এস.এম. মাঈন উদ্দীন রুবেলঃ
নগরবাসীর ফুসফুস চতুর্পাশের পাহাড়ি টিলায় শতবর্ষী গাছগাছালি বেষ্টিত প্রকৃতিক অরণ্যে ঘেরা নান্দনিক সি আর বি। এই ভূ-খণ্ডের প্রাকৃতিক বৃক্ষ হতে অক্সিজেন নেয় নগরবাসী। যার শ্বাস-প্রশ্বাসে বেঁচে থাকে নগরবাসী, ঐ ভূ-খণ্ডের বৃক্ষসমূহকে কেন নিধনের চেষ্টা করি? কি উদ্দেশ্যে? শতবর্ষী বৃক্ষগুলো নেয় সবার মন কেড়ে সেই বৃক্ষগুলো কর্তনের উদ্যোগ নিলে কলিজায় আগাত লাগে। সি আর বি নিয়ে আছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাঁথা অনেক ইতিহাস ও ঐতিহ্য, বীর শহীদের সমাধি ও বহু স্মৃতি।
আবহমানকাল হতে এই জায়গাতে বিভিন্ন সমাজিক,সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। তার মধ্যে বাঙ্গালি জাতির ঐতিহ্য পহেলা বৈশাখ শিরীষতলায় অনুষ্ঠিত হয়। চট্টলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ঘেরা কোলাহলমুক্ত এই স্থানটি নগরবাসীর জন্য খুবি জনপ্রিয়। সকাল-বিকাল হাটাহাটি করে বিনোদন প্রেমিরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। নগররীর মধ্যে বিনোদন ও হাঁটাহাঁটি করার উন্মুক্ত জায়গা দিনের পর দিন কমে যাচ্ছে। তাছাড়া যেখানে সেখানে গড়ে উঠা ছোট-বড় অট্টালিকায় বনভূমি ও গাছ-পালা উজাড় হচ্ছে। খোলামেলা ও গাছ-গাছালি ঘেরা তেমন কোন জায়গা বর্তমানে নগরীর মধ্যখানে নেই বললেই চলে।
প্রকৃতিক অক্সিজেন সংকটে পরছে জনজীবন। এমতাবস্থায় সিআরবি ধ্বংস করে হাসপাতাল নির্মাণে বন্দরনগরী একেবারেই বাসযোগ্যহীন হয়ে পরবে। মাত্র কিছু পুঁজিবাদী স্বার্থান্বেষী চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে সরকার যদি বৃহত্তর চট্টলার জনজীবনের ক্ষতির কথা বিবেচনা না করে একগুঁয়ে উদ্যোগ নিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল করার সিদ্ধান্ত নিলে চট্টলাবাসী তা কখনো মেনে নিতে পারবেনা।
চট্টলার জনগন তা রুখে দিতে বদ্ধপরিকর। আমার বিশ্বাস বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দল, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষায় কাজ করে, তার সংস্কার করে। তাই শহীদের সমাধি ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এমন জায়গাটিতে হাসপাতাল নির্মাণ করে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও শহীদের সমাধিকে অবমাননা করতে পারেনা। তাছাড়া এ স্থান জ্ঞানী-গুনী, কবি-সাহিত্যিক,লেখক, সাংবাদিক ও গবেষকদের মুক্ত চিন্তা-ভাবনা ও আড্ডার অন্যতম স্থান। এছাড়া বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামও এই স্থান থেকে শুরু হয়।
তাই সব ষড়যন্ত্র নিপাত যাক, অর্থের কাছে সি আর বি বিক্রি না যাক। সি আর বি বৃক্ষ অক্ষত থাক, প্রাকৃতিক অম্লজানে নগরবাসী বেঁচে থাক। প্রধানমন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করি চট্টলাবাসীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে হাসপাতাল যেন না করেন তিনি। একদফা! একদবি! প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যে অক্ষত থাকবে সি আর বি। সি আর বি তে হাসপাতাল নয় নগরীর অন্য কোথাও যেন হাসপাতাল নির্মিত হয়। জনবান্ধন সরকার, সিদ্ধান্ত নিবে সি আর বি তে হাসপাতাল না করার।