স্টাফ রিপোর্টার:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের প্রয়োজনে একটি আধুনিক ও শক্তিশালী নৌবাহিনী গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন। তার আলোকে বর্তমান নৌবাহিনীকে আধুনিক ও যুগোপযোগী ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন, যুদ্ধজাহাজ সংগ্রহ এবং বিদ্যমান জাহাজসমূহের অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বাস্তবমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে নৌবহরে দুটি সাবমেরিন সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে চালু করা হয়েছে উন্নত প্রশিক্ষণ সুবিধা সম্বলিত আন্তর্জাতিক মানের সুবিশাল বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) সকাল পৌনে ১১টার দিকে পতেঙ্গায় বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে নৌবাহিনীর শীতকালীন রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ পরিদর্শন শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, নবীন কর্মকর্তারা নেভাল একাডেমি থেকে অর্জিত জ্ঞান যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা ও অগ্রগতির পথে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে। তিনি পেশা হিসেবে দেশ সেবার এ পবিত্র দায়িত্বকে বেছে নেয়ায় নবীন কর্মকর্তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান এবং তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অটুট রাখার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে কাজ করে যাবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌবাহিনীর ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে চীন হতে ২টি মিসাইল ফ্রিগেট ও নির্মাণাধীন করভেট শীঘ্রই নৌবহরে যুক্ত হবে। একইসঙ্গে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক করভেট, মাইনহান্টার, ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ভেসেল ও সেইলিং শিপসহ বিভিন্ন জাহাজ ক্রয় এবং নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। নেভাল এভিয়েশনের জন্য মেরিটাইম পেট্রোল এয়ার ক্রাফট, সাবমেরিন হেলিকপ্টার ও এলআরএমপিএ (লং রেঞ্জ মেরিটাইম পেট্রোল এয়ার ক্রাফট) কেনার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি একটি শক্তিশালী নৌবাহিনী গড়ার লক্ষ্যে মিসাইল, আইএফএফ সিস্টেম সহ বিভিন্ন প্রকার আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সংযোজনের কাজও চলমান রয়েছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সর্ববৃহৎ ঘাঁটি ‘বানৌজা শের-ই-বাংলা’ এবং ‘বানৌজা শেখ হাসিনা’ ঘাঁটির কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।
এ সময় আধুনিক প্রশিক্ষণ সুবিধা কাজে লাগিয়ে নবীন কর্মকর্তাদের সমুদ্রসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিজেদের আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২০১৭-এ ব্যাচের ৬১ জন মিডশীপম্যান ও ২০১৯-বি ব্যাচের ১১ জন ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার সহ মোট ৭২ জন নবীন কর্মকর্তা কমিশন লাভ করেন। এদের মধ্যে ৭ জন মহিলা ও ২ জন মালদ্বীপের কর্মকর্তা রয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে সেনা ও বিমানবাহিনীর আঞ্চলিক অধিনায়কসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, এমপি এম এ লতিফ, সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রধান, নৌ সদর দপ্তরের পিএসও, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী নৌ কমান্ডোসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, দেশি-বিদেশি কূটনীতিক ও শিক্ষা সমাপনী ব্যাচের কমিশনপ্রাপ্ত ক্যাডেটদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।