এম.এইচ মুরাদঃ
চট্টগ্রামের চকবাজারে নগরীর সর্ববৃহৎ ও বিশ্বমানের সুপারমল বালি আর্কেডের উদ্বোধন হয়েছে। শুক্রবার (২ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় ফিতা কেটে সম্মিলিতভাবে উদ্বোধন করেন শেঠ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোলায়মান আলম শেঠসহ আমন্ত্রিত অথিতিরা এবং বাণিজ্যিক কমপ্লেক্সটি নির্মাণে জড়িত প্রকৌশলী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকরা। তবে করোনাকালীন উদ্বোধনের আয়োজন ছিল সীমিত। উদ্বোধন শেষে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয় বালি আর্কেড। এ সময় করোনার কারণে কতৃপক্ষের কড়া বাঁধাকে উপেক্ষা করে উৎসুক অনেকেই ভিড় জমান কমপ্লেক্সটির ভেতর ও বাইরে। তবে অল্প সময়ের মধ্যে কমপ্লেক্সটির কতৃপক্ষ প্রশাসনের সহায়তায় এই অনাকাঙ্ক্ষিত উৎসুক মানুষের ভিড় কমাতে সমর্থ হন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে কেক কাটা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দৈনিক পূর্বকোণের পরিচালনা সম্পাদক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, শেঠ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোলায়মান আলম শেঠ, গ্রুপের সিইও আফতাব আলম শেঠ, ডিরেক্টর ওয়াহিদুল আলম শেঠ, ডিরেক্টর সারিস্ত বিনতে নুর এশনা, অপারেশন ডিরেক্টর টুলু-উশ্-শামস্, ডিরেক্টর উজায়ের আলম শেঠ, ডিরেক্টর উমায়ের আলম শেঠ, ডিএমডি মোহাম্মদ রোসাঙ্গীর প্রমুখ।
এদিকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী উদ্বোধন করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তিনি আসেননি।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে শেঠ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোলায়মান আলম শেঠ সাংবাদিকদের বলেন, মেয়রসহ বিশিষ্টজনদের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। হঠাৎ বেলা ১২টার দিকে জেনেছি অনুষ্ঠান বন্ধ করতে হবে। সরকারের নির্দেশ ও আদেশকে শ্রদ্ধা করে আয়োজন সীমিত করা হয়েছে। আয়োজন ছিল বিশাল। কিন্তু করোনার কারণে ১০ ভাগের ১ ভাগ করেছি। অন্তত ১০ জন সেলিব্রেটি আসার কথা ছিল, তারা কেউই আসেননি। সকলের টিকিট বাতিল করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামে বিনোদনের তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। বালি আর্কেডে বিজনেস, বিনোদন, শপিং এবং ফ্যামিলি এন্টারটেইনমেন্টের পরিপূর্ণ আয়োজন আছে। এখানে এক ছাদের নিচে ক্রেতারা সবকিছুই খুঁজে পাবেন। ১৪ তলার বিল্ডিংয়ে মোবাইল জোন, গার্মেন্টস, লেডিস জোন, চিলড্রেন পার্ক, ফুড কোট, ৩টি সিনেপ্লেক্স। বাংলাদেশে অনেক বড় বড় মল আছে। কিন্তু এটা ছোট মল হলেও সম্পূর্ণ ভিন্ন। বিদেশে হয়ত অনেকেই গেছেন, সেখানে দেখেছেন মল কেমন। ব্যাংকক, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের মলগুলোর আদলে এটি করা হয়েছে। মলের ভিতরে সাড়ে ১১শ’ থেকে ১২শ’ স্কয়ার ফিট এবং বাইরে বসানো হয়েছে ৬শ’ স্কয়ার ফিটের জায়েন্ট স্ক্রিন। কেউ বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে দিতে পারবেন। এছাড়া ফ্রি ওয়াইফাই জোন রাখা হয়েছে। আরো অনেক কিছু আছে। একটি ইন্টারন্যাশল স্ট্যান্ডার্ড ক্লাব থাকবে। দেওয়া হবে মেম্বারশিপ। ফ্যামিলি নিয়ে এসে বসা যাবে। রেস্টুরেন্ট, লাউঞ্জ, ক্যাফে ও সিনেপ্লেক্স ব্যবহার করা যাবে। এছাড়া সিনেপ্লেক্সে সম্পূর্ণ নিজের পরিবারকে নিয়ে দেখার সুযোগও থাকবে।
বালি আর্কেড নিয়ে আপনি কেমন আশাবাদী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সোলায়মান আলম শেঠ বলেন, ‘বালি আর্কেড একটি ব্যতিক্রম ধরনের এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তির শপিং মল। কাজেই আমি শতভাগ আশাবাদী। ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে মলটিকে সম্পূর্ণ সাজানো হয়েছে। আশা করছি ক্রেতাদের ভালোই সাড়া পাব। এত বড় মল করেছি নিজের স্বার্থে নয়, জনগণের স্বার্থে। আমি চেয়েছি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে এমন একটি চমক দেব যাতে চট্টগ্রামবাসী যেটি লুফে নিবে। আজকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করিয়েছি শ্রমিকদের দিয়ে। যারা ঘাম ও কষ্টের বিনিময়ে আজকের এই বালি আর্কেডকে দাঁড় করিয়েছে। বাংলাদেশে মনে হয় এরকম কোনো নজির কোথাও নেই। আমি মনে করি যারা এখানে ব্যবসা করবে তারা যদি গ্রাহক এবং ক্রেতা সাধারণকে সন্তুষ্ট করে এবং সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে ব্যবসা করতে পারে তাহলে এই শপিং মল হবে চট্টগ্রামের সবার কাছে গ্রহনযোগ্য এবং একই ছাদের নিচে সবকিছু কেনাকাটার সেরা শপিং মল ’।