মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামে নিজ দলের নেতাদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে নৌকার প্রার্থীরা


প্রকাশের সময় :২৮ নভেম্বর, ২০২৩ ৫:০০ : অপরাহ্ণ

স্টাফ রিপোর্টার:

চট্টগ্রামে নিজ দলের নেতাদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে নৌকার অধিকাংশ প্রার্থীরা। এরই মধ্যে চট্টগ্রামের অন্তত ছয়টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দলটির মনোনয়ন বঞ্চিত নেতারা।

তারা হলেন- চট্টগ্রাম-১৬ বাঁশখালী আসনের সিআইপি মুজিবুর রহমান। চট্টগ্রাম-১৫ সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের এম এ মোতালেব সিআইপি।চট্টগ্রাম-১৪ চন্দনাইশ আসনের সদ্য পদত্যাগ করা উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার চৌধুরী।

চট্টগ্রাম-১২ পটিয়া আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য হুইপ সামশুল হক।চট্টগ্রাম-১১ বন্দর-পতেঙ্গা আসনের আলতাফ হোসেন চৌধুরী। চট্টগ্রাম-১ মিরসরাই আসনের গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী।

এছাড়া চট্টগ্রামের আরও দুটি আসনে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীরা। এ দুটি আসনের মধ্যে চট্টগ্রাম-৪ হাটহাজারীতে রয়েছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি এ আসন থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়নও পেয়েছেন।

এছাড়া চট্টগ্রাম-২ ফটিকছড়ি আসনে রয়েছে তরিকত ফেডারেশনের সংসদ সদস্য নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী। তারা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের হয়ে এ দুই আসনে প্রার্থী হওয়ার আশা রাখছেন। সব মিলিয়ে চট্টগ্রামের ১৬ আসনের মধ্যে ৮টিতেই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীরা ।

প্রার্থী হওয়ার জন্য তারা গত রোববার নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়নপত্রও সংগ্রহ করেছেন। নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, রোববার পর্যন্ত চট্টগ্রামের ১৬ আসনের বিপরীতে প্রার্থী হতে ৫২ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

তাদের মধ্যে ১৫ জন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত। পাশাপাশি বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের ৮ জন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির ৩ জন এবং জাতীয় পার্টির ২ জন ফরম নিয়েছেন। এছাড়া বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বিএসএম, জাসদ, কল্যাণ পার্টি, বিএনএফ, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ফোরাম, তৃণমূল বিএনপি থেকে একজন করে ফরম নিয়েছেন। বাকিরা স্বতন্ত্র প্রার্থী।

রোববার বিকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জাতীয় সংসদের ২৯৮ আসনে নৌকার প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। এর মধ্যে চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়াদের মধ্যে পাঁচজনই নতুন মুখ।

এরা হলেন, চট্টগ্রাম-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এবং দলের মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের ছেলে মাহবুব রহমান রুহেল। এ আসনের জন্য মনোননয়পত্র সংগ্রহ করেন মোশাররফ। নৌকার টিকেটও পান রুহেল।

এ আসনে দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও মিরসরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী। এর আগেও তিনি দলের মনোনয়ন চেয়ে পাননি। এবারও মনোনয়ন ঘোষণার পর তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন।

গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ইনশাল্লাহ আমি নির্বাচন করব। মিরসরাইয়ের মানুষ ভীষণভাবে চায়- আমি ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি। নৌকা যেহেতু দেয়নি—আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করব। মিরসরাইয়ের মানুষ আমার সাথে আছে।

চট্টগ্রাম-১৬ বাঁশখালী আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। সংগঠন বিরোধী নানা কর্মকান্ডে তিনি বিতর্কিত। এ আসনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি শিল্পপতি মুজিবুর রহমান।

স্মার্ট গ্রুপ ও দৈনিক পূর্বদেশ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান বলেন, আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়ন ফরমও নিয়েছি।

চট্টগ্রাম-১৫ সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনে আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। এই আসনে দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মোতালেব।

সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মোতালেব প্রার্থী হওয়ার আশায় গত সপ্তাহে চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তিনি বনফুল ও কিষোয়ান গ্রুপের চেয়ারম্যান।

এম এ মোতালেব বলেন, মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাথে সভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আগ্রহীদের ভোটে অংশগ্রহণ করতে বলেছেন। দলের সাধারণ স¤পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ সিনিয়র নেতাদের কাছ থেকে আমি মৌখিক সম্মতি নিয়েছি। আমি নির্বাচন করব। নির্বাচন কমিশন থেকে ফরমও সংগ্রহ করেছি।

চট্টগ্রাম-১৪ চন্দনাইশ আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী। এই আসনে দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান ও সদ্য পদত্যাগ করা উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার চৌধুরী।

আবদুল জব্বার চৌধুরী ইতোমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে চাইলে দলীয় কোন বাধা নেই। দল থেকে এমন নির্দেশনা আছে। নেত্রী বলেছেন, জনপ্রিয়তা যাচাই করতে। যিনি জিতে আসবেন দল থেকে তাকেই গ্রহণ করে নেওয়া হবে।

চট্টগ্রাম-১১ বন্দর-পতেঙ্গা আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন এম এ লতিফ। ২০০৮ সাল থেকে তিনি এই আসনের সংসদ সদস্য। ২০০৮ সালে মনোনয়ন পাওয়ার আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না এম এ লতিফ। পরে ২০১৩ সালে নগর আওয়ামী লীগের কমিটির সদস্য পদ পান তিনি।

এবার ওই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন নগর আওয়ামী লীগের দুই সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু। আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু বলেন, কর্মীদের সাথে বসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিব। কর্মী ও ভোটররা চাইলে নির্বাচনে প্রার্থী হতেও পারি।

খোরশেদ আলম সুজন বলেন, আমি দল করি। তাই দলের মনোনয়নের বাইরে আমি নির্বাচন করব না। এটা নৈতিক বিষয়। তবে দলীয় মনোনয়ন যিনি পেয়েছেন, তিনি দলের কেউ না। আমি না করলেও হয়তো দলের অন্য কেউ প্রার্থী হবে। যিনি প্রার্থী হবেন তাকে দেখব।

চট্টগ্রাম-১২ পটিয়া আসনে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন পটিয়া উপজেলার সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। দলের প্রার্থী হতে তিনি পদ ছাড়েন গত সপ্তাহে। তিনি দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।

এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য হুইপ সামশুল হক চৌধুরী। তিনি টানা তিনবার এই আসনের সংসদ সদস্য। এবারও তিনি দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। সামশুল হক চৌধুরী বলেন, নির্বাচন অংশগ্রহণমুলক হতে হবে। যারা মনোনয়ন পাননি তাদেরও নির্বাচন করার সুযোগ আছে। আমি এলাকায় আমার শুভাকাক্সক্ষীদের সাথে আলোচনা করে নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছি।

চট্টগ্রাম-৪ সীতাকুন্ড আসনে এবার দলের মনোনয়ন পেয়েছেন এস এম আল মামুন। তিনি উত্তর জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি এবং সীতাকুন্ড উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান। সংসদ সদস্য পদে দলের মনোনয়ন পেতে ৩০ অক্টোবর উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন মামুন। এস এম আল মামুনের বাবা এ বি এম আবুল কাশেম মাস্টার সীতাকুন্ড আসন থেকে একাধিকার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন।

সীতাকুন্ড আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য দিদারুল আলম গত দুই নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হয়ে জয়লাভ করেন। তিনি উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। চট্টগ্রাম সিটির সাবেক মেয়র মনজুর আলম তার চাচা।

এ বিষয়ে জানতে তার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। তবে তার কয়েকজন অনুসারী বলেন, সীতাকুন্ড থেকে দু’বারের এমপি দিদারুল আলম। দল এবার তাকে মনোনয়ন দেয়নি। ফলে তিনি হয়তো নির্বাচন করবেন না। তবে দলের অন্য কাউকে দিয়ে নির্বাচন করাতে পারেন।

চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে এবার দলের মনোনয়ন পেয়েছেন খাদিজাতুল আনোয়ার সনি। বর্তমানে তিনি সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য। প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল আনোয়ারের মেয়ে সনি এবার নৌকা প্রতীকে প্রার্থী হচ্ছেন।

তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি বর্তমানে এ আসনের সংসদ সদস্য। তিনি ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তিনি বলেন, আশা করছি শেষ পর্যন্ত জোট থেকে আমিই এ আসনে প্রার্থী হব। এ আসন থেকে আমি নির্বাচন করব।

চট্টগ্রাম-৫ হাটহাজারী আসনে এবার মনোনয়ন পেয়েছেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। ২০০৮ সাল থেকে টানা তিনবার তিনি এই আসনে বিজয়ী হয়েছেন।

এই আসনে তিনি ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন। এছাড়া কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, যিনি যুক্তফ্রন্ট গড়ার ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনে আসার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনিও এ আসনে প্রার্থী হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

ট্যাগ :