মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশের সুন্দরতম ‘পরিচ্ছন্ন গ্রাম’ বান্দরবানের মুনলাই পাড়া


প্রকাশের সময় :২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ৬:০২ : অপরাহ্ণ

প্রিতম চাকমা (বান্দরবান প্রতিনিধি):

যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা ছবির মতো এক গ্রাম। নাম মুনলাই পাড়া। বান্দরবানের রুমা থেকে বগালিক যাওয়ার পথে দেখা মিলে গ্রামটির। ইতোমধ্যেই তিন পার্বত্য জেলার পরিচ্ছন সুন্দর গ্রাম হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে মুনলাই পাড়া। ছবির মত সাজানো গোছানো গ্রামটি দিন দিন পর্যটকদের আকর্ষণের কেদ্রবিন্দুতে পরিণত হচ্ছে।

বান্দরবানের নয়নাবিরাম সৌন্দর্যের মাঝে যেন বাড়তি আকর্ষণ আর পরিচ্ছনতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে ঝকঝকে গ্রাম মুনলাই। যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা স্বপ্নের একটি গ্রাম। এর পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথ আর গাছে গাছে বাহারি ফুলের সমাহার। প্রকৃতি প্রেমিদের মনে বারতি ভালো লাগার আবেশ তৈরি করে।

বান্দরবান শহর থেকে মাত্র দুই-আড়াই ঘণ্টাতেই পৌঁছে যাওয়া যায় গ্রামটিতে। ১৯৮৩ সালে ৩০টি বম পরিবার নিয়ে গড়ে উঠে গ্রামটি। বসবাস শুরুর পর থেকে পরিষ্কার পরিচ্ছনতার দিকে বারতি নজর এখানকার বাসিন্দাদের। চারদিকে পাহাড় বেষ্টিত ও সাঙ্গু নদী বিধৌত এই পাড়া আপনাকে অভ্যর্থনা জানাবে ইকো সিস্টেমের হোম স্টে ও পাহাড়ি রান্না, রোমাঞ্চকর ট্রেকিং, কায়াকিং, দেশের দীর্ঘতম জিপ লাইন ও বিভিন্ন ইভেন্টের মাধ্যমে।

বাংলাদেশের প্রথম কমিউনিটি বেইজড ট্যুরিজম গড়ে উঠেছে এই পাহাড়ি বম সম্প্রদায়ের গ্রামে! মুনলাই পাড়াতে প্রকৃতির কাছাকাছি থাকার পাশাপাশি স্বাদ নিতে পারবেন বিভিন্ন রোমাঞ্চকর এক্টিভিটিজের। ট্রিটপ, কায়াকিং, জিপ লাইনিং, রাতের বেলা বারবিকিউ, ক্যাম্প ফায়ার ইত্যাদি এক্টিভিটিজ রয়েছে এই গ্রাম জুড়ে।

কাঠের বাড়িগুলোতে অর্কিডসহ বিভিন্ন ফুলের গাছ দিয়ে সাজানো। বাড়ির সামনে কোনোটা ঝোলানো, কোনোটা আবার সামনের মাটিতে। রাস্তাগুলোতেও দু’একটা গাছের পাতা ছাড়া বিশেষ কোনো ময়লা-আবর্জনার দেখা নেই। নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়।

সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, এ গ্রামের বাসিন্দারা কেউই ঘরে কখনো তালা লাগান না। কারণ সেখানে চুরি হওয়ার কোনো ভয়ই নেই। বাসিন্দারা একই পরিবারের সদস্য হিসেবে নিজেদেরকে ভাবেন। এ কারণে ঘর খোলা রেখেই কেউ বাইরে গেলে তার প্রতিবেশি নিজের মনে করেই বাড়িটি পাহারা দেন। যা বর্তমান সময়ে দৃষ্টান্তমূলক।

গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, ২০ বছর আগে থেকে আমরা এই মুনলাই পাড়া যত্ন করে রাখছি। পরিষ্কার পরিচ্ছন ভাবে আমরা রাখতে চাই। বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন আসে আর এখান থেকে যেন শিক্ষা নিতে পারে।

আরেক বাসিন্দা বলেন, মুনলাই পাড়া একটি পরিষ্কার পরিচ্ছন গ্রাম হিসাবে পরিচিত লাভ করেছে। এটা মূল উদ্দেশ্য হলো আমরা জানি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা হচ্ছে আমাদের খ্রিষ্টান ধর্মে একটা অংশ।

গ্রামের প্রতিটি ঘরের সামনে আছে ময়লা ফেলার ডাস্টবিন। দৈনিক দশ মিনিট নিজ বাড়ি ও আঙ্গিনা পরিষ্কার করার পাশাপাশি বর্ষা মৌসুমে অন্তত দশটি ফুলের গাছ লাগানোর টার্গেট থাকে গ্রামবাসীর।

গ্রামের অন্য এক বাসিন্দা বলেন, আমাদের পাড়া পরিষ্কার পরিচ্ছনতার উদ্যোগে আমরা দিনে সকাল এবং বিকালে পরিষ্কার পরিচ্ছন করে থাকি। এবং ছোট থেকে বড় আমরা সবাই মিলে পরিষ্কার পরিচ্ছনতার উপর আমরা ইতোমধ্যে শিখে গেছি। আমরা খুব খুশি আমাদের মুনলাই পাড়া অনেক পর্যটক আসে। তারপর আমরা খুবই খুশি আমরা চাই যে আগামীতে সুন্দর করে আরও পরিষ্কার পরিচ্ছন বজায় রাখতে পারি।

গ্রামবাসীর পাশাপাশি সুন্দর এই জায়গাটিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন রাখতে সব উদ্যোগ নিয়েছে মুনলাই পাড়ার কমিউনিটি ট্যুরিজম হোম ম্যানেজমেন্ট কমিটিসহ স্থানীয় প্রশাসন।

মুনলাইপাড়া বেইসড ক্যাম্প কমিউনিটি ট্যুরিজমের সভাপতি লাল নুন নোয়াম বম বলেন, ১৯৮৫ সালে আমাদের টেকআপ করেছে। ৩০টি পরিবার এখানে আমরা উপকার বমি হিসাবে ছিলাম। আসতে আসতে আমরা এ পর্যন্ত আসছি। পরিষ্কার পরিচ্ছন আমাদের মধ্যে এর আগেও ছিল। আমাদের অবস্থাটা যাই হোক কিন্তু আমরা পরিষ্কার পরিচ্ছন রাখতে চাই।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন প্রয়োজনে তারা যখন দেশের বাইরে গিয়েছে তারা দেখেছে যে বিদেশে সে দেশগুলো অনেক সুন্দর। এতে দেখে তারা মূলত উদ্বুদ্ধ হয়। যে দেশে ফিরে গিয়ে তারা তাদের পাড়াটা এই রকমি সুন্দর করবে। তারা ধর্মীয় ভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন থাকতে পছন্দ করে। সেই অনুপ্রেরণা থেকেই তারা মূলত তাদের পাড়াটিকে নিজ উদ্যোগেই পরিষ্কার পরিচ্ছন রাখছে। আর প্রশাসনেও অনেক সাহায্য করেছে।

যেভাবে যাবেন- ঢাকা থেকে প্রথমে বান্দরবান পৌঁছাতে হবে। চেষ্টা করবেন রাতে রওনা হতে। তাহলে সকালে বান্দরবান পৌঁছেই সেখান থেকে নাস্তা করে চান্দের গাড়ি করে মুনলাই পাড়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করুন। রাস্তায় কোনো সমস্যা না হলে দুপুর ১২টার মধ্যে পৌঁছে যাবেন মুনলাই পাড়াতে।

কোথায় থাকবেন- মুনলাই পাড়াতে হোম স্টে বেইজড ইকো কটেজ আছে। থাকা-খাওয়া সব ওখানেই করতে পারবেন। পর্যাপ্ত ওয়াশরুম ও গোসলের ব্যবস্থা আছে। তাই সেখানে ভালোভাবেই দিন কাটাতে পারবেন।

ট্যাগ :