নিউজ-ডেস্ক:
শাহরুখ খানকে সবাই একজন বড় অ’ভিনেতা হিসেবে চেনেন। কিন্তু শাহরুখ খানকে কি চেনেন যিনি অল্প অল্প করে ক্ষুদ্র ও নগন্য একজন মানুষ থেকে আজকের কিং খান হয়ে উঠেছেন? শাহরুখ খান শৈশবে বাবা-মায়ের সাথে দিল্লির একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
স্কুলে শাহরুখ পড়াশোনায় যেমন দুর্দান্ত ছিলেন, তেমনি উজ্জ্বল ছিলেন হকি ও ফুটবলে। এই দুই খেলায় শাহরুখ ছিলেন অনবদ্য। হয়তো সেই ছাপটাই পাওয়া গেছে ‘চাক দে ইন্ডিয়ায়।’
কলেজ জীবনেই শাহরুখের মাথায় অ’ভিনয়ের ভুত চেপে। এমন জো’রালো ভাবেই চাপে যে মাস্টার্সের মাঝপথেই তিনি ডিগ্রি ছেড়ে থিয়েটারে নামেন। কিন্তু যার ভাগ্যের লিখন খা’রাপ তার সবদিক থেকেই যেন ‘খারাবি’ আসতে থাকে।
সেই সময় তার বাবা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মা’-রা যান। তার কিছুদিন পরে মা-ও পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নেন। অভাগা যেদিকে চায় সাগর শুকায়ে যায়।
শাহরুখ খান দারুণ অর্থ সংকটে পড়েন। যার ফলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপনের কাজ করেন। যেখানে তিনি পেতেন মাত্র ৫০ রুপি। শাহরুখ বলেন, ‘ সিনেমায় অ’ভিনয় করার লক্ষ্য নিয়ে যখন আমি মুম্বাইয়ে আসি তখন আমা’র থাকার জায়গা নেই, খাবার নেই কোনো টাকাপয়সা নেই।’
এসময় তিনি টিভি সিরিয়ালের ছোট ছোট চরিত্রে কাজ করা শুরু করেন। শাহরুখের নিকট তখন এটাই অনেক।
শাহরুখ ‘কাভি হা, কাভি না’ নামের একটি সিনেমায় প্রথমবারের মতো কাজ করেন এবং সেখান থেকে ২৫ হাজার রুপি পান। নিজের ছবি মুক্তির দিন নিজেই ছবির টিকেট ক্রয় করেন।
সে সময়ও তিনি মুম্বাইয়ের বাসস্ট্যান্ড ও সমুদ্র সৈকতের ধারে ঘুমাতেন।কিন্তু ১৯৯৩ সালটা শাহরুখের শুধু ক্যারিয়ারই ঘুরিয়ে দেয় না, বলতে গেলে পুরো লাইফটাই পালটে দেয়। ৫ বছরের সংগ্রামী জীবনের পর মুক্তি পায় ছবি ‘দিওয়ানা।’
এই ছবিতে দিব্যা ভারতীর বিপরীতে ঋষি কাপুরের সাথে প্যারালাল চরিত্রে অ’ভিনয় করেন শাহরুখ। ছবি শুধু শাহরুখের কারণেই ‘সুপার ডুপার বামপার’ হিট হয়ে যায়। এই ছবির প্রতিটি গান শুধু ভারত নয় গোটা উপমহাদেশ জুড়ে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে যায়। ১৯৯৩ সালের পরেও দীর্ঘ সময় জুড়ে ছিল ‘দিওয়ানা’ উন্মাদনা।
এই ছবির মাধ্যমেই তিনি সেরা অ’ভিষেকের পুরস্কার জিতে নেন। শাহরুখ বলেন, আমি যতটা না সৃজনশীল অ’ভিনয়ের জন্য ছবিতে সাইন করেছি তারচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল আমা’র অভাব ঘোচানো। এরপরের ঘটনা সবারই জানা। আজ শাহরুখ খান শুধু বলিউডের কিং খানই নন, তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় সবচেয়ে ধনী অ’ভিনেতা।