মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, রোববার, ৫ মে ২০২৪ ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খাগড়াছড়ি ভ্রমণে গেলে যা যা দেখতে পারেন


প্রকাশের সময় :২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ৫:৫২ : অপরাহ্ণ

মোরশেদুল হক আকবরী:

পাহাড়, ঝরনা, ঝিরি ও কৃত্রিম লেক সমৃদ্ধ বৈচিত্রময় খাগড়াছড়ি হতে পারে আপনার ভ্রমণের উপযুক্ত স্থান। দিনের পর দিন পাহাড়ের রানি খ্যাত খাগড়াছড়িতে ভিড় বাড়ছে পর্যটকদের। শীতের শুরু থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পর্যটকদের এমন উপচেপড়া ভিড় থাকবে বলে জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। সীমিত সুযোগ-সুবিধার মধ্যেও খাগড়াছড়িতে প্রচুর পর্যটকের সমাগম হবে এমনটাই আশা করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে খাগড়াছড়ির বিকাশমান পর্যটনের উন্নয়নে সরকারের নানামুখী উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘খাগড়াছড়ি আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্র থেকে জেলা পরিষদ পার্ক পর্যন্ত ক্যাবল কারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ক্যাবল কার স্থাপন করা হলে খাগড়াছড়ির পর্যটন শিল্পে নতুন মাত্রা পাবে।’

খাগড়াছড়ির আলুটিলার রহস্যময় সুড়ঙ্গ, জেলা পরিষদ পার্ক বা ঝুলন্ত ব্রিজ, তারেং, রিছাং ঝরনাসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান দেখতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও পর্যটকে মুখরিত হবে খাগড়াছড়ির পর্যটন স্পটগুলো। শীত মৌসুমে বাড়তি ব্যবসার আশা করছে হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা। পর্যটকদের নিরাপত্তায় প্রতিটি পর্যটনকেন্দ্রে নিয়োজিত থাকবে ট্যুরিস্ট পুলিশ। এছাড়া সাজেকগামী পর্যটকদের ভ্রমণের সহায়তা করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

পর্যটকদের বিনোদনের কথা চিন্তা করে খাগড়াছড়ির রহস্যময় সুরঙ্গ কেন্দ্রিক আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্রের সংস্কার করেছে জেলা প্রশাসন। এমনটি জানিয়ে তত্ত্বাবধায়ক বাবলু ত্রিপুরা বলেন, ‘শীতকাল মানেই পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়। পর্যটনকেন্দ্রের কয়েকটি স্থানে নতুন করে ভিউপয়েন্ট তৈরি করা হয়েছে। শৌচাগার সংস্কার করা হয়েছে।’

খাগড়াছড়ি পর্যটন মোটেলের ব্যবস্থাপক এ কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ মৌসুমে খাগড়াছড়িতে প্রচুর পর্যটক এসেছে। পুরো শীত মৌসুমজুড়ে পর্যটকদের সমাগম হবে। আগত পর্যটকদের সেবা দিচ্ছে খাগড়াছড়ি পর্যটন মোটেল।’

অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও খাগড়াছড়িতে বিপুল পর্যটকের সমাগম ঘটবে এমনটা প্রত্যাশা করে আবাসিক হোটেল গাইরিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অন্তত বিকাশ ত্রিপুরা জানান, পাহাড়, অরণ্য ও ঝরনা-ঝিরি দেখতে পাহাড়ে ছুটে আসে ভ্রমণপিপাসু মানুষ। সারা বছর পর্যটক এলেও শীতে সেই সংখ্যাটা বাড়তে থাকে। পর্যটকদের বিস্ময় সাজেকের প্রবেশদ্বার হওয়ায় পর্যটন শিল্পে খাগড়াছড়ির আলাদা একটি অবস্থান তৈরি হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।

খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়কের পাশে অবস্থান ‘আলুটিলার রহস্যময় সুরঙ্গ’। পাহাড়ের চূড়া থেকে ২৬৬টি সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামলেই সেই স্বপ্নীল সুরঙ্গমুখ। প্রায় ২৮২ ফুট দৈর্ঘের আলুটিলা সুরঙ্গ যেন বিধাতার অনন্য সৃষ্টি। অনবদ্য রহস্যের উৎস প্রাকৃতিক এ সুরঙ্গের ভেতরটা দেখলে অবিশ্বাস্য বিস্ময়ে হতবাক হতে হবে যে কাউকেই। এ গুহায় প্রবেশ করে অন্য প্রান্ত দিয়ে বের হয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতায় আপনিও হতে পারবেন দুঃসাহসিক এক অভিযাত্রী। আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্র ও রহস্যময় গুহা থেকে কিছুটা দূরেই রয়েছে প্রকৃতির আরেক সৃষ্টি ‘রিছাং ঝরনা’। বৃষ্টিহীন শীতের সকালে পাহাড়ের চূড়া থেকে স্বচ্ছ পানির অব্যাহত ঝরনাধারা নিঃসন্দেহে আপনাকে আন্দোলিত করবে। একজন ভ্রমণপিপাসু হিসেবে আপনিও হতে পারেন ‘রিছাং ঝরনা’র সাক্ষী।

খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দক্ষিণে খাগড়াছড়ি-মহালছড়ি সড়কের মাইসছড়ি এলাকার নুনছড়ি মৌজায় সমতল ভূমি হতে প্রায় সাতশ ফুট উপরে পাহাড়ের চূড়ায় ‘দেবতা পুকুর’ রূপকথার দেবতার আশীর্বাদের মতোই সলিল বারির স্রোতহীন সঞ্চার। যা আপনাকে মুহূর্তের মধ্যেই বিমোহিত করবে। খাগড়াছড়ি জেলা শহরের খুব কাছাকাছি জিরো মাইল সংলগ্ন ২২ একর ভূমির উপর গড়ে ওঠা ‘জেলা পরিষদ পার্ক’। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের মালিকানাধীন এ পার্কের বিশেষ আকর্ষণ রাঙ্গামাটির ঝুলন্ত সেতুর আদলে তৈরি ‘ঝুলন্ত সেতু’।

খাগড়াছড়ির চেঙ্গী নদীর কোলে জেলা আনসার ও ভিডিপি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উঁচু পাহাড়ে অবস্থিত ‘হেরিটেজ পার্ক’। পর্যটন পিপাসুদের কাছে ‘হেরিটেজ পার্ক’ হয়ে উঠেছে নতুন ঠিকানা। পর্যটন মোটেলের বিপরীতে সৌন্দর্য মণ্ডিত ও নান্দনিক হেরিটেজ পার্কটি পাহাড় ঘেরা প্রকৃতিতে বসে চাঁদনি রাতের দৃশ্যপটে দেখার সুযোগ করে দেবে।

খাগড়াছড়ি জেলার প্রবেশমুখে খাগড়াছড়ি-ফেনী আঞ্চলিক মহাসড়কের দু’ধারে ঠাঁই করে নিয়েছে ‘রামগড় চা বাগান’। খাগড়াছড়িতে আসা ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের স্বাগত জানাতে এটি সদা প্রস্তুত। ‘রামগড় চা বাগান’ আপনার ভ্রমণের সার্থকতা এনে দেবে। খাগড়াছড়ির প্রবেশদ্বার রামগড় উপজেলা সদরে ইংরেজি ডব্লিউয়ের অনুরূপ প্রায় ২৫০ মিটার লম্বা নান্দনিক হ্রদ ‘রামগড় লেক’। রামগড় লেকের উভয় পাশে যোগাযোগের জন্য মাঝখানে রয়েছে সুদৃশ্য ঝুলন্ত সেতু। রামগড় লেক ঘেঁষে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধে স্মৃতি ভাস্কর্য। এ লেকটি হতে পারে আপনার ভ্রমণের জন্য এক অনন্য স্থান।

খাগড়াছড়ির সীমান্ত শহর রামগড়। তৎকালীন বিডিআরের (বর্তমান বিজিবি) জন্মস্থান রামগড়। এখানে রয়েছে স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত অনেক স্থান ও স্থাপনা। রয়েছে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বিভাজনকারী ফেনী নদী। যা আপনাকে ইতিহাস জানারও সুযোগ করে দেবে।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা সদরে বিনোদনমূলক পার্ক ‘জলপাহাড়’ হতে পারে আপনার বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম। নাগরদোলা ও ময়ূরপঙ্খী নৌকা হয়ে উঠবে আপনার বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম। জলপাহাড়ের সুবিশাল লেক আপনাকে বাড়তি আনন্দ দিবে নিঃসন্দেহে। নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে এত বড় সুযোগ শহরের পাশে আর কোথাও নেই।

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলা থেকে সোজা উত্তরে ভারতের সীমান্তবর্তী ‘ভগবান টিলা’। জেলা সদর থেকে উত্তর-পশ্চিমে এর কৌণিক দূরত্ব আনুমানিক ৮৫ কিলোমিটার। সবুজের বুকে এ টিলা যেন বিধাতার নিজ হাতে গড়া পর্বত রূপসী। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১ হাজার ৬শ ফুট উঁচুতে অবস্থিত এ টিলায় রয়েছে বিজিবির সুউচ্চ পর্যবেক্ষণ টাওয়ার।

ট্যাগ :