শেখ মোহাম্মদ সায়েমঃ
প্রাকৃতিক রূপ বৈচিত্রের কারণে বান্দরবানকে বলা হয় ‘ভূস্বর্গ’। বান্দরবানের নৈসর্গীক সৌন্দর্য্যকে আরো মনোমুগ্ধকর করে তুলেছে যেসব স্থান, তার মধ্যে দেবতাখুম অন্যতম। স্থানীয়দের মতে, প্রায় ৫০-৭০ ফুট গভীর এই খুমের দৈর্ঘ্য ৬০০ ফুট যা ভেলাখুম থেকে অনেক বড় এবং অনেক বেশী বন্য। দেবতাখুম নামটা এসেছে দেবতা আর খুম থেকে। যেখানে খুম শব্দের অর্থ ঝর্না বা স্রোতধারা।
দেবতাখুম যেতে হলে আপনাকে প্রথমে রোয়াংছড়ি থেকে কচ্ছপতলী আর্মি ক্যাম্প গিয়ে অনুমতি নিয়ে ট্রেক করে শীলবাঁধা পাড়া (লিরাগাঁও) যেতে হবে। অবশ্যই শীলবাঁধা পাড়া থেকে বাঁশের মজবুত ভ্যালা বানিয়ে নিতে হবে। শীলবাঁধা গিয়ে প্রথমে পং সু আং খুম পার হতে হবে। পং সু আং খুম পার হওয়ার পর দেবতাখুমের শুরু। স্থানীয়দের কাছে এটা হল সোনাখুম। অনেকে আবার মারমা ভাষায় থংচিখুম নামেও ডাকেন।
দেবতাখুম এর ট্রেইল যেমন সুন্দর তেমনি ভয়ংকর। বর্ষায় গেলে ট্রেইলের ঝিরি/পাহাড়ের রূপে যেমন আপনার চোখ আটকাবে তেমনি পিচ্ছিল পাথরে পথে পা ফসকে বড় ধরনের বিপদে পড়ার আশঙ্কাও থাকে পদে পদে। কোন কোলাহল নেই, নেটওয়ার্কের বাহিরে। চারিপাশে নিস্তব্ধ সুনসান নিরাবতা, যেন এক ভূতুড়ে পরিবেশ। ফোটা ফোটা পানির শব্দে আরো ভূতুড়ে মনে হবে পরিবেশটা। বিশাল দুটি পাহাড়ের মাঝ দিয়েই চলে গেছে পথ যা ভেলায় করে পারি দিতে হবে। প্রকৃতিকে খুব কাছে থেকে উপভোগ করতে পারবেন এখানটায়। যেন মিশে যাবেন প্রকৃতির সাথে। যাওয়ার পথই আপনাকে বলে দিবে – স্বর্গের পথ কতটা সুন্দর হতে পারে।
যেভাবে যাবেন
বান্দরবান টাউন থেকে প্রথমে রোয়াংছড়ি আসতে হবে। রোয়াংছড়ি থেকে কচ্ছপতলী বাজার এসে লিরাগাঁও সেনানিবাসে অনুমতি নিতে হয়। সেখান থেকে ঘণ্টাখানেক ট্রেকিং করে শীলবাঁধা পাড়া যাওয়া যায়। শীলবাঁধা পাড়ার কাছেই দেবতাখুম। তবে দেবতাখুমের আগে পং সু আং নামের আরেকটি খুম পার হতে হয়।
সতর্কতা: বর্ষাকালে এই খুমের ট্রেকিং পথ কিছুটা দুর্গম হয়ে ওঠে। বর্ষার সময় বা অন্য কোন সময়ই গাইড ছাড়া এখানে যাওয়া নিরাপদ নয়। সাঁতার না জানা থাকলে খুমের ভিতর যাওয়ার আগে লাইফ জ্যাকেট পরে নেওয়া উচিত।