এম.এইচ মুরাদ:
ইংরেজি বর্ষবিদায় ও নববর্ষ বরণ থার্টি ফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর কক্সবাজারে প্রচুর পর্যটক ভ্রমণে আসলেও এ বছর আশানুরূপ পর্যটক আসেননি। এবার ২০২৩ সালকে বিদায় দিয়ে ২০২৪ সালকে স্বাগত জানাতে বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের উন্মুক্ত স্থানে ছিলো না কোনো আয়োজনও। নববর্ষের প্রথম দিনে সমুদ্র সৈকতে ছিল না কোনো ভিড়। আশানুরূপ পর্যটক না আশায় প্রায় ৫০ শতাংশ হোটেল কক্ষ খালি থেকেছে বলে জানিয়েছেন হোটেল মালিক কতৃপক্ষ।
সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চ পড়েছিলো নীরব নিথর। সৈকতের অন্য পয়েন্টে বা হোটেল মোটেলেও দেখা যায়নি তেমন আউটডোর-ইনডোর আয়োজন। পুরো সৈকতজুড়ে দেখা গেছে মাত্র কয়েক হাজার পর্যটক। তারা শুধুমাত্র আতশবাজি ফোটানো ও ফানুস উড়ানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো। এমনই নিষ্প্রাণভাবে বিদায় জানানো হল এবার বছরের শেষ সূর্যকে।
করোনাকালীন সময় ছাড়া গত দুই দশকে এবারের থার্টি ফার্স্টে কক্সবাজারে সবচেয়ে কম পর্যটক এসেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ইংরেজি পুরোনো বছরকে বিদায় জানাতে এবং নতুন বছরকে বরণ করতে প্রতি বছর ৩১ ডিসেম্বরের কয়েকদিন আগে থেকেই দেশের প্রধান অবকাশযাপন কেন্দ্র কক্সবাজারে উপচে পড়তো লাখো পর্যটকের পদচারনায়।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে আতঙ্কজনক পরিস্থিতি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি কার্যক্রম এবং কক্সবাজারে আউটডোর-ইনডোর কোনো ধরনের সাংস্কৃতিক আয়োজন না থাকায় এবার পর্যটকদের সাড়া নেই বলে মনে করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। হোটেল মালিকরা বলছেন, প্রতি বছর দুই ঈদ এবং থার্টি ফার্স্ট এর ছুটিতে দেশের প্রধান অবকাশযাপন কেন্দ্র কক্সবাজারে সর্বোচ্চ সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটে। এ সময় হোটেল-মোটেলে শতভাগ রুম বুকিং থাকে। কক্ষ না পেয়ে অনেকেই রাত কাটান খোলা আকাশের নিচে। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। থার্টি ফার্স্টের ছুটিতে পর্যটকদের সাড়া ছিলো না কক্সবাজারে।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ জানান, এবার আশানুরুপ পর্যটক আসেননি। কক্সবাজারে থার্টি ফাস্ট নাইটের কোনো আয়োজনও ছিলো না। যেসব পর্যটক কক্সবাজার এসেছে তাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেষ্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি মো: আবুল কাশেম সিকদার জানান, নতুন বছরের প্রথম দিনে সকল পর্যটকদের হোটেলে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়েছে। রুম বুকিং সহ খাবারের মূল্য যাতে নিয়ন্ত্রিত থাকে এ জন্য সকল ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছে। এবারও কক্সবাজারে আশানুরুপ পর্যটকের আগমন হয়নি। ৫০ শতাংশ হোটেল কক্ষ খালি রয়েছে।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি আবদুল কাইয়ূম চৌধুরী বলেন, এবারের থার্টি ফার্স্টের ছুটিতে কক্সবাজারের হোটেলগুলোতে তেমন বুকিং নেই। যা আছে তাও এক জানুয়ারি থেকে খালি হয়ে যাচ্ছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এ পর্যন্ত কোথাও কোন অপ্রিতিকর কিছু ঘটেনি। তবে এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনী পরিস্থিতি ও বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে প্রতিবছরের ন্যায় পর্যটক সমাগম খুবই কম হয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় পযর্টন নগরী কক্সবাজারে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, কক্সবাজারে পর্যটকদের নির্বিঘ্নে ভ্রমণের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। এজন্য পর্যটন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশসহ একাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত রয়েছেন। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।