স্টাফ রিপোর্টারঃ
গেল দুবছর করোনা মহামারীর কারণে পূজার আনন্দ ও উৎসবে ছিল ভাটা। তবে এবার অনেকটা চিরচেনা রূপে ফিরেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এবছর আনন্দ-আয়োজনে কোনোকিছুতেই কমতি নেই। বর্ণিল সাজে সেজেছে প্রতিটি পূজামণ্ডপ।
রোববার (২ অক্টোবর) সপ্তমীর দিন সকাল থেকে দেবী দুর্গা দর্শনে মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় করেন দর্শনার্থী ও ভক্তরা। সন্ধ্যার দিকে সেই ভিড় বেড়ে দ্বিগুণ। এদিন সকাল থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে বের হন অনেকেই।
সপ্তমীর দিন সকালে অনুষ্ঠিত হয় পূজা-অর্চনা ও চণ্ডীপাঠ। পূজা শেষে ভক্তদের দেওয়া হয় পুষ্পাঞ্জলি। এছাড়া বিভিন্ন মণ্ডপে দুপুরে ভক্তদের জন্য আয়োজন করা হয় মহাপ্রসাদের। এছাড়া সন্ধ্যায় মণ্ডপে মণ্ডপে ছিল ঢাক-ঢোলের বাজনায় আরতি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
নগরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে পূজার আনন্দ ভাগাভাগি করতে নানা রঙের পোশাক পড়ে সব বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোরদের ভিড়ে পূজামণ্ডগুলো হয়ে উঠে উৎসবমুখর। শুধু ঘোরাঘুরিতে সীমাবদ্ধ ছিল না আনন্দ। উৎসবের আনন্দের স্মৃতি ধরে রাখতে যে যার মতো করে ছবি তুলেছেন। এছাড়া অনেকে দেবী দুর্গার সঙ্গেও সেলফি নিয়েছেন। কেউ কেউ আবার সেই ছবি সামাজিম যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন ক্যাপশন দিয়ে। এছাড়া এবার প্রতিটি পূজা মণ্ডপে সিসিটিভি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি থাকায় নিরাপত্তার সার্বিক চিত্র নিয়ে দর্শনার্থীদের মুখে ছিল স্বস্তির কথা।
নগরের চেরাগীর এলাকার একটি পূজামণ্ডপে কথা হয় পরিবার নিয়ে আসা রীমা সেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, অষ্টমী ও নবমী পূজার দিন ভিড় সবচেয়ে বেশি হয়। তাই আজ (রোববার) সপ্তমীর দিনে পরিবার-পরিজন নিয়ে দেবী মাকে দেখতে চলে এলাম। এবার নিরাপত্তা সার্বিক চিত্র দেখে ভালোই লাগছে। সবকিছুই মিলে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। গেল দুবছর করোনার কারণে আনন্দ তেমন একটা ছিল না।
নগরের টেরিবাজার রঘুনাথবাড়ি পূজামণ্ডপে আসা সজীব দে বলেন, পরিবার নিয়ে বের হয়ে প্রথমে হাজারী লেইনের পূজা দেখলাম। এরপর এখানে আসলাম। আমার ছেলের প্রথম পূজা দেখা এটি। তাই সবাই মিলে মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে একটা সেলফিও নিলাম। ছবিটা স্মৃতি হয়ে থাকবে।
এদিকে আগামীকাল (সোমবার) অনুষ্ঠিত হবে মহাষ্টমী পূজা। এর পরদিন নবমী পূজা। তারপর বিজয়ী দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে পাঁচদিনের শারদীয় দুর্গোৎসব। এবার দেবী দুর্গা গজে চড়ে কৈশাল থেকে মর্ত্যলোকে এসেছেন। এর ফলে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, ঝড়-বৃষ্টি এবং শস্য ও ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। দশমীর দিন বির্সজনের মাধ্যমে মা কৈলাসে (স্বর্গে) ফিরে যাবেন নৌকায় চড়ে। এর ফলে জগতের কল্যাণ সাধিত হবে।