এম.এইচ মুরাদঃ
করোনা আক্রান্ত সাংবাদিক এবং গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য, পুষ্টিকর খাদ্য ও ফলমূল উপহার হিসেবে দিয়ে , তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন মানবতাবাদী প্রকৌশলী হিসাবে স্বীকৃত জ্যোতির্ময় ধর । ইতিপূর্বে করোনা পরিস্থিতির কারনে , সংবাপত্র শিল্পের সাথে জড়িত কর্মহীন হয়ে পরা ৫০ জন কম্পিউটার অপারেটর এর পরিবারের পাশে তিনি দাঁড়ান । পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে , চট্টগ্রামের ২০ জন সাংবাদিক পরিবারকে নিজ উদ্যোগে ঈদ উপহারও দেন তিনি । এছাড়া গত ৩১ এ মে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সকল ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী , পিয়ন এবং নৈশ প্রহরির পরিবারকে এই করোনা পরিস্থিতিতে ঈদ উপহার প্রদান করেন। এছাড়া বিভিন্ন সময় সাংবাদিকদের অনুরোধে অসহায় দুস্থ মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন বিভিন্ন ত্রাণ ও উপহার সামগ্রী।
প্রকৌশলী জ্যোতির্ময় ধর এ বিষয়ে তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধারা জীবনবাজী রেখে নয় মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করতে পারে তাহলে আমরা কেন অল্প কিছু দিনের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে পারবো না। আমরা মুক্তিযোদ্ধ দেখেনি, তবে অদৃশ্য করোনা যুদ্ধ দেখছি। তাই এই যুদ্ধের একজন কর্মী হয়ে মানুষের পাশে দাড়াতে পেরে আমি গর্ববোধ করছি। তিনি আরো বলেন, অসহায়রা উপহার পাওয়ার পর তাদের চোখ-মুখ থেকে যে প্রষ্ফুটিত হাঁসির প্রতিফলন ঘটে তখন করোনাকালের সব দুঃখ ক্লান্তি ভুলে যায়। এ যেন অপ্রাপ্তির মধ্যে বিশাল প্রাপ্তি। আমরা সবাই যদি এসব বিপদগ্রস্ত প্রাণের ডাকে সাড়া দিয়ে পাশে দাঁড়ায় তাহলে এই যুদ্ধে আমারাই জয়ী হবো।
অবিবাহিত তড়িৎ প্রকৌশলী জ্যোতির্ময় ধর জার্মান ইন্সিটিউট অফ অলটারনেটিভ এনার্জিরতে রিসার্চ অফিসার হিসেবে কর্মরত এবং বর্তমানে জার্মান ইন্সিটিউট অফ অলটারনেটিভ এনার্জির বাংলাদেশ প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ছোট বেলা থেকে স্বপ্ন দেখতেন বড় হয়ে দেশ ও দশের জন্য কিছু একটা করবেন। সেই থেকে মানব সেবায় তার এগিয়ে চলা। ১৯৯২ সালে স্কুল জীবন থেকে যুব রেডক্রিসেন্টের সাথে জড়িত। তারপর রাশিয়াতে পড়াশুনা করার সময় রাশিয়ান রেডক্রস এবং জার্মানিতে জার্মান রেডক্রসের সাথে জড়িয়ে পড়েন। বাংলাদেশে এসেও আবার করোনাকালের শুরু থেকে রেডক্রিসেন্টের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।
এ পর্যন্ত তিনি ব্যাক্তিগত তহবিল থেকে প্রায় ২০০০ জন কর্মহীন, মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং অসহায় পরিবারের উপহার সামগ্রী তুলে দিয়েছেন।
প্রকৌশলী জ্যোতির্ময় ধর শুধু চট্টগ্রামেই কাজ করছেন তা কিন্তু নয়। ঢাকাতে আরেক আলোচিত সেচ্ছাসেবী নাফিসা খানের মাধ্যমেও অনেক পরিবারকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন চট্টগ্রামের এই সন্তান।মানবসেবী নাফিসা খান তার ফেইজবুক পেইজে জ্যোতির্ময় ধরকে তার পথপ্রদর্শক মন করেন বলেও আখ্যা দিয়েছেন। তাকে দেখলে উচ্চতার দাঁড়িপাল্লাকে পরাজিত করা অপার মানবতার এক অনুপম দৃশ্য দু’চোখ ভরে অবলোকন করা যায়। অতুলনীয় মানবতার স্বাক্ষর রেখে এভাবেই নিঃস্বার্থভাবে সাহায্য করে যাচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান প্রকৌশলী জ্যোতির্ময় ধর।
প্রকৌশলী জ্যোতির্ময় ধর চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক রণজিৎ কুমার ধর ও চট্টগ্রাম আর্ট কলেজের প্রিন্সিপাল প্রফেসর রীতা দত্তের একমাত্র পুত্র এবং দৈনিক আজাদীর প্রয়াত বার্তা সম্পাদক সাধন ধরের দৌহিত্র। বেশ কিছুদিন আগে এই প্রকৌশলী বাংলাদেশের একটি অজানা ৩২৯৮ ফুটের পাহাড় চূড়ার সন্ধান করে সকলের প্রশংসা অর্জন করেন এবং এই পাহাড়ের নামকরণ করেন ” রিনির চূড়া ” যা নিয়ে উইকিপিডিয়া ৫ ভাষায় তথ্য পাতা প্রকাশ করে।