স্টাফ রিপোর্টারঃ
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘ঢাকা শহরে দুই কোটি মানুষ বসবাস করে। তার মধ্যে দুইশ লোক নিয়ে বিএনপি ঢাকায় যেভাবে বিক্ষোভ করে, তাতেই বোঝা যায়, তারা আসলে কতটুকু আন্দোলন করতে পারবে।’
তিনি বলেন, ‘এ ঈদের পরে, আগামী ঈদের পরে’ আন্দোলনের এমন দিনক্ষণ বিএনপি আগেও দিয়েছে। এজন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে, বিএনপি আসলে আন্দোলন করতে পারবে কি না।
মন্ত্রী মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন। এ অনুষ্ঠান শেষে ‘ঈদের পরে বিএনপির আন্দোলনের ঘোষণা’ হতে পারে বলে বিএনপি নেতাদের দেওয়া বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের উত্তরে হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, সরকারের যদি ভুলত্রুটি থাকে, সেগুলো বিএনপি তুলে ধরুক। তাদের আন্দোলন শুধু তারেক রহমানের শাস্তি বাতিল আর খালেদা জিয়ার চিকিৎসার মধ্যে সীমাবদ্ধ। এটা থেকে তারা বেরিয়ে আসুক, এটাই কামনা করি। আশা করি, তারা জনগণের বিষয় নিয়ে কথা বলবে, সরকারের ভুলত্রুটি থাকলে সেগুলো তুলে ধরবে।’
নিউমার্কেটের ঘটনা নিয়ে বিএনপির বক্তব্য প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওই সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির স্থানীয় নেতারা যে ঘি ঢেলেছে, পুলিশের কাছে সেই তথ্য আছে। যে দুই দোকান কর্মচারীর মধ্যে বচসা, সেই দুই দোকানের মালিক বিএনপি নেতা। এ বচসা ঘটানোর পেছনে দুরভিসন্ধি আছে কি না, সেটি তো অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে। তবে নিউমার্কেটের ঘটনায় যারাই যুক্ত থাকুক না কেন, যে দলের বা যে মতেরই হোক, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
দৈনিক পত্রিকার প্রচার সংখ্যা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ইংরেজি পত্রিকাগুলোর প্রচার সংখ্যা হালনাগাদ করে বাস্তবতার কাছাকাছি নিয়ে আসা হয়েছে। বাংলা পত্রিকাগুলোর ক্ষেত্রেও আমরা সেটা খুব দ্রুত করে দেবো। অনেক পত্রিকা আছে, যেগুলো আসলে ঠিকভাবে প্রকাশিত হয় না, সেগুলোর বিপুল প্রচার সংখ্যা দেখানো হয়েছে। এসব অসঙ্গতি দূর করে আমরা এগুলো ঠিক করছি।’
‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, অষ্টম ওয়েজবোর্ড যারা বাস্তবায়ন করেনি, তাদের সরকারের কোনো ক্রোড়পত্র দেবো না। ভবিষ্যতে নবম ওয়েজবোর্ড যারা বাস্তবায়ন করবে না, সেক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে সেটি নিয়েও চিন্তা-ভাবনা চলছে’ উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী।
এর আগে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহে এ কল্যাণ ট্রাস্ট গঠিত হয়েছে। আজকে এ ট্রাস্ট সাংবাদিকদের একটি ভরসার জায়গা হিসেবে দাঁড়িয়েছে। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট অত্যন্ত সুচারু এবং স্বচ্ছভাবে পরিচালিত হচ্ছে। ট্রাস্ট পরিচালনার সঙ্গে সাংবাদিক নেতারা যুক্ত আছেন, যা উপকারভোগী নির্বাচনে সহায়ক হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ট্রাস্টের আওতায় অসচ্ছল সাংবাদিকদের ছেলেমেয়েদের শিক্ষাসহায়তা নীতিমালাও চূড়ান্ত হয়েছে।’
কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ বাদলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক দীপ আজাদ ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মো. মাহফুজুল হক, ডিইউজের সহ-সভাপতি মানিক লাল ঘোষ, কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য সেবিকা রাণী প্রমুখ।
এরপর তথ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এসময় বাসসের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পর্ষদের চেয়ারম্যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহেনুর মিয়া, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব এস এম মাহফুজুল হক, জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম-সচিব আবু হেনা মোস্তফা কামাল, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক হারুন আল রশিদ, আইসিটি বিভাগের মহাপরিচালক ড. মুহাম্মদ মেহেদী হাসান, একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল হক বাবু, দৈনিক সংবাদের সম্পাদক আলতামাশ কবীর, বাসসের নগর সম্পাদক মধুসূদন মণ্ডল।