এম.এইচ মুরাদ:
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমাদের স্বাধীকার আদায়ের আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রামে অনেক সিনেমা ভুমিকা রেখেছে। মানুষকে নির্মল আনন্দ দেয়ার পাশাপাশি একই সাথে দেশ গঠন করার ক্ষেত্রেও সিনেমা ভুমিকা রাখে।
তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন হবার পর আমাদের অনেক সিনেমা দেশ গড়ার ক্ষেত্রে ভুমিকা রেখেছে। ওরা এগারজন, আবার তোরা মানুষ হ, এই যে সিনেমাগুলো আমাদের দেশ গঠন করার কাজে ভুমিকা রেখেছে। সিনেমা শিল্প মানুষকে আনন্দ দেওয়া, নতুন এবং তরুণ প্রজন্মকে বিপদগামী হওয়া থেকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে ব্যাপক ভুমিকা রাখে।
শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার বালি আর্কেডে স্টার সিনেপ্লেক্সের শাখা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও বালি আর্কেডের পরিচালক সোলায়মান আলম শেঠ, প্রধান নির্বাহী আফতাব আলম শেঠ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্টার সিনেপ্লেক্সের চেয়ারম্যান মাহবুব রহমান রুহেল।
সভাপতির বক্তব্যে সাবেকমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেন, ‘আমাদের শৈশবে চট্টগ্রামে সিনেমা হল ছিল। তখন আমার অভ্যেস ছিল সিনেমা দেখার। বাংলাদেশের সিনেমাকে এগিয়ে নিতে হলে আন্তর্জাতিক সিনেমাগুলো এখানে আসা উচিত। হাওয়া ছবিটা আমি দেশের বাইরে দেখেছি। হাওয়া ওখানে গেলে ওখানকার ছবি কেন এখানে আসতে পারবে না। হিন্দি ছবিও আসতে পারে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশে বছরে ১০-১২টি হিন্দি সিনেমা আমদানি হলে তাতে সরকারের দিক থেকে কোনো আপত্তি নেই। শিল্পীরা যদি একমত হয়, আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে আপত্তি নেই। বাংলা সিনেমা অনেক চড়াই-উৎরায় পেরিয়েছে। আমরা অনেক কঠিন সময় অতিক্রম করেছি। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের সিনেমা শিল্প অনেকদুর এগিয়েছে। আমি অবাক হয়েছি, গত অক্টোবর মাসে কলকাতায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব হয়েছে। সেখানে ‘হাওয়া’ মুভি দেখতে টিকেটের জন্য মানুষ এককিলোমিটার লাইন ধরেছে। দুপুর দুইটায় শো শুরু হবে, সকাল ৯টা থেকে লাইন ধরেছে। এমন দৃশ্য আমিও ভাবি নাই।
তিনি বলেন, আমি যখন স্কুলে পড়ি তখন চট্টগ্রাম শহরে ত্রিশটির মতো সিসেমা হল ছিল। এগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। আশার কথা হচ্ছে গত এক বছরে করোনা মহামারির মধ্যেও আমাদের বন্ধ হয়ে যাওয়া দুই’শ সিনেমা হল নতুনভাবে চালু হয়েছে। স্টার সিনেপ্লেক্সসহ আরো অনেকগুলো সিনেপ্লেক্স নতুনভাবে চালু হচ্ছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার সিনেমা শিল্পের উন্নয়নের জন্য, সিনেমা হল নির্মাণের জন্য, বন্ধ হয়ে যাওয়া পুরনো হল নতুন ভাবে চালু করার উদ্দেশ্যে এক হাজার কোটি টাকার স্বল্প সুদে ঋণ তহবিল চালু করেছে। সিনেমার অনুদানের অর্থ বাড়িয়েছে। আগে যেখানে ৪০ লাখ টাকা সর্বোচ্চ দেয়া হতো সেটি আমরা ৭৫ লক্ষ টাকায় উন্নিত করেছি। এবং সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। আমাদের অনেক সিনেমা বিশ্বাঙ্গনে প্রশংসিত হয়েছে। বিভিন্ন নামকরা পুরস্কার লাভ করেছে আমাদের সিনেমা।
এ সময় জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও বালি আর্কেডের পরিচালক সোলায়মান আলম শেঠ বলেন, চট্টগ্রাম হচ্ছে দেশের বানিজ্যিক রাজধানী কিন্তু চট্টগ্রামে কোন উন্নত মানের সিনেমা হল বা সিনেপ্লেক্স ছিলো না, আমরা সেটিকে উপলব্ধি করেই এই স্টার সিনেপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ শুরু করি। আজকে সেটি উদ্বোধন করতে পেরে আমাদের মতো চট্টগ্রামবাসীও খুব উল্লেসিত ও আনন্দিত। সিনেমা মানুষকে নির্মল আনন্দ দেয়। আমি মনে করি আমাদের নতুন প্রজন্মকে সিনেমা জীবন গড়তে শেখাবে। নতুন প্রজন্মকে প্রত্যয়ি হবার শিক্ষা দিবে। সিনেমা এমন একটি মাধ্যম যেখানে মানুষ কাঁদে, হাসে এবং ভাবে, আবার স্বপ্নও দেখে। স্টার সিনেপ্লেক্সে প্রদর্শিত মানসম্মত ভালো সিনেমাগুলো সবাইকে আনন্দ দেওয়ার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষা দেবে বলে আমি মনে করছি। আমি সবাইকে পরিবার পরিজন ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে সিনেপ্লেক্সে এসে সিনেমা দেখার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।