স্টাফ রিপোর্টার:
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য ৩০ হাজার ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রস্তুত রাখছে নির্বাচন কমিশন। এসব যন্ত্র রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকছেন ৫ হাজার ২৮০ জন সেনা সদস্য।
এ বিষয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অণুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, প্রথমবারের মতো ?পুরো ঢাকা মহানগরে একসঙ্গে ইভিএমে ভোট করতে তারা পুরোপুরি প্রস্তুত। দুই সিটিতে ২ হাজার ৪০০র বেশি কেন্দ্র রয়েছে। আর ১৪ হাজার ৬০০শর মতো ভোটকক্ষ থাকছে। তাই সব মিলিয়ে আমরা রিজার্ভসহ ৩০ হাজার ইভিএম রাখার পরিকল্পনা করেছি, যাতে করে কোথাও ফেইল না করে। প্রতি কেন্দ্রে ব্যাকআপ হিসাবে একটি করে ইভিএম রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি জানান, দুই সিটিতে ইভিএমে ভোটের জন্য ১৯টি পয়েন্ট থেকে প্রশিক্ষণ, ডেমোনেস্ট্রেশন, মক ভোটিং ও ভোটকেন্দ্রে বিতরণের জন্য ইভিএম রাখা হবে। এর মধ্যে উত্তরের ইভিএম থাকবে আটটি পয়েন্টে, আর দক্ষিণে ১১টি পয়েন্টে।
ঢাকার দুই সিটিতে ৩০ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট হবে। এবারই প্রথম রাজধানীর অর্ধ কোটি ভোটারের সবাই মেয়র ও কাউন্সিলর নির্বাচনে ইভিএমে ভোট দেবেন। এর আগে ১৪ জানুয়ারির মধ্যে ইভিএমগুলো দুই সিটির নির্ধারিত পয়েন্টে পৌঁছে দেওয়া হবে।
এদিকে এসব ইভিএম ব্যবস্থাপনায় সশস্ত্র বাহিনীর ৫ হাজার ২৮০ জন সদস্য মোতায়েন থাকবেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী। গতকাল রোববার দুপুরে নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
শাহাদাত হোসেন বলেন, দুই সিটির ভোটের জন্য প্রয়োজনীয় ইভিএম ছাড়াও ৫০ শতাংশ বেশি ইভিএম প্রস্তুত থাকবে। ইভিএমে ভোটের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা থাকবে, স্বচ্ছতায় কোনো সমস্যা নেই। আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া আছে। যাতে করে প্রার্থীরা সন্তুষ্ট থাকতে পারেন, সে ব্যাপারে আমাদের পদক্ষেপ থাকবে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলের মধ্যে ইভিএম নিয়ে বিতর্ক থাকলে পরীক্ষামূলক ভোটে সার্বিক ব্যবস্থা দেখতে দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। ইভিএমে প্রতি কেন্দ্রের টেকনিক্যাল সাপোর্টের জন্য দু’জন করে সেনা সদস্য থাকবে। কোনো সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিক ভোট বন্ধ করে দেওয়া হবে। ইভিএমে ভোটে অস্বচ্ছতার কিছু নাই।
এবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে সাধারণ ওয়ার্ড সংখ্যা ৫৪টি, সংরক্ষিত ওয়ার্ড সংখ্যা ১৮টি। মোট ভোটার ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৬২১ জন। আর সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র ১ হাজার ৩৪৯টি, ভোটকক্ষ ৭ হাজার ৫১৬টি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৭৫টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ২৫টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড রয়েছে। এক হাজার ১২৪টি ভোটকেন্দ্রের ৫ হাজার ৯৯৮টি ভোটকক্ষে এবার ভোটগ্রহণ হবে। মোট ২৩ লাখ ৬৭ হাজার ৪৮৮ জন ভোটার এ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন।
বরাবরের মতো এবারও ইভিএম নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি। দলটির নেতাদের সন্দেহ, যন্ত্রে ভোটগ্রহণ হলে ‘ম্যানিপুলেট’ করার এবং ফলাফল ‘নিয়ন্ত্রণ’ করার সুযোগ থেকে যাবে। তবে নির্বাচন কমিশন বলছে ইভিএমে বরং কারচুপির সুযোগ কমবে।