স্টাফ রিপোর্টার:
দেশের যোগাযোগের স্বর্ণদ্বার খ্যাত বঙ্গবন্ধু টানেল খুলছে আজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজহাতে উন্মোচন করবেন কর্ণফুলী নদীর নিচ দিয়ে নির্মিত এই সুড়ঙ্গপথ। একই সাথে উদ্বোধন করবেন সরকারি বিভিন্ন সংস্থার বাস্তবায়ন করা অন্তত আরো ১৭টি প্রকল্প।
শুক্রবার বিকেলে এ তথ্য জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামান। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু টানেলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন এমন ১৭টি প্রকল্প রয়েছে। এসব প্রকল্পের অধিকাংশের কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। তবে কিছু প্রকল্পের ১৩ থেকে ২০ শতাংশ কাজ বাকি আছে।
প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, স্থানীয় সরকার বিভাগের জেলা পরিষদ উন্নয়ন সহায়তা খাতের অর্থায়নে নির্মিত আনোয়ারা ও রাঙ্গুনিয়ায় উপজেলা পরিষদ ডাকবাংলো নির্মাণ। প্রকল্প দুটি বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ। এই দুই প্রকল্পে দুই কোটি টাকা করে চার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও এখন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে দুই কোটি ৬৯ লাখ ৯৭ হাজার ১৫২ টাকা।
এছাড়া রাউজানে শেখ কামাল কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পটিও বাস্তবায়ন করছে জেলা পরিষদ। স্থানীয় সরকার বিভাগের জেলা পরিষদ উন্নয়ন সহায়তা খাতের অর্থায়নে বাস্তবায়িত এই প্রকল্পের বরাদ্দ সাত কোটি ৩০ লাখ ৮৯ হাজার টাকা ধরা হলেও এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে সাত কোটি ৩১ লাখ ২৭ হাজার ১১৭ টাকা।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবেশমুখে নির্মিত বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল প্রকল্পটি নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। প্রকল্পটি সম্পন্ন করতে চসিকের ব্যয় হয়েছে ৮৪ লাখ টাকা।
শতভাগ সম্পন্ন আরেকটি প্রকল্প হলো পটিয়া উপজেলার উজিরপুর সড়কে শিকলবাহা খালের ওপর করা পিসি গার্ডার ব্রিজ। ৪৫ কোটি ২৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর।
এছাড়াও বড় প্রকল্পগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ টাওয়ারের নির্মাণ কাজ ৮০ শতাংশ, মুসলিম ইনস্টিটিউট সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ ৮৭ শতাংশ এবং পটিয়ায় শেখ কামাল অডিটোরিয়াম কাম মাল্টিপারপাস হলের নির্মাণ কাজ ৮৫ শতাংশ শেষ হয়েছে।
প্রকল্পগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স নির্মাণে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২৩২ কোটি ৮৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে গণগ্রন্থাগার অধিদফতর।
জেলা পরিষদ টাওয়ার প্রকল্পটি নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করছে জেলা পরিষদ। ৮১ কোটি ২৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দের এই প্রকল্পে এখন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৪০ কোটি ২২ লাখ ৯৪ হাজার কোটি টাকা। স্থানীয় সরকার বিভাগের জেলা পরিষদ উন্নয়ন সহায়তা খাতের অর্থায়নে পটিয়ায় শেখ কামাল অডিটোরিয়াম কাম মাল্টিপারপাস হল নির্মাণ করছে জেলা পরিষদ। ২০ কোটি ১২ লাখ ৬১ হাজার ৮০ টাকা বরাদ্দের এই প্রকল্পে এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ১৬ কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৩৮১ টাকা।
এর বাইরে উদ্বোধনযোগ্য প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে রিভার ক্রুজ ও ফুল ডে ট্যুর সম্বলিত সমন্বিত পর্যটন সেবা, হাজার বছরের নৌকা জাদুঘর, ১৯১টি ইউনিয়নে খেলার মাঠ ও সিমেন্স হোস্টেল কমপ্লেক্স সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, স্মার্ট স্কুল বাস সার্ভিস ও বার্ডস পার্কসহ জেলা প্রশাসন বাস্তবায়িত অন্তত ৬টি প্রকল্প।
অন্যদিকে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনযোগ্য প্রকল্পগুলো হলো চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘর, বিমানবন্দর থেকে বঙ্গবন্ধু টানেল পর্যন্ত শেখ হাসিনা সড়ক ও সিমেন্স হোস্টেল কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ।
এরমধ্যে বিমানবন্দর থেকে বঙ্গবন্ধু টানেল পর্যন্ত শেখ হাসিনা সড়কের নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে চসিক। জিওবি অর্থায়নে এই প্রকল্প স¤পন্ন করতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫ কোটি টাকা। মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘর নির্মাণ করবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং ৬৯ কোটি ১৪ লাখ ১৩ হাজার টাকা ব্যয়ে ভবন নির্মাণ প্রকল্প যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে নাবিক ও প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিদফতর এবং গণপূর্ত অধিদফতর।