নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
করোনা ভাইরাস আতঙ্কের মধ্যেই আজ শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা-১০, গাইবান্ধা-৩ ও বাগেরহাট-৪ আসনের উপনির্বাচন। তবে ভোটারদের করোনা থেকে সুরক্ষায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখার কথা বলছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে ভোটাররা বলছেন, করোনা ভাইরাস একটি ছোঁয়াচে রোগ। এ থেকে বাঁচতে সরকার বলছে ঘরে থাকতে। এ অবস্থায় ভোট দিতে গিয়ে কেউ আক্রান্ত হলে এর দায় কে নেবে?
ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচন হবে ইভিএমে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে এ আসনের ভোটকেন্দ্রভিত্তিক মালামাল বিতরণ করা হয়। সেখানে দেখা যায়, প্রতিটি ভোট কক্ষের জন্য সরবরাহ করা হচ্ছে- ছবিসহ ভোটার তালিকা, স্ট্যাম্প প্যাড, পিতলের সিলমোহর, বল পয়েন্ট কলম, সুচ, মোমবাতি, টিস্যু, অমোচনীয় কালির কলম, গালা, হেসিয়ান ব্যাগ, সাদা কাগজ, ছুরি, সুতা, গামপট, দিয়াশলাই বক্স, স্ক্রু ড্রাইভার, ভ্যাসলিন, ছোট মখমলের কাপড়, করোনা প্রটেকশন টিস্যু ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার।
এর মধ্যে ভোটারদের করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য রয়েছে করোনা প্রটেকশন টিস্যু, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও একটি সচেতনতামূলক ব্যানার। আর ভ্যাসলিন ও ছোট মখমলের কাপড় দেওয়া হয়েছে ইভিএম মেশিনে যেসব ভোটারের আঙুলের ছাপ মিলবে না তাদের আঙুলে মখমলের কাপড় দিয়ে মোছানোর ও ভ্যাসলিন দেওয়ার জন্য।
ঢাকা-১০ উপনির্বাচনের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জিএম সাহাতাব উদ্দিন বলেন, ভোটারদের বলব, আপনারা ভোট দিতে আসুন। করোনা ভাইরাস থেকে ভোটাদের সুরক্ষা দিতে আমাদের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে থাকবে একটি সচেতনতামূলক ব্যানার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও টিস্যু। ভোট দেওয়ার আগে-পরে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে পারবেন। এছাড়া প্রতিটি ভোট কক্ষে চার-পাঁচ জন স্বেচ্ছাসেবীও থাকবেন।
জানা গেছে, প্রতিটি ভোট কক্ষে প্রায় চারশর মতো ভোটার থাকবেন। তাদের জন্য ২০০ গ্রামের দুটি স্যানিটাইজার দেওয়া হচ্ছে।
কোনো ক্ষেত্রে এর পরিমাণ আরও বেশি বা কমও হতে পারে। সে অনুযায়ী টিস্যুও দেওয়া হচ্ছে। তবে এমনিতে গত কয়েকটি নির্বাচনে দেখা গেছে মানুষের মধ্যে ভোট নিয়ে তেমন কোনো উৎসাহ নেই। সেখানে করোনা ভাইরাসের মধ্যে কত শতাংশ ভোট পড়বে- এ নিয়ে সবাই সন্দিহান। কিন্তু নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে এসে চাইলেও ভোট স্থগিত করা যায় না। কারণ এতে ইসির অনেক অর্থ নষ্ট হতো। তবে ২৯ মার্চের চট্টগ্রামের নির্বাচন স্থগিত করা হতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি থানার নির্বাচনী অফিসার বলেন, সরকারি চাকরি করি। ফলে ইচ্ছা না থাকলেও নির্বাচনি ডিউটি করতে হবে। ভোটকক্ষে তো অনেক লোক আসবে, এটা কীভাবে নিশ্চিত করব কে সুস্থ আর কে অসুস্থ? শুধু ভোটাররা নয়, আমরাও ভয়ের মধ্যে আছি। একমাত্র ভরসা আল্লাহ।
গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন সচিব মো. আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, করোনার কারণে ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম হবে, আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাও কম হবে।’
ঢাকা-১০ আসনের ঝিগাতলার একটি কেন্দ্রের ভোটার সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে সরকারসহ ডাক্তাররা বলেছেন জনসমাগম এড়িয়ে চলার জন্য। সেখানে কীভাবে ভোট হবে সেটি আমার চিন্তায় আসে না। ভোটকেন্দ্রে তো শত শত মানুষ থাকবে। সেখানে কার শরীরে করোনা আছে আমি কীভাবে নিশ্চিত হবো?