স্টাফ রিপোর্টার:
শিক্ষাবিদ, ক্রীড়া সংগঠক ও ষাটের দশকে চট্টগ্রামের অন্যতম শীর্ষ ছাত্রনেতা প্রফেসর শায়েস্তা খান ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
সোমবার (২০ অক্টোবর) ভোর পাঁচটায় নগরীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
প্রফেসর শায়েস্তা খান কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বেশ কিছুদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আজ বাদ আসর জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদে জানাজা হবে। পরে মিসকিন শাহ মাজার সংলগ্ন কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
প্রফেসর শায়েস্তা খানের জন্ম ১৯৪৫ সালের ১০ জুন চট্টগ্রাম নগরীর আলকরণে। তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল ও সরকারি কমার্স কলেজের ছাত্র ছিলেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করেন। ষাটের দশকে সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রামের অন্যতম শীর্ষ ছাত্রনেতা ছিলেন শায়েস্তা খান। গণঅভ্যুত্থানসহ তৎকালীন রাজনীতিতে তিনি অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা রাখেন ।
পেশাগত জীবনে প্রফেসর শায়েস্তা খান চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ, ঢাকার সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ এবং চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন।
খেলা অন্তপ্রাণ মানুষ ছিলেন প্রফেসর শায়েস্তা খান। ১৯৬১-৬২ সালে তিনি চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ ছাত্র সংসদের ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন।১৯৬৩-৬৪ সালে একই কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন । ১৯৬৭ সালে সরকারি কমার্স কলেজে লেকচারার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৮ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত তিনি কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড কেন্দ্রীয় ক্রীড়া সাংঠনিক কমিটির সদস্য ছিলেন। ১০৯০ সাল থেকে চট্টগ্রাম মহানগরী ক্রীড়া সংস্থার আমৃত্যু সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
চিটাগং মেট্রোপলিটন কমার্স কলেজ ও উদয়ন ছোটদের স্কুলের প্রতিষ্ঠাতাও তিনি। ২০০১ সালে তাকে বর্ষসেরা ক্রীড়া সংগঠক নির্বাচিত করে বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতি।
১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই ‘দৈনিক মিছিল” নামে একটি পত্রিকা বের করেন । প্রথমে স্বনামে পরে সরকারি কলেজে চাকরির কারণে নেপথ্যে থেকে পত্রিকাটির সম্পদনার কাজ চালিয়েছেন। তিনি স্মৃতির জানালা খুলে চেয়ে দেখি শিরোনামে দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশে (২০০৫-২০০৭), দেখা শোনা ভাবা’ শিরোনামে দৈনিক আজাদীতে (২০০৭- ২০১২) এবং ‘ষাট দশকের ছাত্র রাজনীতি ও আমি শিরোনামে দৈনিক পূর্বদেশে (২০১৩-২০১৫) ধারাবাহিক কলাম লেখেন। সুপ্রভাতে ছাপা হওয়া লেখা নিয়ে পঞ্চাশ দশকের চট্টগ্রাম এবং আমার ছেলেবেলা’ বইটি প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালে। তিনি বিকম (অনার্স ও পাস কোর্স) শিক্ষার্থীদের জন্য রচনা করেন বাণিজ্যিক ও শিল্প আইন নামে একটি বই।