মাওলানা আলতাফ হোসেন কুতুবীঃ
নবিজীর শেখানো ৪ তাসবির আমল খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরী। শুনতে সাধারণ মনে হলেও নবিজীর শেখানো নিয়মে এ তাসবির আমল করলে যে কোনো দোয়াই কবুল হবে। হাদিসের বর্ণনা থেকে তা সুস্পষ্ট। নবিজী কী নিয়মে এ তাসবিহ পড়তে বলেছেন। হাদিসে পাকে এসেছে, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে একদিন এক আরব বেদুইন এসে বললেন- হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে (যে কোনো) একটি ভালো আমল শিখিয়ে দিন- এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেই বেদুইনের হাত ধরলেন। আর তাকে (সামনে বসিয়ে) এ শব্দগুলো শেখালেন এবং বললেন এ শব্দগুলো (৪ তাসবিহ) বেশি বেশি পড়বে-
১. سُبْحَانَ الله : সুবহানাল্লাহ; আল্লাহ পবিত্র
২. اَلْحَمْدُ للهِ : আলহামদুলিল্লাহ; সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য
৩. لَا اِلَهَ اِلَّا الله : লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ; আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই
৪. اَللهُ اَكْبَر : আল্লাহু আকবার; আল্লাহ তাআলাই মহান (সবচেয়ে বড়)।
লোকটি নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশিত এ তাসবিহগুলো শুনে কোনো কিছু না বলে ওঠে চলে গেলেন। (অর্থাৎ এ আমলের ব্যাপারে তার আগ্রহ বাড়েনি)
তারপরেই ঘটে চমৎকার ঘটনা!
লোকটি কিছুদূর যাওয়ার পর কি যেন চিন্তা করে আবারও নবিজীর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে ফিরে আসে। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (তাঁকে দেখে) মুচকি হাসলেন। লোকটি এসে নবিজীর সামনে বসে বললেন-
(হে আল্লাহর রাসুল!) ‘সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার’- আপনি এ তাসবিহগুলো যে আমাকে শেখালেন কিন্তু এ বাক্যগুলো তো শুধু আল্লাহর জন্য। এতে আমার জন্য কী রয়েছে? এগুলো পড়লে আমি কী পাবো?
এবার নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন-
১. তুমি যখন বলবে- ‘সুবহানাল্লাহ’; আল্লাহ তাআলা বলবেন- তুমি সত্য বলেছ।
২. তুমি যখন বলবে- ‘আলহামদুলিল্লাহ’; আল্লাহ তাআলা বলবেন- তুমি সত্য বলেছ।
৩. তুমি যখন বলবে- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’; আল্লাহ তাআলা বলবেন- তুমি সত্য বলেছ।
৪. তুমি যখন বলবে- ‘আল্লাহু আকবার। আল্লাহ তাআলা বলবেন- তুমি সত্য বলেছ।
এরপর এই ৪ তাসবিহ পড়া ব্যক্তি আল্লাহর কাছে নিজের (কাঙিক্ষত) চাহিদাগুলো (ধারাবাহিকভাবে যা চাইবে) তুলে ধরবে (যেমন)-
১. বান্দা বলবে- (اَللَّهُمَّ اغْفِرْلِىْ) আল্লাহুম্মাগফিরলি, হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করে দিন। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন, ‘তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম।
২. বান্দা বলবে- (اَللَّهُمَّ ارْزُقْنِىْ) ‘আল্লাহুম্মার জুক্বনি’ হে আল্লাহ! আপনি আমাকে রিজিক দান করুন। তখন আল্লাহ বলবেন, তোমাকে ইতিমধ্যে রিজিক দান করেছি।’
৩. বান্দা বলবে- (اَللَّهُمَّ ارْحَمْنِىْ) আল্লাহুম্মার হামনি’ হে আল্লাহ! আপনি আমাকে অনুগ্রহ করুন। তখন আল্লাহ বলবেন, ইতিমধ্যে তোমার প্রতি রহম করেছি।
এভাবে কোনো বান্দা যদি ৪ তাসিবর আমল করে আল্লাহর কাছে রোনাজারি করে যে কোনো বিষয়ে প্রার্থনা করে তবে মহান আল্লাহ বান্দার সব চাওয়া-পাওয়া পূরণ করে দেবেন। (ইনশাআল্লাহ)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত নিয়মিত ৪ তাসবির আমল করা। এ আমলের মাধ্যমে নিজেদের কাঙ্ক্ষিত সব বিষয়গুলো পাওয়ার চেষ্টা করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ৪ তাসবির আমল যথাযথভাবে করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের উপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।