লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
৭ বছর বয়সে বাবা মারা যায় মাহবুবা আফরোজের। বাবার মৃত্যুর ৩ বছর পর একমাত্র নাতনিকে নিজের কাছে রেখে মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেন নানা আব্দুল জলিল (৬০)। অতি দরিদ্র দিনমজুর আব্দুল জলিলের সামান্য আয়ে চলে ৪ সদস্যের সংসার। ছোটবেলা থেকে নানার বাড়ীতে অভাব-অনটন নিত্যসঙ্গী হলেও লেখা পড়া চালিয়ে যায় মাহবুবা আফরোজ। ৩ কিলোমিটার পথ পায়ে হেটে নিয়মিত স্কুলে যেত সে। টিউশনি করে লেখাপড়ার খরচ চালাতে হতো তাকে। এস.এস.সি পরীক্ষায় শতকষ্টকে পিছনে ফেলে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা আরেফা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে মাহবুবা আফরোজ।
মাহবুবা আফরোজের নানার বাড়ি লালমনিরহাট পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের নবীনগর গ্রামের আফতাব মোড় এলাকায়। তার বাবার নাম মো: মোফাজ্জল হোসেন। মা মোছা: মনোয়ারা বেগম।
মাহবুবা আফরোজ বলেন, ‘আমার কষ্ট সফল হয়েছে। আমি উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে বিসিএস ক্যাডার হয়ে শিক্ষার আলো ছঁড়াতে চাই।
মাহবুবা আফরোজের নানী মোছা: আনিছা বেগম (৫৫) বলেন, ‘সংসারে অভাবের কারণে আমার নাতনী প্রায় না খেয়ে স্কুলে যেত। তার বাবা নেই। সে প্রত্যেক ক্লাসে ভালো ফলাফল করেছে। আমরা গরিব মানুষ। আর সামর্থ্য নেই নাতনীকে কলেজে পড়ানোর। এখন কেউ যদি সদয় হন তাহলে নাতনী লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারবে।’
ছাত্রী মাহবুবা আফরোজের বিষয়ে বাউরা আরেফা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘মাহবুবা আফরোজ নম্র , ভদ্র ও মেধাবী একজন ছাত্রী । অভাব-অনটনের মধ্যেও সে পড়া- লেখায় ভালো করত। এস.এস.সিতে জিপিএ ৫ পাওয়ায় আমরা আনন্দিত। গরিব হওয়ায় আমাদের স্কুলে তাঁর লেখাপড়ার ব্যবস্থা বিনামূল্যে করা হয়। যদি দেশের কোন সহৃদয়বান ব্যক্তি তাঁর পড়া লেখায় সহযোগিতা করে তাহলে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে সে ভবিষ্যতে ভাল কিছু করবে।’