স্টাফ রিপোর্টারঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশবাসী বিদ্যুৎ পাবেন কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং কোভিড-১৯ মহামারির ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক সংকটের কারণে জ্বালানি খাতে কঠোরতা দেখাতে বাধ্য হওয়া সত্ত্বেও সরকার বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখবে। আমাদের যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা এবং করোনাভাইরাসের কারণে মিতব্যয়ী হতে হচ্ছে কারণ, আমদানীর ক্ষেত্রে পরিবহনব্যবস্থায় মূল্যবৃদ্ধি থেকে শুরু করে আকাশছোঁয়া মূল্যস্ফীতি চলছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের কিছুটা সাশ্রয়ী হতে হচ্ছে, তার মানে এই নয় দেশের মানুষ বিদ্যুৎ পাবে না। সবাই বিদ্যুৎ পাচ্ছে এবং পাবে। তবে এ ক্ষেত্রে সবাইকে একটু মিতব্যয়ী হতে হবে।’
বুধবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটের দিকে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের পারমাণবিক চুল্লি বা নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপনকাজের উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল সবাইকে বিদ্যুৎ দেওয়ার এবং আমরা সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পেরেছি। প্রতিটি ঘরে আলো জ্বেলে সমগ্র বাংলাদেশকে আমরা আলোকিত করেছি। ফলে আজকে উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে এবং তারাও সাশ্রয়ের দিকে নজর দিয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেকেরই উপলব্ধি করা উচিত যে বিশ্ব একটি গ্লোবাল ভিলেজ এবং একে অন্যের ওপর ওপর নির্ভরশীল। কাজেই বিশ্বব্যাপী চলমান মন্দার অভিঘাত বাংলাদেশেও যে পড়বে, সেটাই স্বাভাবিক বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সহযোগিতা করায় পাবনা ও ঈশ্বরদীবাসীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে যারা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের ধন্যবাদ জানাই। পাবনা ও ঈশ্বরদীর জনগণকেও ধন্যবাদ জানাই। কারণ তাদের কাছ থেকে আমরা সহযোগিতা পেয়েছি। একটা প্রকল্প করতে গেলে কিছু বাধার সম্মুখীন হতে হয়, কিন্তু এখানে সেটা হয়নি। এ ছাড়া এটা দীর্ঘদিনের একটা প্রকল্প, যা তাদের (পাবনাবাসী) জন্য গর্বের বিষয় বলে আমি মনে করি।’
এর আগে গত বছরের ১০ অক্টোবর, প্রধানমন্ত্রী আরএনপিপির প্রথম ইউনিটে আরপিভি উদ্বোধন করেছিলেন। প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী, পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে একই পরিমাণ বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, রাশিয়ার পরমাণু শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান। অনুষ্ঠানে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।