স্টাফ রিপোর্টারঃ
বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে বিদেশি পর্যটক টানতে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে কক্সবাজারকে সিঙ্গেল টুরিস্ট স্পট করতে চাইছে সরকার। কক্সবাজারকে দিয়ে বিশ্ববাসীর কাছে নতুন করে পরিচিত হতে চায় বাংলাদেশ।
এক সময় দক্ষিণ এশিয়া ও ইউরোপের পর্যটকদের অন্যতম প্রিয় গন্তব্য ছিল কক্সবাজার। তবে দীর্ঘ দুই দশক ধরে নানা কারণে বাংলাদেশে আসছেন না তারা। সেসব বিদেশি পর্যটক ফেরাতে চেষ্টা করছে সরকার।
দেশি পর্যটক ও ট্যুর অপারেটররা বলছেন, বিদেশি পর্যটকরা শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বা সমুদ্র চান না। এগুলোর পাশাপাশি তারা সুষ্ঠু যোগাযোগ ব্যবস্থা, খাবার, প্রাইভেসি ও নিরাপত্তার বিষয়টিও বিবেচনা করেন। তাই এদিকে মনোযোগ দিতে হবে।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালের দিকে বাংলাদেশে বছরে এক লাখ ৩৯ হাজার বিদেশি পর্যটক আসে। সর্বশেষ ২০১৯ সালে বাংলাদেশে বিদেশি পর্যটক এসেছিল তিন লাখ ২৩ হাজার।
দ্য গ্লোবাল ইকোনমির তথ্য বলছে, ২০১৯ সালে প্রতিবেশী দেশ ভারত ঘুরে গেছেন এক কোটি ৮০ লাখ, মিয়ানমার ভ্রমণ করেছেন ৪৩ লাখ পর্যটক। নেপালে একই বছর ভ্রমণ করেছেন ১২ লাখ, মালদ্বীপে ১৭ লাখ, পাকিস্তানে ৯ লাখ ৬৬ হাজার বিদেশি পর্যটক।
বাংলাদেশের ট্যুর অপারেটর ও দেশি পর্যটকরা বলছেন, দেশে হাতেগোনা যেসব বিদেশি পর্যটক আসেন তাদের প্রধান গন্তব্য থাকে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার।
দক্ষিণ এশিয়ার যতগুলো দেশে সি-বিচ রয়েছে সেগুলোর চেয়ে আয়তন ও ঢেউয়ের উচ্চতার মাপ হিসেব করলে কক্সবাজার সবচেয়ে এগিয়ে। তবে এখানকার পরিবেশ এখনো বিদেশি পর্যটকদের অনুকূলে নয়। তাদের প্রথম চাওয়া হচ্ছে নিরাপত্তা ও প্রাইভেসি। শীতপ্রধান দেশের পর্যটকরা এশিয়ার দেশগুলোতে গিয়ে খোলামেলা পোশাকে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কক্সবাজারে সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
কক্সবাজার এখনো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হওয়ার অপেক্ষায়। ঢাকা থেকেও নির্বিঘ্ন নয় কক্সবাজারের যোগাযোগ। ঢাকা থেকে বর্তমানে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, বিমান বাংলাদেশ ও নভোএয়ারের মোট ১৫টি ফ্লাইট দৈনিক কক্সবাজারে আসা-যাওয়া করে। এ রুটে বাস পরিবহন ব্যবস্থাও নাজুক। আশপাশে ঘোরাফেরা করতে হলে জিম্মি থাকতে হয় সিএনজি অটোরিকশা ও রিকশাচালকদের কাছে।
এসব সংকট কাটিয়ে কক্সবাজারকে যুগোপযোগী ও পর্যটকবান্ধব করতে মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
জানা গেছে, দেশি-বিদেশি সবার জন্য স্বপ্নের কক্সবাজার গড়তে ‘কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ (কউক) গঠন করেছে সরকার। কক্সবাজারকে ঢেলে সাজাতে কউক হাতে নিয়েছে মাস্টার প্ল্যান (মহাপরিকল্পনা) প্রণয়নের কাজ। মাস্টার প্ল্যানে বিদেশি পর্যটকদের জন্য থাকবে পৃথক ‘ফরেন ট্যুরিস্ট জোন’। তৈরি হচ্ছে আন্তর্জাতিকমানের মেরিন বিচ।