এম.এইচ মুরাদঃ
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি চট্টগ্রাম বেসডিপো কর্তৃক একটি টেন্ডার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অপপ্রচার এবং ষড়যন্ত্র করছে একটি কুচক্রী ও স্বার্থানেষী মহল। জানা গেছে টেন্ডার না পাওয়াকে কেন্দ্র করে ঐ মহলটি বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। তাদের মধ্যে বাদ যায়নি ঐ এলাকা অর্থাৎ পতেঙ্গা এলাকার কাউন্সিলরের ছেলে ওয়াহিদ সহ রেডক্রিসেন্টের চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় বোর্ডের সদস্য ডা. শফিউল আযমও।
ষড়ষন্ত্রকারীরা অভিযোগ করে, গত ২০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি চট্টগ্রাম বেইসডিপোর পুরাতন ওয়্যারহাউজে রক্ষিত কিছু মালামালের উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। ওই দরপত্রে অংশগ্রহণ করেন মোট ১৯ জন। সেখানে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ৬৮ হাজার টাকায় দরপত্র পান তাদের মধ্যে একজন। সেখানে সর্বোচ্চ দরদাতা হয়েও তাকে মালামাল দেয়া হয়নি। বিভিন্ন অজুহাতে মৌখিকভাবে দরপত্রটি কতৃপক্ষ বাতিল করে বলে প্রচার করে অভিযোগকারীরা । এবং পরে রেড ক্রিসেন্ট কতৃপক্ষ শফিউল আযমের সুপারিশে ওয়াহিদ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ একজনকে টেন্ডারটি পাইয়ে দেয় বলে প্রচার করে তারা।
কাউন্সিলর পুত্র ওয়াহিদ চৌধুরী এবং রেডক্রিসেন্টের চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় বোর্ডের সদস্য ডা. শফিউল আজমের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে অনুসন্ধান চালায় একাত্তর বাংলা নিউজ। অনুসন্ধানে উঠে আসে অভিযোগকারীদের বর্ণনা করা ঘটনার সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র।
অনুসন্ধানে বেশ কয়েকজন ঐ টেন্ডারে অংশগ্রহনকারীর সাথে কথা হয় আমাদের প্রতিবেদকের সাথে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানায় এই টেন্ডারের সাথে কাউন্সিলর পুত্র ওয়াহিদ চৌধুরীর কোন সম্পৃক্ততা নেই। ওনি এই টেন্ডারে অংশগ্রহণও করেন নাই। আমাদের ১৯জনের মধ্যে তার নাম কোথাও নেই। এবং তিনি টেন্ডারের ব্যবসা করেন এমনটাও কখনও শুনি নাই। যে সবচেয়ে বেশী মূল্যে দরপত্র দিয়েছে তিনিই মালামালগুলো পেয়েছে। পরে কে বা কারা এই সমস্ত অপপ্রচার ও গুজব রটাচ্ছে আমাদের বোধগম্য নয়।’
এই বিষয়ে ডা. শফিউল আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে দরপত্রে সংশ্লিষ্ট রেড ক্রিসেন্টের এক কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি একাত্তর বাংলা নিউজকে বলেন, আমাদের এই টেন্ডারটি সম্পর্কে আমাদের চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় বোর্ডের সদস্য ডা. শফিউল আযম সাহেব আগে থেকে কিছু জানতেন না, সুপারিশতো দূরের কথা। আর রেড ক্রিসেন্টের ইতিহাসে এইসব বিষয়ে কখনো সুপারিশ গ্রহণযোগ্য নয় বিধায় কেউ সুপারিশ করেও না। সুতরাং সুপারিশ বা টেন্ডারে অনিয়ম নিয়ে যা বলা হচ্ছে তার কোন ভিত্তি নেই। যারা টেন্ডার পায় নাই তাদের মধ্য থেকে কেউ এইসব অপপ্রচার চালাচ্ছে মনে হচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়াহিদুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘এখানে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমি এসব ব্যাপারে কিছুই জানিনা। এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। সামনে আমার আব্বার কাউন্সিলর ইলেকশান তাই আমাদের সুনাম ও জনপ্রিয়তা নষ্ট করার জন্য কে বা কারা এই অপপ্রচার চালাচ্ছে বুঝতে পারছি না। আমার এবং আমাদের পরিবার সম্পর্কে আমাদের এলাকার সবাই জানে। আপনারা সবার কাছ থেকে কষ্ট করে জেনে নিতে পারেন আমাদের সম্পর্কে। আর আমি কখনও টেন্ডার ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলাম না, সুতরাং যেই টেন্ডারটির কথা বলছেন ওটাতে আমি কিভাবে জড়িত থাকবো বলেন। আপনার নাম ব্যবহার করে কেউ যদি ফায়দা নেয় সেক্ষেত্রে আপনার কি করার থাকবে বলেন। আর রেড ক্রিসেন্টের মতো সংগঠন কারও নাম বা সুপারিশ গ্রহন করবে তা কখনও আমি বিশ্বাস করি না। সুতরাং এই বিষয়টি নিয়ে কেউ যদি আমার বা আমার পরিবারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আমি মনে করছি। আমি আমার এলাকার সম্মানিত জনসাধারণের কাছে অনুরোধ করবো আপনারা এই সমস্ত গুজবে কান না দিয়ে আমাদের উপর যে বিশ্বাস ও আস্থা আপনাদের ছিলো এবং আছে সেটি অটুট রাখবেন এই আশাই রাখছি।’
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. শফিউল আযম বলেন,’আমাদের একটি টেন্ডার হয়েছে বলে জেনেছি। কিন্তু যা বলা হচ্ছে বা অভিযোগ করা হচ্ছে এর কোন ভিত্তি নেই। এটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। কারণ এখানে সুপারিশ বা কারও নাম বিক্রি করে কোন পায়দা নেওয়ার সুযোগ নেই। স্বাভাবিক ও নিয়মের মধ্যে যা হবে তার বাইরে ভিন্ন কিছু ভাবারও অবকাশ নেই এখানে। তাই বিনা কারণে ভুল বুঝাবুঝি থেকে বিরত থাকতে সবাইকে বিনীত অনুরোধ করছি।’