ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার হাসি বেগম (২৪) নিখোঁজ হন গত ৭ সেপ্টেম্বর। এর মধ্যে ২০ সেপ্টেম্বর উদ্ধার হওয়া এক নারীর মরদেহ হাসি বেগমের বলে শনাক্ত করে দাফন করেন তার মা-বাবা। পরদিন স্ত্রীকে হত্যার দায়ে শ্বশুরের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হন হাসির স্বামী মোতালেব শেখ। তবে হাসি বেগম জীবিত ফিরে এসেছেন। আগামীকাল বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ১৬৪ ধারায় তিনি আদালতে জবানবন্দি দেবেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ৮ বছর আগে একই উপজেলার চরবিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বড় বাড়ির মৃত শাহ আলম শেখের ছেলে মোতালেব শেখের সঙ্গে বিয়ে হয় হাসি বেগমের। তাদের সাত বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। গত ৭ সেপ্টেম্বর হাসি বেগম বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার কথা বলে শ্বশুরবাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
সদরপুর থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হাসির কোনো হদিস না পাওয়ায় মেয়েকে হত্যার পর মরদেহ ডোবায় ফেলে দিয়েছেন জামাতা- এমন অভিযোগ এনে থানায় মামলা করেন হাসির বাবা হাবিবুর রহমান। এরপর গত ২০ সেপ্টেম্বর অজ্ঞাত পরিচয় এক নারীর মরদেহ পাওয়া যায়্ সেটি হাসির বলে শনাক্ত করে দাফনও করা হয়। এর পরদিন ২১ সেপ্টেম্বর স্ত্রীকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেপ্তার হন স্বামী মোতালেব শেখ। বর্তমানে তিনি ফরিদপুর জেলা কারাগারে রয়েছেন। গতকাল ২৫ সেপ্টেম্বর হাসিকে জীবিত অবস্থায় ময়মনসিংহের নান্দাইল এলাকা থেকে আটক করে সদরপুর থানা পুলিশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হাসি পুলিশকে জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার কথা বলে তিনি তার পরকীয়া প্রেমিক নান্দাইলের এক যুবকের কাছে চলে গিয়েছিলেন। এই কয়দিন সেখানেই ছিলেন।
এদিকে হাসির স্বামীও ১৪ সেপ্টেম্বর সদরপুর থানায় পাল্টা একটি মামলায় অভিযোগ করেন, স্ত্রী হাসি বেগম তার নগদ টাকাসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে বাবার বাড়িতে পালিয়ে গেছেন।
সদরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশীদ বলেন, আগামীকাল বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) হাসিকে আদালতে তোলা হবে। সেখানে তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেবেন যে তিনি মারা যাননি, জীবিত ফিরে এসেছেন এবং তিনি তার পরকীয়া প্রেমিকের কাছে এই কয়দিন ছিলেন। এরপর আমরা তার স্বামীকে স্ত্রী হত্যার অভিযোগে করা মামলা থেকে থেকে অব্যহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে দেব।
তিনি বলেন, পাশাপাশি তার স্বামী মোতালেব যে মামলাটি করেছিলেন সেটির ব্যাপারেও কাল আদালতকে জানাবেন হাসি। এরপর আদালত এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন।
ওসি আরও বলেন, গত ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের আদমপুর এলাকার নাউটানায় কচুরিপানার ভেতর থেকে যে নারীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল সেটি কার মরদেহ তা এখনো জানা সম্ভব হয়নি।