স্টাফ রিপোর্টার:
ঢাকা কলেজ শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সারা দেশের মতো চট্টগ্রামেও কলেজসহ সব সরকারি কলেজে বন্ধ রয়েছে পরীক্ষা ও শ্রেণি কার্যক্রম।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দিনব্যাপী কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষকরা। এই কর্মবিরতির প্রভাবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
এদিকে গত রোববার চট্টগ্রাম কলেজ ক্যাম্পাসে গণিত বিভাগের প্রভাষক তপেস কান্তি দেবের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে ৪০তম বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছি সংগঠনটি।
শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনার ক্ষোভ জানিয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষক বলেন, শিক্ষকের গায়ে হাত তোলার মতো কুকর্ম একজন ছাত্র করতে পারে না। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তারা যে-ই গোষ্ঠীর হোক না কেন; তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
শিক্ষকের ওপর হামলার বিষয়ে চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ মোজাহেদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমরা পর্যালোচনা করে দেখছি, আসলে ঘটনাটি কী। ছাত্রদের জিজ্ঞাসা করে যতটুকু জেনেছি, আমার কাছে মনে হয়েছে বিষয়টি একটু ভুলভাবে আসছে হয়ত। তারপরও যদি একজন টিচারের সম্মানহানি হয় আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নেব।
মঙ্গলবার সকাল থেকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের শিক্ষক কর্মকর্তারা কালো ব্যাজ ধারণ করে নিজ নিজ কলেজ প্রাঙ্গণে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। তারা কলেজে উপস্থিত থাকলেও কোনো ক্লাস বা প্রশাসনিক কাজ করছেন না।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) রাতে বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল ও সদস্য সচিব ড. মো. মাসুদ রানা খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই কর্মসূচির বিস্তারিত জানানো হয়।
সংগঠনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা কলেজে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের ওপর কিছু দুষ্কৃতিকারীর হামলা এবং টিচার্স লাউঞ্জে ভাঙচুরের ঘটনায় শিক্ষক সমাজ গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তারা জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তির দাবি জানান।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সব সদস্যকে এই কর্মসূচি সফল করতে সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
উল্লেখ্য, গত সোমবার সকালে ঢাকা কলেজ প্রাঙ্গণে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি আইন-২০২৫’ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের একটি পদযাত্রা চলাকালে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এক শিক্ষককে উদ্দেশ করে এক শিক্ষার্থী ‘দালাল’ মন্তব্য করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে শিক্ষকরা ওই শিক্ষার্থীকে কমনরুমে আটক রাখলে, তার সহপাঠীরা প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করে তাকে মুক্ত করে আনে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই শিক্ষকরা আজকের এই কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করছেন।