স্টাফ রিপোর্টারঃ
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী তারিকুজ্জামান সানির মৃত্যুর ঘটনায় করা হত্যা মামলায় তার ১৫ বন্ধুর তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন শরীফুল হোসেন, শাকিল আহম্মেদ, সেজান আহম্মেদ, রুবেল, সজীব, নুরজামান, নাসির, মারুফ, আশরাফুল আলম, জাহাঙ্গীর হোসেন লিটন, নোমান, জাহিদ, এটিএম শাহরিয়ার মোমিন, মারুফুল হক মারুফ ও রোকনুজ্জামান ওরফে জিতু।
শনিবার (১৬ জুলাই) ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী আশরাফ উজ্জামান শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ার কবীর বাবুল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, কুতুবপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) শামছুল আলম আসামিদের আদালতে হাজির করে এ রিমান্ড আবেদন করেন। তিনি আদালতে আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তাদের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবীর বাবুল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রিমান্ড আবেদনে মামলার তদন্তকারী ককর্মকর্তা বলেন, আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বুয়েট শিক্ষার্থী সানিকে পদ্মা নদীকে ফেলে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডটি একটি দুর্ঘটনা হিসেবে দেখানোর জন্য তারা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করেন। পরবর্তী সময়ে দোহার থানা-পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সানিকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে।
তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের মোটিভ ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ও তারা নিজেদের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয় আড়াল করার জন্য থানা-পুলিশ,নৌ-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করতে থাকেন।
এসআই শামছুল আলম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে পরিকল্পিতভাবে সানিকে কৌশলে ঘটনাস্থল মৈনট ঘাটের পন্টুনে এনে ধাক্কা মেরে পদ্মা নদীতে ফেলে হত্যা করেছেন মর্মে যথেষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। তাই মামলার মূল রহস্য উদ্ঘাটন, ঘটনার সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত আছে কি না, হত্যার উদ্দেশ্য, মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, গত ১৪ জুলাই একসঙ্গে ১৫-১৬ যুবক পদ্মা নদীতে ঘুরতে যান। সন্ধ্যার পর সানি নামে ওই বুয়েট শিক্ষার্থী নিখোঁজ হন। রাতেই স্থানীয়দের দেওয়া খবরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দোহার থানা পুলিশ। এরপর ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। শুক্রবার (১৫ জুলাই) সকালে সানির মরদেহ উদ্ধার করে ডুবুরি দল। সুরতহাল শেষে ওই বুয়েট শিক্ষার্থীর মরদেহ তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।পদ্মায় বুয়েটের নিখোঁজ ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে সানির বড় ভাই হাসাদুজ্জামান একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় আসামি করা হয় সানির সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া ১৫ বন্ধুকে।