স্টাফ রিপোর্টার:
চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হবে আগামীকাল রোববার (৩০ জুন)। এর আগে ২৯ জুন থেকে ১১ আগস্ট (৪৩ দিন) পর্যন্ত সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। এইচএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব এবং নকলমুক্ত পরিবেশে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরীক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এদিকে আগে প্রকাশিত সময়সূচি অনুযায়ী, সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে প্রথমদিনে বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আর মাদরাসা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষায় কোরআন মাজিদ বিষয় এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসির (বিএম/বিএমটি) বাংলা-২ বিষয়ের পরীক্ষা প্রথম দিনে অনুষ্ঠিত হবে।
এ বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ড, কারিগরি বোর্ড ও মাদরাসা বোর্ডের এইচএসসি, আলিম, এইচএসসি (বিএম/বিএমটি), এইচএসসি (ভোকেশনাল), ডিপ্লোমা ইন কমার্স পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন। এরমধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ৫০ হাজার ২৮১ এবং ছাত্রী ৭ লাখ ৫০৯ জন। এবার মোট কেন্দ্র দুই হাজার ৭২৫টি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৯ হাজার ৪৬৩টি।
তবে বন্যা পরিস্থিতির কারণে সিলেট অঞ্চলের চারটি জেলার এইচএসসি, আলিম, এইচএসসি (বিএম/বিএমটি), এইচএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষা ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। আগামী ৯ জুলাই থেকে এসব জেলায় পূর্বঘোষিত সময়সূচি মেনে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
স্থগিত পরীক্ষাগুলোর সময়সূচি পরবর্তীতে প্রকাশ করবে স্ব স্ব বোর্ড। একই সঙ্গে ৮ জুলাইয়ের পর আর কোনো পরীক্ষা স্থগিত করা হবে না বলেও জানিয়েছে সিলেট মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড।
এদিকে, গত কয়েক বছরের মতো এবারও এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৪ সালের পুনর্বিনাস করা পাঠ্যসূচি (সিলেবাস) অনুযায়ী সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন।
এইচএসসি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রতি বছরের মতো এবারও কিছু নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষাবোর্ডগুলো। সেগুলো হলো,
-পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই পরীক্ষার কক্ষে প্রবেশ করতে হবে। কোনো কারণে কোনো পরীক্ষার্থীকে এর পরে প্রবেশ করতে দিলে তার নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, দেরি হওয়ার কারণ রেজিস্ট্রারে লিখে ওইদিনই সংশ্লিষ্ট শিক্ষাবোর্ডে প্রতিবেদন দিতে হবে।
-পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবেন। প্রোগ্রামিং ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে না।
-পরীক্ষাকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না এবং কোনো পরীক্ষার্থী পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন আনতে পারবেন না।
– পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে এসএমএসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রশ্নপত্রের সেট কোড জানিয়ে দেওয়া হবে। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিকস ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। শুধু ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন (ছবি তোলা যায় না এমন মোবাইল)।
– পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি (যেমন-পরীক্ষার্থী, কক্ষ প্রত্যবেক্ষক (ইনভিজিলেটর), মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্র পরিদর্শন টিম, বোর্ডের কেন্দ্র পরিদর্শন টিম, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের পরিদর্শন টিম, নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য) ছাড়া অন্য কেউই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না।
-বিশেষ সক্ষম (ডিফারেন্টলি অ্যাবল) পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কিছু ব্যবস্থা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরমধ্যে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রালপালসি জনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই, এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী স্ক্রাইব (শ্রুতি লেখক) সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। এ ধরনের পরীক্ষার্থীদের এবং শ্রবণ পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট বাড়ানো হয়েছে।
– প্রতিবন্ধী (অটিস্টিক, ডাউনসিন্ড্রম, সেরিব্রালপালসি) পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় বাড়ানোসহ শিক্ষক, অভিভাবক বা সাহায্যকারীর বিশেষ সহযোগিতায় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ রেখেছে সরকার।