মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজস্ব বাড়লেও ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না চট্টগ্রাম বন্দর


প্রকাশের সময় :১৯ জুলাই, ২০২২ ৬:২৩ : পূর্বাহ্ণ

স্টাফ রিপোর্টারঃ

আমদানি-রপ্তানির ক্রমবর্ধমান প্রবৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়েছে পণ্য হ্যান্ডলিং সক্ষমতা। সার্বিক কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে অতিসম্প্রতি চালু হচ্ছে পতেঙ্গা কনটেনইনার টার্মিনালও। তবে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে কনটেইনার ও পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে রাজস্ব আয় বাড়লেও ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না চট্টগ্রাম বন্দর। বছরজুড়ে রাজস্ব থেকে যা আয় হয় তার অর্ধেকই চলে যাচ্ছে বন্দর পরিচালন ও অন্যান্য খাতে।
জাহাজ, স্টোরেজ, মুরিং, জেটি, জমি এবং নদী ভাড়া দিয়ে আয় করে বন্দর। দিন দিন বন্দরের সক্ষমতা বাড়ার সাথে নিজস্ব আয়ও বাড়ছে। তবে রাজস্ব আয়ের বড় অংশই ব্যয় হয় পরিচালন, রক্ষণাবেক্ষণ ও বেতন-ভাতা খাতে। এর মধ্যে রয়েছে যন্ত্রপাতি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ, জ্বালানি খরচ, বেতন-ভাতা, ঠিকাদারদের বিল, যন্ত্রপাতির অবচয় খাত ইত্যাদি। এছাড়া আয়কর ও সরকারি কোষাগারে জমার পরিমাণও রাজস্ব ব্যয়ের হিসাবের মধ্যে পড়ে।

বন্দর কর্মকর্তারা বলছেন, চট্টগ্রাম বন্দরকে আরো বেশি গতিশীল করতে দ্রুত গতিতে চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি বন্দরের কাজকে বাধাহীন করতে নতুন নতুন যন্ত্রপাতি কেনা হচ্ছে। সেই সঙ্গে গত একবছরে নতুন করে জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কিছু কিছু পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনো চলমান আছে। এ কারণে বন্দরের ব্যয় বাড়ছে। তবে উদ্বৃত্ত আয় বাড়াতে সব ধরনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দরে ১১ লাখ ৯ হাজার ৩৫৫ টিইইউএস আমদানি পণ্য এবং ১০ লাখ ৮০ হাজার ৮৪ টিইইউএস রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিং করা হয়েছিল। অপরদিকে সদ্যবিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৬ লাখ ৫২ হাজার ৫৭৫ টিইইউএস আমদানি পণ্য এবং ১৪ লাখ ৭৫ হাজার ২৮১ টিইইউএস রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিং করা হয়েছে। সাত বছরের ব্যবধানে বন্দরের আমদানি ও রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের হার বেড়েছে। যেহেতু রাজস্ব আয় বৃদ্ধিটা পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত, ফলে দিনে দিনে বন্দরের রাজস্ব আয়ও বেড়েছে। অন্যদিকে রাজস্ব আয় বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে ব্যয়ও।

জানা গেছে, বন্দর বছরজুড়ে যে পরিমাণ রাজস্ব আয় করে তার শতকরা ৮০ ভাগই আসে বন্দর পরিচালন কার্যক্রম থেকে। এরমধ্যে জাহাজ, কনটেইনার ও পণ্য খাতে আদায় করা নানা মাশুল থেকে আয় করে বন্দর। পাশাপাশি জমি ইজারা দেয়াসহ বিবিধ খাত থেকে বাকি আয় করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে বন্দরের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে বড় অংশ ব্যয় করতে হয় বন্দরকে। এরমধ্যে যন্ত্রপাতি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ, জ্বালানি খরচ, বেতন-ভাতা, ঠিকাদারদের বিল, যন্ত্রপাতির অবচয় ইত্যাদি খাতে ব্যয় করে বন্দর। ফলে রাজস্ব ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সার্বিকভাবে প্রকৃত আয় কমছে বন্দরের।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে আরো জানা গেছে, সদ্য বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩ হাজার ২৫৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয় বন্দরের। তবে বন্দর কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে ১ হাজার ৫৪৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয় করে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এ সংস্থাটি। অর্থাৎ আয়ের অর্ধেকই অর্থই পরিচালনার কাজে ব্যয় হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে বন্দরের আয় হয় ৩ হাজার ৭০ কোটি টাকা ও ব্যয় হয় ১ হাজার ৮৯২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২ হাজার ৯২৫ কোটি ৮ লাখ টাকা আয়ের বিপরীতে ব্যয় হয়েছিল ১ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা। তাছাড়া ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২ হাজার ৮৯২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা আয়ের বিপরীতে ১ হাজার ৬০৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ২ হাজার ৬৬১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা আয়ের বিপরীতে ১ হাজার ৩৯০ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয় করে বন্দর।

সার্বিক চিত্রে দেখা গেছে, আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহনে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখলেও নিজের ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না চট্টগ্রাম বন্দর। বন্দরের রাজস্ব আয়ের চেয়ে রাজস্ব ব্যয়ের হারও বাড়ছে দ্রুতগতিতে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, রাজস্ব আয় বৃদ্ধিটা হ্যান্ডেলের সঙ্গে সম্পর্কিত। কনটেইনার হ্যান্ডলিং আরো বাড়াতে চলতি মাসেই পতেঙ্গা কনটেইনার চালু করার সিদ্ধান্ত রয়েছে। একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনাকালে আয়ের পাশাপাশি ব্যয় তো থাকবেই। আর ব্যয়গুলো করা হচ্ছে বন্দরের সার্বিক উন্নয়নের জন্য। বন্দরের নিজস্ব অর্থায়নে শক্তিশালী টাগবোট সংগ্রহ, চারটি গ্যান্ট্রি ক্রেন (কিউজিসি) ও ছয়টি রাবার টায়ার গ্যান্ট্রি (আরটিজি) সংগ্রহ করা হয়েছে। পাশাপাশি বন্দর কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করতে নতুন নতুন জনবল নিয়োগ করা হচ্ছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনো চলমান আছে। ফলে এ ব্যয়গুলো এড়িয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। তবে বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর বন্দরের রাজস্ব আয় বেড়েছে এবং ব্যয়ের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। বন্দরকে কিভাবে আরো উন্নত করা যায় তা নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে। আশা করছি বন্দরের রাজস্ব আয় ভবিষ্যতে আরো বাড়বে।

ট্যাগ :