স্টাফ রিপোর্টারঃ
চট্টগ্রামে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মৃতদেহ সৎকারের প্রধান শ্মশান বলুয়ারদীঘি অভয়মিত্র মহাশ্মশানের এক দশকের জলাবদ্ধতার সংকট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। তবে এক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থার সমন্বয়ের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।
বৃষ্টি এবং জোয়ারের পানিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্মশানযাত্রীদের দুর্ভোগ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে আলোচনার প্রেক্ষিতে শনিবার (২২ আগস্ট) সকালে মহাশ্মশান পরিদর্শনে যান চসিক প্রশাসক।
এর আগে, শুক্রবার মহাশ্মশানের উন্নয়নের জন্য স্থানীয় এমপি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের পক্ষ থেকে মহাশ্মশান পরিচালনা পরিষদকে তিন লাখ টাকা এবং সংলগ্ন কালীমন্দিরের জন্য এক লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়।
পরিদর্শনে গিয়ে খোরশেদ আলম সুজন পরিচালনা পরিষদ এবং স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তিনি বলেন, ‘মাটি ভরাট করে অভয়মিত্র মহাশ্মশান উঁচু করা হলে জোয়ারের পানি আর প্রবেশ করতে পারবে না। জলাবদ্ধতা না থাকলে মৃতদেহ সৎকার সুষ্ঠুভাবে হবে। যেহেতু এটি সিটি করপোরেশনের পরিচালনাধীন, তাই একটি সুন্দর পরিকল্পিত মহাশ্মশান করার জন্য আমরা কার্যকর পদক্ষেপ নেব। এর উন্নয়নের জন্য যা যা করা প্রয়োজন তাই করবো। সব মহলের মতামত ও পরামর্শ নেওয়া হবে। এমনভাবে মহাশ্মশানটি সংস্কার করতে হবে যাতে পাশের এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।’
‘মহাশ্মশান সংস্কারের জন্য আগেও নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতিবছর উদ্যোগ নেওয়ার কথা আমরা শুনেছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। মহাশ্মশানের পেছনে বয়ে যাওয়া চাক্তাই খালে স্লুইচ গেট নির্মাণ করলে জোয়ারের পানি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। খুব শিগগিরই আমরা মহাশ্মশানের উন্নয়ন কাজ শুরু করবো’, বলেন প্রশাসক সুজন।
নওফেলের অনুদানের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘মাননীয় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এই মহাশ্মশানের জন্য অনুদান পাঠিয়েছেন। আগামীতে সার্বিক উন্নয়নেও তিনি পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন। এতে আমরা আশাবাদী। আমাদের সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী থাকলে এতদিন এই ভোগান্তি থাকতো না। তিনি অনেক আগেই এই মহাশ্মশানের জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতেন। যে অনুদান পাওয়া গেছে তাতে সাময়িক কষ্ট লাঘব হলেও এজন্য চাই পরিকল্পিত ও কার্যকর পদক্ষেপ।’
জানতে চাইলে মহাশ্মশান পরিচালনা পরিষদের সভাপতি সাবেক কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী একাত্তর বাংলা নিউজকে বলেন, ‘চসিকের প্রশাসক মহোদয় পরিদর্শন করে আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি আমাদের বলেছেন- চসিকের প্রকৌশল বিভাগ এবং জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ যারা করছেন, সেনাবাহিনীর টিমের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন। সমন্বিতভাবে একটা পদক্ষেপ তিনি নেবেন। তবে সাময়িকভাবে কোনো সংস্কার কাজ শুরুর নির্দেশনা তিনি দেননি। উপমন্ত্রী নওফেল সাহেব যে টাকা দিয়েছেন, সেটা খরচের বিষয়ে উনি কোনো পরামর্শ দেননি। আমি কাল (রোববার) বিকেলে ওনার সঙ্গে আবারও বৈঠকে বসবো।’
পরিদর্শনের সময় প্রশাসকের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুনিরুল হুদা, অভয়মিত্র মহাশ্মশান পরিচালনা কমিটির সভাপতি জহর লাল হাজারী ও সাধারণ সম্পাদক বিজয় কিষাণ চৌধুরী, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা পেয়ার মোহাম্মদ, আবু তৈয়ব সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট তপন দাশ, মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী রুমকী সেন গুপ্ত, ইঞ্জিনিয়ার আশুতোষ দাশ, অজয় বণিক, টুনটুন চক্রবর্তী, কুতুব উদ্দিন সেলিম, আবু জাফর চৌধুরী, সেকান্দর আলী, রফিকুল আলম বাপ্পী উপস্থিত ছিলেন।