মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শত বিঘার ‘ক্যানভাসে’ যেভাবে ফুটে উঠল বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি


প্রকাশের সময় :৬ মার্চ, ২০২১ ১০:০১ : পূর্বাহ্ণ

স্টাফ রিপোর্টার:

ফসলের সবুজ মাঠের বুকে ১০০ বিঘা আয়তনজুড়ে বিশাল ‘ক্যানভাস’। সেখানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশাল প্রতিকৃতি। টানা ৩২ দিন ধরে চলছে এই বিশাল কর্মযজ্ঞ। তবে শিল্পীর রংতুলির আঁচড়ে নয়, ফসলের খেতে ধানের চারা লাগিয়ে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তোলার এই কর্মযজ্ঞ চালাচ্ছেন অর্ধশতাধিক কিষান-কিষানি, যার নেতৃত্বে আছেন আটজন কৃষি প্রকৌশলী।

গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা পেতে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের বালেন্দা গ্রামসংলগ্ন আমিনপুর ও কেশবপুর মাঠে ১০০ বিঘা জমির ধানখেতে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’র প্রতিকৃতি তুলে ধরা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদ’। এটি বাস্তবায়ন করছে ন্যাশনাল অ্যাগ্রিকেয়ার গ্রুপ অব কোম্পানিজ নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।

গিনেস বুকের স্বীকৃতি পেতে ইতিমধ্যে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। ২৬ মার্চের আগেই বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তোলার সনদ মিলবে বলে আশা করছেন উদ্যোক্তারা। সবকিছু ঠিক থাকলে ২৬ মার্চ শেরপুরের আমিনপুর মাঠেই উদযাপন করা হবে আনন্দ উৎসব। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণও জানাবেন আয়োজকেরা।

সরেজমিনে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’
বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেল, ১০০ বিঘা জমিতে শোভা পাচ্ছে বেগুনি ও সবুজ জাতের ধানের খেত। শস্যচিত্রে দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় প্রতিকৃতি। খালি চোখেই দেখা যাচ্ছে এই প্রতিকৃতি, যা দেখতে ভিড় করছেন দূরদূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা। কেউ মুঠোফোনে, কেউ ক্যামেরায়, কেউ ড্রোন দিয়ে ছবি তুলছেন। শস্যখেতে যাতে কোনো প্রকার আগাছা গজিয়ে উঠতে না পারে, এ জন্য খেত নিড়ানি ও পরিচর্যার কাজ ব্যস্ত ৭০ জন কিষান-কিষানি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানালেন, ৪০০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৩০০ মিটার প্রস্থের ক্যানভাসে রংতুলির বদলে শোভা পাচ্ছে দুই রঙের ধানের চারা। এর মধ্যে সবুজ রঙের চারার ধানের নাম ন্যাশনাল অ্যাগ্রিকেয়ারের হাইব্রিড ‘জনকরাজ’। সবুজের ভেতরে ভিন্ন রং ফুটিয়ে তুলতে চীন থেকে আনা হয়েছে বেগুনি রঙের হাইব্রিড জাতের এফ-১ ধান।

যেভাবে দৃশ্যমান হল বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি
শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের সদস্যসচিব এবং ন্যাশনাল অ্যাগ্রিকেয়ার গ্রুপ অব কোম্পানিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান জানালেন উদ্যোগের শুরুর গল্প। মাস ছয়েক আগে দুজন তরুণ ৫০০ বিঘা জমিতে ক্রপ আর্টে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি তৈরির মাধ্যমে গিনেস রেকর্ড গড়ার প্রস্তাব নিয়ে তাঁর কাছে আসেন। পরে কারিগরি দিক বিবেচনা করে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে শত বিঘায় ক্রপ ফিল্ড মোজাইক বা শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। কৃষিমন্ত্রীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রস্তাবনা তুলে ধরার পর আগ্রহ প্রকাশ করা হয়।

পরে প্রকল্প বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের নেতৃত্বে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদ’ নামে ৫১ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। এর উপদেষ্টা কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ডজনখানেক কৃষি প্রকৌশলীর নেতৃত্বে প্রতিদিন গড়ে ১৫০ জন কিষান-কিষানি বিশাল ক্যানভাসে ধানের চারা লাগানোর এই কর্মযজ্ঞে অংশ নেন। চারা লাগানোর আগে কৃষি প্রকৌশলীদের সঙ্গে নকশা অনুযায়ী চারা লাগাতে আড়াই ফিট দৈর্ঘের খুঁটি স্থাপনসহ লে–আউটের (নকশা) কাজে অংশ নেয় বগুড়ার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ১০০ শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের (বিএনসিসি) সদস্যরা। শুকনা জমিতে তারা প্রায় ১ হাজার ২০০ খুঁটি পুঁতে প্রতিকৃতির লে-আউট করে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কৃষি প্রকৌশলীদের নিয়ে গঠিত কারিগরি কমিটি এই নকশা তৈরি করে।

শত বিঘার এই জমির মধ্যে বালেন্দা গ্রামের কৃষক মুকুল হোসেনের জমিও আছে। তিনি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানকে এই শস্যচিত্রের জন্য জমি ইজারা দিয়েছেন। মুকুল হোসেন বলেন, ‘ধানের খ্যাতত বঙ্গবন্ধুর ফটো আঁকা হবি, ইংকা কতা প্রথম বিশ্বাস করবার পারিনি। চিন্তা করনো ইরি আবাদ করেতো বিঘাত ৯ হাজার টেকা লাভ হবি না, তার চেয়ে তারগরকই লিজ (ইজারা) দেই। ধানের চারা বড় হওয়ার সাথে সাথে এখন সত্যি সত্যি খ্যাতের মধ্যে হামাকেরে জাতির পিতার ফটো দেকিচ্চি। লিজের চোখ বিশ্বাসই হবার চাচ্চে না।’

শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির পাশেই বালেন্দা চারমাথা কড়িতোলা মোড়। সাত সকালেই শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি দেখতে আসা দর্শনার্থীর ভিড় মোড়ের দুটি চায়ের দোকানেও।

চা–দোকানি বালেন্দা গ্রামের সাইফুল ইসলাম বলেন, দুই মাস আগেও বালেন্দা ছিল অচেনা এক গ্রাম। এই প্রতিকৃতির সুবাদে রাতারাতি পরিচিতি বেড়েছে। দূরদূরান্ত থেকে লোকজন এই প্রতিকৃতি দেখতে।

ট্যাগ :