আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করেছে তালেবান। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের দখল নিয়ে প্রেসিডেন্ট প্যালেসের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর যুদ্ধ শেষের ঘোষণা দিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সৈন্যবাহিনী এরই মধ্যে আফগানিস্তান ত্যাগ করেছে।
সোমবার (১৬ আগস্ট) সকালেও পশ্চিমা দেশগুলোর নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে তোড়জোড় দেখা গেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে এমনটি জানানো হয়েছে।
কাতারভিত্তিক আলজাজিরা টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ নাইম নামে তালেবানের ওই মুখপাত্র বলেন, (আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে) তালেবান বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকতে চায় না এবং শাসনের ধরন ও রাষ্ট্রীয় গঠন কাঠামো খুব শিগগিরই পরিষ্কার করা হবে।
তিনি আরও বলেন, শরীয়াহ আইনের মধ্যে থেকেই নারী ও সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করা হবে। একইসঙ্গে বাকস্বাধীনতাও নিশ্চিত করা হবে। বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রের সঙ্গে তালেবান শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে চায় এবং ইতোপূর্বে কয়েকটি দেশের সঙ্গে শুরু হওয়া যোগাযোগের চ্যানেলগুলোও আরও উন্নত করতেও আগ্রহী তারা।
তালেবানের এই মুখপাত্র আলজাজিরাকে আরও বলেন, যেকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের সঙ্গে বসতে সকল দেশ ও অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
গতকাল রোববার তালেবান যোদ্ধারা কাবুলে ঢোকামাত্রই খবর বের হয়—প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি দেশ ছেড়েছেন। পরে জানা যায়, তিনি তাজিকিস্তান গিয়েছেন। ঘানি বলেছেন, রক্তপাত এড়াতে দেশত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
তালেবান বলছে, যুদ্ধ এখানেই শেষ। আফগান সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা ও সদস্য এবং অতীতে তালেবানবিরোধী নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িতরা সঙ্গত কারণেই প্রাণভয়ে দেশত্যাগ করতে চাইছেন।
তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাইম আলজাজিরা টেলিভিশনকে বলেছেন, ‘আজকের দিনটি আফগানিস্তানের জনগণ ও মুজাহিদদের জন্য মহান একটি দিন। ২০ বছরের ত্যাগ ও প্রচেষ্টার ফল দেখতে পাচ্ছে তারা। আল্লাহকে অশেষ ধন্যবাদ, দেশে যুদ্ধ বন্ধ হয়েছে।’
মোহাম্মদ নাইম বলেন, ‘অচিরেই আফগানিস্তানের নতুন শাসনপদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে। তালেবান কখনোই ঘরের কোণে বন্দি থাকতে চায়নি। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্তর্জাতিক সম্পর্কগুলোও বজায় রাখতে চাই।’
নাইম বলেন, ‘আমরা আমাদের দেশ এবং জনগণের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছিলাম, সেই লক্ষ্যে পৌঁছে গিয়েছি। আমাদের দেশকে অন্য কোনো পক্ষের বিরুদ্ধে কাউকে ব্যবহার করতে দিব না আমরা। এবং আমরা অন্য কারও ক্ষতিসাধনও করতে চাই না।’