স্টাফ রিপোর্টারঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘অতি জরুরি’ ভিত্তিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন জোরদার করার দাবি জানিয়ে বলেছেন, এ সংকট প্রশ্নে প্রধান আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর নিষ্ক্রিয়তা বাংলাদেশকে মর্মাহত করেছে। অথচ, সীমিত সম্পদ সত্ত্বেও মানবিক দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশ শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছিল।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) অধিবেশনের ফাঁকে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের উচ্চ পর্যায়ের এক আলোচনায় তিনি বলেন, ‘আমি বারবার বলেছি, তারা (রোহিঙ্গারা) মিয়ানমারের নাগরিক। সুতরাং, তাদেরকে অবশ্যই নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিয়ে তাদের জন্মভূমি মিয়ানমারেই ফিরে যেতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, গত চার বছর ধরে আমরা খুবই আশাবাদী ছিলাম মিয়ানমারের এসব বাস্তুচ্যুত মানুষ নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিয়ে তাদের নিজ মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরে যাবে। তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য আমরা বৈশ্বিক সমাবেশ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপর আস্থা রেখেছিলাম।
তিনি বলেন, ২০১৭ সালে এ সংকটের পর থেকে সকল জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে আমি এই সংকটের টেকসই সমাধানে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়ে আসছি। আমার সরকার মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বজায় রেখেছে। আঞ্চলিক ফ্রন্টে চীন, ভারতসহ বড় শক্তিগুলোকে এই প্রচেষ্টায় সঙ্গে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমরা সব প্রচেষ্টার পাশাপাশি আসেমকেও আরও সক্রিয়ভাবে পাওয়ার চেষ্টা করেছি। বিভিন্ন ফ্রন্টে আমরা গুরুত্বপূর্ণ দেশ ও জাতিসংঘের সংস্থাগুলোকে যুক্ত করে জাতিসংঘের রেজুলেশনের মাধ্যমে ইস্যুটি টেবিলে রেখেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঝুলে থাকা প্রত্যাবর্তন, আমাদের সম্পদ ও ভূমির সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও মিয়ানমারের বিতাড়িত নাগরিকদের বাংলাদেশে নিরাপত্তা ও অস্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছি। জনবহুল এলাকায় এত বিপুল সংখ্যক মানুষের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান আশপাশের পরিবেশ ও বাস্তুশাস্ত্রের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। আশ্রয়ের জন্য পাহাড় ও বনভূমি কেটে ফেলা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, এমনকি এই কোভিড-১৯ মহামারির চ্যালেঞ্জের মধ্যেও আমরা রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করার কথা ভুলে যাইনি। প্রত্যেকেই নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত কেউই নিরাপদ না- আমরা আমাদের এই প্রত্যয়ের প্রতি অবিচল থেকেছি। আমরা আমাদের নাগরিকদের সঙ্গে এই মানুষগুলোকে টিকা কর্মসূচিতে অন্তভূক্ত করেছি।
ভাষানচরের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বীপটির যথাযথ অবকাঠামো রয়েছে। প্রকৃত পক্ষে সেখানে ১ লাখ মানুষের সাময়িকভাবে বসবাসের ভালো সুবিধা রয়েছে। এখন পর্যন্ত কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে ভাষাণচরের ১৮ হাজার ৫০০ জনকে স্থানান্তর করা হয়েছে। স্বেচ্ছায় যারা সেখানে যেতে চেয়েছে তাদের স্থানান্তর করা হয়েছে। আমরা শীগ্রই ভাষাণচরে জাতিসংঘের কার্যক্রম দেখতে চাই।