স্টাফ রিপোর্টারঃ
ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে অসাধু ব্যবসায়ীরা কৌশলে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ার কারণে অস্বস্তিতে পড়েছেন সাধারণ ভোক্তারা। তাই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বাণিজ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।
শনিবার (৫ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাণিজ্যমন্ত্রীর নিকট এ আহবান জানান তিনি।
খোরশেদ আলম সুজন বলেন, আমাদের দেশে এক প্রকার নিয়ম হয়ে গেছে যে ঈদ, পূজা কিংবা যে কোন উৎসবে কোন কারণ ছাড়াই অহেতুক ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়াতে হবে। এর ফলে মুষ্টিমেয় কতিপয় ব্যবসায়ীর আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে গেলেও অস্বস্তিতে পড়েন বিশাল আকারের ভোক্তা সাধারণ। বর্তমানে আসন্ন ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে কৌশলে দাম বাড়াতে শুরু করেছে এসব ব্যবসায়ীরা।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সয়াবিন, পেঁয়াজ, রসুন, ডাল ও চিনির দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। বাকি অবশিষ্ট পণ্যের দামও বৃদ্ধি করার কৌশলে আছে তারা। এতে করে ক্রেতারা প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীদের হাতে। হাতেগোনা কয়েকটি গ্রুপের কাছে দেশের ভোগ্যপণ্য এবং আমদানীপণ্য জিম্মি হয়ে পড়ায় তারা কারো কোন কথাই কর্ণপাত করছে না। আমদানি পণ্যের মূল্য তাদের কাছে কোন মূখ্য বিষয় নয়, তারা যে দাম নির্ধারণ করে দেয় সে দামেই পণ্য বিক্রয় করতে হয়। তাদের মনোপলি বাজারের কারণে এক্ষেত্রে সাধারণ গ্রাহকদের মূলত কিছু করার থাকে না।
‘তাই এসব ভোগ্যপণ্য সিন্ডিকেট দেশ ও জাতির জন্য বাস্তবিক অর্থেই ক্ষতিকারক। দেশের সাধারণ জনগণের পকেট কেটে যারা জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলে তাদেরকে কোনভাবেই ব্যবসায়ী বলা যায় না। আমাদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও এক্ষেত্রে জনগণকে স্বস্তি দিতে পারছে না বলে সাধারণ জনগণের অভিযোগ। তাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দৃঢ়ভাবে শক্তহাতে এসব ভোগ্যপণ্য সিন্ডিকেটকে প্রশ্রয় না দিয়ে এদের লাগাম টেনে ধরতে হবে। নচেৎ দেশ ও জাতিকে এদের করাল গ্রাস থেকে কোনভাবেই রক্ষা করা যাবে না।’ বলেন সুজন।
বিজ্ঞপ্তিতে চসিকের সাবেক এ প্রশাসক বলেন, বিভিন্ন উৎসবের সময় তারা জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা এভাবে নিজেদের পকেটস্থ করে। পবিত্র ইসলাম ধর্মে উপার্জনের পেশা হিসাবে হালাল পথে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে যেমন উৎসাহ দিয়েছে, তেমনি অবৈধ পথে অর্থ-সম্পদ উপার্জন করতেও নিষেধ করেছে। মুনাফাখোরী, কালোবাজারী, মওজুদদারীদের সম্পর্কে ইসলাম ধর্মে সুস্পষ্ট নির্দেশনাও প্রদান করা হয়েছে।
কিন্তু তারপরও অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে দেখা যাচ্ছে যে রোজা, পূজা কিংবা ঈদুল আযহায় জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলে এসব অসাধু ব্যবসায়ীরা। তাই এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বাণিজ্যমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন সুজন।
তিনি আরও বলেন, দেখা গেছে যে পবিত্র ঈদুল আযহার সময় বিদেশি পশু আনাকে কেন্দ্র করে কোরবানি দেওয়া সাধারণ মুসল্লিদের এক সময় জিম্মি করে রাখতো একশ্রেণীর পশু ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে বিদেশি পশু ছাড়া দুইটি ঈদুল আযহা নির্ভাবনায় পালন করেন দেশের মানুষ। এতে করে দেশিয় পশুর বাজার সমৃদ্ধ হয়ে উঠছে দিনের পর দিন। তবে বিদেশি পশু ছাড়া সুশৃঙ্খলভাবে কোরবানি পশুর ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে এখনই। চাহিদা এবং যোগানের মধ্যে যাতে কোন ঘাটতি না থাকে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহবান জানান তিনি।
এভাবেই দেশিয় পশু দিয়ে নির্ভাবনায় কোরবানিতে অংশগ্রহণ করতে পারবে দেশের মানুষ আর ভবিষ্যতে এ শিল্পটি একটি বৃহৎ শিল্পে পরিণত হতে পারবে বলে আশাবাদ সুজনের।