নিউজ-ডেস্ক:
পারভেজ মোশাররফের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর করাচিতে পতাকা হাতে তার সমর্থকদের বিক্ষোভ। পাকিস্তানের বিশেষ আদালত রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে সাবেক সামরিক শাসক পারভেজ মোশাররফের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়ার পাশাপাশি এর সঙ্গে জুড়ে দিয়েছে অভিনব এক প্রতীকী আদেশও।
আর তা হচ্ছে, মুশাররফের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার আগেই যদি তার মৃত্যু হয়, তাহলে মৃতদেহ পার্লামেন্টে টেনে নিয়ে গিয়ে তিনদিন ঝুলিয়ে রাখা হবে।
২০০৭ সালের নভেম্বরে অবৈধভাবে সংবিধান স্থগিত করে জরুরি অবস্থা জারি করায় রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে মোশাররফকে তার অনুপস্থিতিতেই গত মঙ্গলবার মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে পেশোয়ার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন বিচারকের বিশেষ আদালত।
বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয়েছে ১৬৯ পাতার ওই রায়ের বিস্তারিত বিবরণ।আর তা থেকেই বেরিয়ে এসেছে এ তথ্য।
মোশাররফ বর্তমানে চিকিৎসার জন্য দুবাইয়ে আছেন। আদালত তাকে সবরকমভাবে পাকড়াও করার চেষ্টা চালানোর নির্দেশও দিয়েছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে।
কিন্তু মোশাররফকে জীবিত ধরা না গেলে কিংবা সাজা কার্যকরের আগেই তার মৃত্যু হলে সেক্ষেত্রে “মৃতদেহ পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের ডি-চক এ নিয়ে গিয়ে তিনদিন ঝুলিয়ে রাখা (উচিত) হবে” বলে জানিয়েছে আদালত। পার্লামেন্টের বাইরেই ডি-চক এলাকা।
এ আদেশ প্রতীকী হলেও আইন বিশেষজ্ঞরা একে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়েছেন। রায়ের বিরুদ্ধে মোশাররফ সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।
আদালতের ওইরকম অভিনব আদেশ দেওয়ার ঘটনার নজির মাত্র একটি পাওয়া যায়। এক সিরিয়াল খুনিকে জনসম্মুখে ফাঁসি দেওয়া এবং তার দেহ খুনের শিকার হওয়া ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সামনে ১শ’ টুকরা করার সাজা ঘোষণা করেছিল একটি আদালত। তবে তা কখনোই কার্যকর করা হয়নি।
মোশাররফকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়টি ত্রুটিপূর্ণ বলছে দেশটির সরকার। পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফেরদৌস আশিক আওয়ান বুধবার বলেছেন, সরকারের আইনজীবীরা রায়টিতে কিছু ‘ফাঁক এবং দুর্বলতা’ খুঁজে পেয়েছেন। আইনজীবীরা রায়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ব্রিফিং দেওয়ার পর আশিক একথা জানান।
ওদিকে, মোশাররফ রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেছেন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণেদিতভাবেই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন।