স্টাফ রিপোর্টারঃ
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা নেতা মো. মুহিবুল্লাহ হত্যার পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন। জঘন্য ওই অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে মুহিবুল্লাহ হত্যার বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনের ওই বিবৃতিটি প্রচার করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা এই জঘন্য অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে তার মৃত্যুর পূর্ণ ও স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানাই।
মুহিবুল্লাহকে বিশ্বব্যাপী রোহিঙ্গাদের অধিকারের পক্ষে ‘সাহসী ও জোরালো বক্তা’ হিসাবে বর্ণনা করে ব্লিঙ্কেন বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত ও বেদনাহত।
জেনিভাতে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে এবং যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে স্বজাতির অধিকারের পক্ষে তার জোরালো অবস্থানের কথাও বিবৃতিতে স্মরণ করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, সফরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্টের কাছে তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছিলেন এবং ধর্মীয় কারণে নির্যাতনের শিকার অন্যদের সঙ্গে মিলে বক্তব্য দিয়েছিলেন।
এদিকে মুহিবুল্লাহ হত্যার তদন্তের দাবিতে এর আগে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাশাপাশি জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বিবৃতি দিয়েছে।
বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুতুপালং- ১ (পূর্ব) ক্যাম্পে তার নিজস্ব একটি অফিসে বসেছিলেন রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ। এই সময়ে দুর্বৃত্তরা তাকে কয়েক রাউন্ড গুলি করে চলে যায়। পরে লোকজন তাকে উদ্ধার করে এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ হত্যাকাণ্ডের পরেরদিন বৃহস্পতিবার অজ্ঞাতনামা ১৫ -২০ জনকে আসামি করে উখিয়া থানায় মামলা করেন নিহত মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ।
মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে উখিয়ার লম্বাশিয়াসহ আশপাশের রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিবারের সন্দেহ, রোহিঙ্গাদের আরেকটি সংগঠন আরসার সদস্যরা তাকে হত্যা করে থাকতে পারে।
নিহত মুহিবুল্লাহ রোহিঙ্গাদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কথা বলার জন্য ২০১৯ সালের জুলাই মাসে তিনি জাতিসংঘে গিয়েছিলেন। এই সময়ে তিনি মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাত করেন।
মুহিবুল্লাহর মৃত্যুতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তিনি আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি পিস এন্ড হিউম্যান রাইটস নামে একটি সংগঠনের চেয়ারম্যান। মুহিবুল্লাহ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পক্ষে কাজ করতেন।