নিউজ-ডেস্ক:
বৃদ্ধ বয়সে সন্তানদের অবহেলার অ’ভিযোগ করে থাকেন অনেক মা-বাবা। বিশেষ করে বিয়ের পর ছেলেদের ‘পাল্টে’ যাওয়া। এজন্য দায়ী করা হয় ছেলের বউদের। ‘পিতা-মাতার ভরণপোষণ’ বিধিমালার খসড়ায় স্পষ্ট করে মা-বাবার উপযুক্ত পরিচর্যা নিশ্চিত করতে স্ত্রী’ ও তাদের সন্তানদের ওপর দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে পাস হওয়া পিতা-মাতার ভরণপোষণ আইনের আওতায় বিধিমালার খসড়া তৈরি করা হয়েছে। খসড়া বিধিমালার ১৮ ধারায় বলা হয়েছে, প্রত্যেক সন্তানকে তার পিতা-মাতার যথোপযুক্ত পরিচর্যা নিশ্চিত করতে হবে।
পিতা-মাতার ভরণপোষণের ন্যূনতম মানদ’ন্ড নির্ধারণ করে খসড়া বিধিমালার ১১ ধারায় বলা হয়েছে, প্রত্যেক সন্তান মা-বাবাকে সঙ্গে রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। একাধিক সন্তান থাকলে মা-বাবা কোন সন্তানের সঙ্গে বসবাস করবেন, তা তাদের ইচ্ছানুযায়ী হবে।
সন্তান বা তার স্ত্রী’-সন্তান মা-বাবার সেবা ঠিকমতো করছে কি না তা যাচাই করতে সারা দেশের ওয়ার্ড পর্যায়ে সহায়ক কমিটি থাকবে। এ ছাড়া ইউনিয়ন, পৌরসভা, উপজে’লা, জে’লা, সিটি করপোরেশন ও জাতীয় পর্যায়েও কমিটি থাকবে। মা-বাবার জন্য সন্তানরা শুধু টাকা দিলেই হবে না, বছরে কমপক্ষে দু’বার সাক্ষাৎ করতে হবে।
অনেক সন্তান বা তার স্ত্রী’ মা-বাবার আচার-আচরণের সমালোচনা করেন। এজন্য মা-বাবার আচরণবিধি নির্ধারণ করা হয়েছে খসড়া বিধিমালায়। বলা হয়েছে, মা-বাবা তাদের প্রয়োজন বা অনুভূতির কথা সন্তানদের একত্রে বা আলাদাভাবে জানাবেন। যেকোনো সংকটের কথা সন্তানদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। মা-বাবা পরিবারের সবার প্রতি সমান দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করবেন। মা-বাবার কোনো প্রয়োজন সন্তান তাৎক্ষণিকভাবে মেটাতে না পারলে বা দেরি হলে যথাসম্ভব ধৈর্য ধারণ করবেন। তাদের নিজস্ব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ সুরক্ষার চেষ্টা করবেন।
মা-বাবার সঙ্গে সন্তানের আচরণ কেমন হবে তা উল্লেখ করে খসড়া বিধিমালার ১৩ ধারায় বলা হয়েছে, মা-বাবার সঙ্গে সর্বাবস্থায় ম’র্যাদাপূর্ণ আচরণ করতে হবে, যত্নসহকারে তাদের দেখভাল করতে হবে।
মা-বাবার জন্য খাদ্য প্রসঙ্গে খসড়া বিধিমালার ১৪ ধারায় বলা হয়েছে, ‘পিতা-মাতার জন্য দৈনিক ন্যূনতম তিনবার বা পিতা-মাতার প্রয়োজন অনুসারে খাদ্য সরবরাহ করিবে : তবে শর্ত থাকে যে, পিতা-মাতার বয়স, অ’সুস্থতা বা প্রতিবন্ধিতা বিবেচনায় আনিয়া, প্রয়োজনে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরাম’র্শ অনুসারে নির্ধারিত পুষ্টিমান নিশ্চিত করিতে হইবে।
ঋতু বিবেচনায় নিয়ে মা-বাবার পছন্দ ও শারীরিক সক্ষমতা বিবেচনায় তাদের জন্য আরাম’দায়ক পোশাক নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করে এতে বলা হয়েছে, বছরে যেকোনো একটি উৎসবে অ’তিরিক্ত এক সেট নতুন পোশাক সরবরাহ করতে হবে।