স্টাফ রিপোর্টারঃ
জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব জিয়া উদ্দিন বাবলুর ছেলে দলের যুগ্ম মহাসচিব আশিক আহমেদকে শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় তার সৎ মামা দলের ভাইস চেয়ারম্যান আদেলুর রহমান এমপিকে শোকজ করেছে জাতীয় পার্টি।
বৃহম্পতিবার দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর স্বাক্ষরে আদেলকে শোকজটি করা হয়। এতে বলা হয়েছে, জাপার বনানী অফিসে আশিকের সঙ্গে এই অপ্রীতিকর ঘটনায় দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ হয়েছে। একারণে আদেলকে কেন দলের সকল পদ পদবি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে না তা তিনদিনের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।
সহায় সম্পত্তির বিরোধের জের ধরে গত সোমবার দুপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের বনানী অফিসে তারই উপস্থিতিতে পার্টির সাবেক মহাসচিব জিয়া উদ্দিন বাবলুর ছেলে দলের যুগ্ম মহাসচিব আশিক আহমেদকে রুমে ডেকে নিয়ে শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করে তারই সৎ মামা দলের ভাইস চেয়ারম্যান আদেলুর রহমান এমপি। পরে উপস্থিত নেতাকর্মীরা গিয়ে আশিককে উদ্ধার করেন। এসময় তার পরনে পাঞ্জাবি ছেড়া এবং শরীরে কিল-ঘুষির দাগ দেখা যায়। মহাসচিবের সই করা শোকজ লেটার ইতিমধ্যে আদেলের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
আদেলকে উদ্দেশ্য করে শোকজ লেটারে বলা হয়েছে, গত ১৯ মে বেলা ১.৩০ মিনিটে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে দোতলায় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব আশিক আহমেদ এর সাথে আপনি যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছেন তা দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী। এ কারণে আপনাকে কেন জাতীয় পার্টির সকল পদ পদবি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে না; তা আগামী তিন দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় দপ্তরে লিখিতভাবে জানানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের অফিসে তারই উপস্থিতিতে তার ভাগিনার হাতে দলের যুগ্ম মহাসচিব একইসাথে আত্মীয় লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় দলের সিনিয়র নেতারা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ নেতাকর্মীরাও।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের এক সিনিয়র নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কো চেয়ারম্যানরাসহ অনেক সিনিয়র নেতা রয়েছেন। এমপি আদেল একজন ভাইস চেয়ারম্যান মাত্র। কিন্তু সে চেয়ারম্যানের আত্মীয় পরিচয়ে বনানী অফিসে একটা রুম সব সময় দখল করে রাখেন। ওই রুমেই দলের যুগ্ম মহাসচিবকে ডেকে নিয়ে পার্টির চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে মারধর করা হয়েছে। একজন এমপি এভাবে কারও গায়ে হাত তুলতে পারে না, সে যেই হোক।
তার এই অপকর্মের দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হলে জাতীয় পার্টির ইতিহাসে খারাপ উদহরণ হয়ে থাকবে। দলের নেতারা বলেন, এধরনের অপকর্ম প্রশ্রয় দেওয়া হলে জাতীয় পার্টিতে শৃঙ্খলা বলতে কিছু থাকবে না। এজন্য এ ঘটনার উচিত বিচার করা দরকার। না হলে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু হয়ে প্রতিনিয়ত এমন ঘটনা ঘটতে থাকবে। দলের নেতাকর্মী আশিককে মারধরের ঘটনার জন্য এমপি আদেলের বিচার দাবি করেছেন।