্যবাদ দিয়ে ইমরান খান, ‘গণতন্ত্রের দাবিতে ও বিদেশীদের সঙ্গে চক্রান্তে লিপ্ত থাকা কুটিলদের বিরুদ্ধে এত বড় স্বতস্ফূর্ত মিছিল পাকিস্তানের ইতিহাসে ঘটেনি। আমি মিছিলে অংশ নেওয়া সব পাকিস্তানিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

ট্যাগ :