স্টাফ রিপোর্টারঃ
চট্টগ্রামে আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর সুবিধা আছে এমন ১২টি বেসরকারি হাসপাতালে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমিত রোগীদের চিকিৎসা সেবা চালুর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসাথে এসব হাসপাতাল করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছে কি-না তা আগামী ২২ জুন প্রতিবেদন আকারে আদালতকে জানানোর জন্য জেলা সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সোমবার (১৫ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান এই আদেশ দিয়েছেন। এ তথ্য জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ বাকের উদ্দিন ভূ্ঁইয়া।
এর আগে গত ১১ জুন আইনজীবী মো. সাইফুল ইসলাম ও মো. আজিজুল হক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিবাদী করে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ।
শুনানিতে রিটকারীদের পক্ষে অংশ নেয়া আইনজীবী মোহাম্মদ বাকির উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং উপসর্গ আছে অথবা আক্রান্ত নন— এমন রোগীদের চিকিৎসা নিয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলো তাদের কর্তব্য পালন করছে না। এ নিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হচ্ছে। এমন অমানবিক অবস্থার প্রতিকার চেয়ে আমরা ১১ জুন রিট দায়ের করি। রিটে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারির পরও ১২টি বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড ও নন-কোভিড রোগীদের চিকিৎসা না দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। আদালত রিটের শুনানি শেষে ১২টি হাসপাতালকে দ্রুততার সাথে করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসা শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন। এই নির্দেশ তারা প্রতিপালন করছে কি-না সেটা ২২ জুন লিখিতভাবে জানানোর জন্য জেলা সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
চিকিৎসা শুরু করতে হাইকোর্টের নির্দেশ পাওয়া ১২টি হাসপাতাল হলো- পার্কভিউ হাসপাতাল, মেডিকেল সেন্টার, ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল, সার্জিস্কোপ হাসপাতাল (ইউনিট-২), ডেল্টা হাসপাতাল, ইউএসটিসি হাসপাতাল, সিএসসিআর, ন্যাশনাল হাসপাতাল, এশিয়ান হাসপাতাল, রয়েল হাসপাতাল, মেট্রোপলিটন হাসপাতাল এবং ম্যাক্স হসপিটাল।
প্রসঙ্গত, করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর গত ৪ এপ্রিল চট্টগ্রামে এক সভায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় চট্টগ্রামের ১২টি বেসরকারি হাসপাতালকে আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর সুবিধাসহ ব্যবহারের জন্য নির্ধারণ করেছিল করোনাভাইরাস মোকাবিলায় গঠিত বিভাগীয় কমিটি। চার পর্যায়ে তিনটি করে হাসপাতাল ক্রমানুসারে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়েছিল ওই সভায়। কিন্তু দুইমাস পার হয়ে গেলেও চট্টগ্রামের এই বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোতে স্বাভাবিক চিকিৎসা সেবা শুরু হয়নি।
এদিকে প্রতিদিনই হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না কোভিড ও নন-কোভিড রোগীরা। সেবা না পেয়ে সম্প্রতি কজনের মৃত্যুর খবরও এসেছে সংবাদমাধ্যমে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে রিট আবেদনের পর এমন আদেশ এলো।