মোঃ সেলিম:
বান্দরবানে অবৈধ ইটভাটা (এএইচএন) স্থাপন করার দায়ে সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১৭ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ আদালতের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের বান্দরবান জেলার দায়িত্বশীল কেমিস্ট সামিউল আলম ।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে থানচি উপজেলার তাজিংডং পাহাড়ের প্রাতাপাড়ায় ইটভাটায় অভিযান চালান অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল আল মামুন । অভিযান শেষে রাতে বান্দরবানে ফিরে ওই রায় ঘোষণা করেন ম্যাজিস্ট্রেট।
তিনি আরো জানান, ইট প্রস্তুত ও ভাটা নিয়ন্ত্রণ আইনের ৪টি ধারা এবং বাংলাদেশ পরিবেশ সুরক্ষা আইনের একটি ধারা সহ মোট ৫টি ধারা লঙ্ঘন ছিল ওই ইটভাটায়। পরে পরিবেশ আদালত বসিয়ে সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে সাজা দেয়া হয়। অবৈধ ইটভাটা স্থাপনে বাকি আসামিদের বিষয়ে আদালত এখনো রায় দেননি। তবে ওই ইটভাটার সাথে যুক্ত আসামিদের নাম জানাতে পারেননি কেমিস্ট সামিউল আলম।
জানা যায়, এর আগে মঙ্গলবার সকালে ইটভাটা মালিক আব্দুল কুদ্দুছ চেয়ারম্যানকে ফোন করে জুডিশিয়াল আদালতে ডেকে আনেন অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল আল মামুন। পরে চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত মোবাইল জব্দ করেন ম্যাজিস্ট্রেট। পরে চেয়ারম্যানকে সাথে নিয়ে ওই ইটভাটায় অভিযান চালানো হয়। অভিযান শেষে বান্দরবানে ফিরে রাতে চেয়ারম্যানের সাজার রায় দেন ম্যাজিস্ট্রেট।
এ বিষয়ে আব্দুল কুদ্দুছ চেয়ারম্যানের জ্যেষ্ঠ পুত্র মিজানুর রহমানের স্ত্রী জিহান বলেন, ওই ইটভাটার চুক্তিপত্রে আমার শ্বশুরের নাম নেই। চুক্তিপত্র যাচাই করা হলেই বোঝা যাবে কারা এই ইটভাটার অংশীদার।
কুদ্দছ চেয়ারম্যান পুত্র লুৎফুর রহমান উজ্জ্বল বলেন, রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পরে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, থানচি উপজেলা সদর থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে থানচি-লেক্রি নির্মাণাধীন সড়কে তাজিংডং পাহাড়ের প্রাতাপাড়ায় ড্রাম চিমনি বসিয়ে ইট তৈরি করা হচ্ছিল। এছাড়াও সেখানে নির্বিচারে বনাঞ্চলের গাছ কেটে জ্বালানি হিসেবে অবাধে পোড়োনো হচ্ছে।
পরিবশে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২৩ ডিসেম্বর প্রাতাপাড়ার অবৈধ ইটভাটাটিকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া দ্রুত ইটভাটা বন্ধেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এর আগেও পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন থেকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় ইটভাটাটিকে ।
তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানের পর বন্ধ না করে উল্টো ড্রাম চিমনি বসিয়ে ওই ইটভাটায় ইট পোড়ানো হচ্ছিল বলে অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসী।
এদিকে, ইউএনও আরিফুল হক মৃদুল জানান, থানচি হেডম্যাড়ার ইটভাটাকে গত মাসে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে দ্রুত ড্রাম চিমনি পরিবর্তন করে পরিবশেবান্ধব জিকজাক পদ্ধতিতে রুপান্তরের মাধ্যমে ইট তৈরী করার নির্দেশ দেওয়া হয়।