এম.এইচ মুরাদঃ
করোনার প্রভাবে সারা দেশে অঘোষিত লকডাউন চলছে। বন্ধ রয়েছে দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে মানুষ। এতে ধস নেমেছে বান্দরবানের পর্যটন শিল্পে। লকডাউন দীর্ঘমেয়াদি হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জেলার পর্যটনখাত। তবে ক্ষতি পুষিয়ে আগামী দিনে নতুনভাবে এ শিল্পকে এগিয়ে নিতে সরকারের কাছে প্রণোদনার আবেদন জানিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে গত ১৮ মার্চ থেকে বান্দরবানের সব পর্যটনকেন্দ্র অনির্দিষ্টকালের
জন্য বন্ধ করে দেয় জেলা প্রশাসন। এ কারণে জেলার সব হোটেল মোটেল আর পর্যটকবাহী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পর্যটন জেলা বান্দরবানে লকডাউনের কারণে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা পড়েছে চরম দুর্ভোগে। পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সংসারে দেখা দিয়েছে অভাব অনটন।
পর্যটকবাহী গাড়ির চালক মো. কামাল জানান, দীর্ঘদিন ধরে আমরা গাড়ি চালাতে পারছি না। আমাদের আয় নেই। অনেক কষ্টে দিনযাপন করে যাচ্ছি।
বাপ্পী বড়ুয়া বলেন, পর্যটন জেলা বান্দরবানে আমরা পর্যটকদের নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করি। পর্যটক আসলে আমরা তাদের গাড়ি করে বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ঘুরে বেড়ানোর জন্য সময় ব্যয় করি এবং ভালো আয় করি। কিন্তু কয়েক মাস ধরে করোনার কারণে আমাদের আয় নেই। আমরা অসহায় জীবনযাপন করছি।
বান্দরবান মাইক্রোবাস জিপ, প্রাইভেটকার শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক আলমগীর বলেন, করোনায় আমাদের প্রায় ৪০০ পর্যটকবাহী গাড়ি বন্ধ রয়েছে। এ কারণে এ পেশার সঙ্গে জড়িতদের পরিবারে আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা কিছু সংগঠন ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সামান্য পরিমাণ ত্রাণ পেয়েছি যা দিয়ে আমাদের পরিবারের দুঃসময় কেটে ওঠানো সম্ভব নয়।
লকডাউনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হোটেল মোটেল ব্যবসায়ীরা। বান্দরবানের আবাসিক হোটেল হিলভিউয়ের জিএম সুলতান নাফিজ বলেন, করোনায় আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। প্রতি মাসে আমাদের হোটেল ব্যয় প্রায় ২০ লাখ টাকা। কিন্তু এখন লকডাউনের কারণে পর্যটক না আসায় আমরা এ ক্ষতি কিভাবে মেটাবো তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছি।
বান্দরবান হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি অমল কান্তি দাশ বলেন, করোনায় বান্দরবানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত পর্যটন শিল্প।
বান্দরবান জেলার অধিকাংশ জনসাধারণ পর্র্যটন শিল্পের মাধ্যমে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু করোনায় সবাই বেকার এবং আয় বন্ধ থাকায় সংসার চালাতে তাদের কষ্ট হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক দাউদুল ইসলাম জানায়, করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারিভাবে সহায়তা অব্যাহত রয়েছে এবং আগামীতে এ সহায়তা অব্যাহত থাকবে। বর্তমান সরকার পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্য নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে এবং আগামীতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা প্রদান করা হলে আমরা তা সঠিকভাবে বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।