স্টাফ রিপোর্টারঃ
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হলেন সেই নিপুন বিশ্বাস। বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তার ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।
ভর্তি শেষে স্বাস্থ্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মো. তানভীর ইসলাম যখন তাকে রসিদ দেন তখন ডিনকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিপুন। নিপুন বলেন, ‘স্যার, আপনারা মানবিক না হলে আমি ভর্তি হতে পারতাম না। আপনারা আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন পূরণ করেছেন।’
এসময় ডিনও তাকে জড়িয়ে ধরে দরিদ্র বাবার স্বপ্ন পূরণে ভালোভাবে পড়াশোনা করার উপদেশ দেন। সেই সঙ্গে যবিপ্রবিতে পড়াশোনাকালীন তার যেকোনো সমস্যায় পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
এদিকে, নিপুনের পরিবারের আর্থিক সমস্যা বিবেচনা করে তার পড়াশোনার সব খরচ বহনের আশ্বাস দিয়েছেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার।
নিপুন বিশ্বাসের বাড়ি নীলফামারীর সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নে। তার বাবা প্রেমানন্দ বিশ্বাস পেশায় নরসুন্দর। মা দীপালী বিশ্বাস গৃহিণী। দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় নিপুন।
ছোটবেলা থেকে আর্থিক অনটনের শত বাধা পেরিয়ে নীলফামারীর মশিয়ুর রহমান কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন মেধাবী নিপুন। তার ছোট ভাই এবার স্থানীয় একটি স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেবে।
৩০ জানুয়ারি (রোববার) বিকেল ৫টায় যবিপ্রবির স্বাস্থ্যবিজ্ঞান অনুষদের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে তৃতীয়বারের মতো ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে উপস্থিত হতে না পারায় ভর্তি হতে পারেননি নিপুন বিশ্বাস। তিনি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছান ততক্ষণে বেজে যায় ১২টা ৮ মিনিট।
১৫ হাজার টাকায় মাইক্রোবাস ভাড়া করে ক্যাম্পাসে এসেছিলেন নিপুন। এতো টাকা খরচ করেও ভর্তি হতে না পেরে হতাশাগ্রস্ত হয়ে ক্যাম্পাসে বসেছিলেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সোস্যাল মিডিয়া । সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরালও হয়। এরপর মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) মানবিক দিক বিবেচনা করে এক আসন বাড়িয়ে নিপুনকে ভর্তির সুযোগ করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
নিপুন বিশ্বাস বলেন, আমি খুবই আনন্দিত। অবশেষে আমি ভর্তি হতে পেরেছি। আমি এখন যবিপ্রবিয়ান। তার ভর্তির পেছনে ভূমিকা রাখার জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
বিশেষ করে যবিপ্রবি উপাচার্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে নিপুন বলেন, ‘ভিসি স্যার আমাকে মানবিক দিক বিবেচনায় ভর্তি করে নিয়েছেন। এজন্য আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ।’