মিলন কান্তি দে:
দেশের ব্যাংকগুলোতে বাড়ছে অলস টাকার পরিমাণ। ছয় মাস আগেও যেখানে তারল্য সংকট ছিল এখন সেখানে সংকট তো নেইই বরং কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বাড়ছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সঞ্চয়। অর্থনীতিবিদ ও উদ্যোক্তারা মনে করছেন, বিশ^জুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। এর প্রভাবে রপ্তানি কমে গেছে। অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ ব্যাংকিং খাতে সুদ হার কমছে না। এ কারণে নতুন করে বিনিয়োগে সাহস পাচ্ছেন না বিনিয়োগকারীরা, এ কারণে তারল্য বাড়তে পারে।
জানা গেছে, ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর চলতি হিসাবে জমা ছিল নগদ ১৯ হাজার কোটি টাকা অথচ ছয় মাসে জমার পরিমাণ ছিল সর্বোচ্চ ৯ হাজার কোটি টাকা। তারল্য কম থাকায় সে সময় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দেওয়া অঘোষিতভাবে বন্ধ রেখেছিল।
ব্যাংকে টাকা থাকার বিষয়টি উদ্যোক্তাদের না জানা, সুদ হার বেশি এবং অর্থনীতিতে মৃদুমন্দার কারণে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তার নতুন করে বিনিয়োগ করছে না বলে মনে করেন বাংলাদেশ নিট গার্মেন্ট প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) এর সাবেক সভাপতি সভাপতি মো. ফজলুল হক।
তিনি বলেন, উদ্যোক্তারা গত কয়েক বছর ধরে সুদ হার কমানোর দাবি জানালেও তা আমলে নেওয়া হয়নি, আগের মতোই ১২/১৩ শতাংশ সুদ হার, ক্ষেত্র বিশেষে আরও বেশি। বিশ্বজুড়ে ‘মৃদুমন্দা’ চলছে। এর ফলে রপ্তানি কমে গেছে। ফলে নতুন করে কেউ বিনিয়োগ করতে সাহস পাচ্ছে না।
ব্যাংকে নগদ টাকা থাকলেও তা খাতা-কলমে, বাস্তবে আছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পিআরআই-এর নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর।
তিনি বলেন, সরকার ব্যাংকিং খাত থেকে যে অর্থ নিচ্ছে সে টাকা যদি তারল্যের মধ্যে ধরে বিনিয়োগ যোগ্য অর্থ গণনা করা হয় তাহলে তা হবে শুভংকরের ফাঁকি। সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে টাকা নিচ্ছে না, আবার ব্যাংক থেকে বিভিন্ন ফরমেটে কমসুদে টাকা তুলছে, এর ঘানি টানতে হচ্ছে ব্যাংকগুলোকে। এ কারণে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সুদ হার কমাতে পারছে না, বিনিয়োগকারীরাও টাকা নিচ্ছে না ফলে ব্যাংকে বাড়ছে অলস টাকা।