মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত তীরে গড়ে ওঠা সকল স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ হাইকোর্টের !! বহু তারকা হোটেল উচ্ছেদ আতংকে


প্রকাশের সময় :২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১০:৫৬ : অপরাহ্ণ

এম.এইচ মুরাদ:

১৯৯৯ সালে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণার পর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত তীরে গড়ে ওঠা সকল স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ ৫টি রিটের চূড়ান্ত রিভিউয়ের রায়ে এ নির্দেশ দেয়।

সেই সাথে ভবিষ্যতে ইসিএ এলাকায় নতুন করে কোনো প্লট বরাদ্দ ও স্থাপনা নির্মাণ না করতেও নির্দেশ দেয়া হয়।

উচ্চ আদালতের এ রায়ের ফলে গত দুই দশকে সমুদ্র তীরে গড়া ওঠা ফাইভ স্টার ও থ্রি স্টার মানের বহু হোটেলসহ সরকারি-বেসরকারি শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে বলে মনে করছেন আইনজ্ঞরা।

তবে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণার আগে গড়ে ওঠা স্থাপনার ক্ষেত্রে এ রায় কার্যকর হবে না বলে জানান জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট আজম মঈনউদ্দিন।

তিনি বলেন, ‘ইসিএ ঘোষণার আগে গড়ে ওঠা স্থাপনাগুলো উচ্ছেদের আওতায় না পড়লেও সেগুলো নতুন করে কোনো স্থাপনা গড়ে তুলতে পারবে না, আগের অবস্থায়ই রাখতে হবে।’

এ বিষয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আশরাফুল আবসার বলেন, ‘মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা আমরা এখনো হাতে পাইনি। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা আমাদের কাছে পৌঁছালেই সেই নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’

তিনি বলেন, ‘ঢালাওভাবে কক্সবাজার থেকে ইনানী বা টেকনাফ এভাবে বলা যাবে না কারণ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্ট থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিশেষ বিশেষ কিছু পয়েন্টকে (নির্দিষ্ট মৌজা) প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে।’

বাতিলকৃত প্লটের মধ্যে কোন কোন হোটেল পড়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আরো বলেন, ‘উচ্চ আদালতের নির্দেশনা হাতে না পাওয়া পর্যন্ত নাম ধরে কিছু বলা যাচ্ছে না। আদালত যেভাবে নির্দেশনা দেবেন, সেভাবেই আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।‘

১৯৯৫ সালের পরিবেশ আইনে ১৯৯৯ সালে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের প্রায় ১৫ কিলোমিটারব্যাপী সৈকতসহ টেকনাফের কিছু অংশ এবং সেন্টমার্টিন ও সোনাদিয়া দ্বীপকে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করা হয় এবং এসব এলাকায় স্থাপনা নির্মাণেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয় কিন্তু এরপরও সমুদ্র সৈকত এলাকায় সরকারি প্লট বরাদ্দ নিয়ে হোটেল-মোটেল-রেস্টহাউসসহ সরকারি-বেসরকারি কয়েকশত স্থাপনা গড়ে তোলা হয়। সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ে মঙ্গলবার এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করতে বলা হয়েছে।

এ রায়ের ফলে তারকা হোটেল কক্সটুডে, লংবীচ, ওশান প্যারাডাইজ, দ্য প্রিন্সেসসহ ডজনখানেক তারকা হোটেল এবং ট্যুরিস্ট পুলিশ কার্যালয়, জেলা পরিষদের রেস্টহাউজসহ সরকারি বহু স্থাপনা উচ্ছেদের শিকার হতে পারে বলে আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে গড়ে ওঠায় হোটেল সায়মনসহ কলাতলী এলাকার হোটেলগুলো এ রায়ের আওতায় পড়বে কি না তা নিশ্চিত নন আইনজ্ঞরা।

তবে এ রায়ের ফলে তারকা হোটেল সী-গার্ল, সী-প্যালেস, প্রাসাদ প্যারাডাইজ, তরঙ্গ রেস্তোরাঁসহ ইসিএ ঘোষণার আগে গড়ে ওঠা হোটেলগুলো উচ্ছেদের আওতায় পড়বে না বলে মনে করেন তারা।

রায়ের ফলে উচ্ছেদের শিকার হওয়ার আশংকাকারী হোটেল দ্য কক্সটুডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল কইয়ূম চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এ রায় সরকারকে বিব্রত করবে। পর্যটন ব্যবসায়ীদের মাঝে অস্থিরতা তৈরি করবে। তবে ২০১১ সালে উচ্চ আদালতের একটি নির্দেশনার আলোকে পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন যে সমুদ্র সীমানা বা ইসিএ এলাকার মানচিত্র তৈরি করে উচ্চ আদালতে পাঠিয়েছিল, সেখানে কেবল বীচ রোডের পশ্চিম অংশের স্থাপনাগুলোর কথাই বলা হয়েছে। সেই রাস্তা থেকে কয়েকশত ফুট দূরেই অবস্থান হোটেল কক্সটুডেসহ বেশিরভাগ তারকা হোটেলের।’

কক্সবাজার শহরের বাসিন্দা ও হোটেল মিডিয়ার মালিক শাহ আলম চৌধুরী জানান, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকায় প্রথম পাকিস্তান আমলে সরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠে লাবণী, প্রবাল ও উপল নামের তিনটি মোটেল। পরে এরশাদ আমলে গড়ে তোলা হয় মোটেল শৈবাল। একই সময়ে লাবণীর পাশে আরো কয়েকটি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়।

এরপর বিভিন্ন সরকারের আমলে সরকারি জমি ইজারা নিয়ে কিংবা ইজারাপ্রাপ্তদের কাছ থেকে জমি কিনে সেখানে হোটেল গড়ে তুলেছেন ব্যবসায়ীরা।

এছাড়া কলাতলী এলাকায় পাহাড়ের পাদদদেশে ‘স্বাস্থ্য নিবাস’ তৈরির উদ্দেশ্যে আশির দশকের শুরুর দিক থেকে আবাসিক প্লট বরাদ্দ দেয়া শুরু হয়। সেখানে এখন কয়েকশত হোটেল।

পরবর্তীতে এর পশ্চিমপাশে সাগরপাড়ে গড়ে তোলা হয় হোটেল-মোটেল জোন। বর্তমানে এই এলাকাটিই দেশের পর্যটনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

কক্সবাজারের পরিবেশবাদী সংগঠন ইয়েস কক্সবাজার-এর সভাপতি ইব্রাহিম খলিল মামুন আদালতের রায়টি যুগান্তকারী তবে বাস্তবায়ন কঠিন বলে মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘সমুদ্র সৈকতে ইসিএ ঘোষণার আগে-পরে গড়ে ওঠা সকল স্থাপনা উচ্ছেদের প্রয়োজন।‘

ট্যাগ :