মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বৈষম্য ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর


প্রকাশের সময় :২৫ মার্চ, ২০২৪ ৮:২২ : অপরাহ্ণ

স্টাফ রিপোর্টার:

সব প্রকার বৈষম্য ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে দেশবাসীসহ বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, ২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান হানাদার বাহিনী বাংলাদেশে বিশ্বের বর্বরতম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। অত্যন্ত দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে স্মরণ করি কালরাতে আত্মোৎসর্গকারী সেই সব শহীদদের, যাদের তাজা রক্তের শপথ বীর বাঙালিদের অস্ত্রধারণ করে স্বাধীনতা অর্জন না করা পর্যন্ত জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ ও সংঘাত চাই না, নর-নারী-শিশু হত্যা আমাদের তীব্রভাবে ব্যাথিত করে। আমরা যুদ্ধ চাই না, আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। টেকসই শান্তি বিরাজমান থাকলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শান্তির নীতি অনুসরণ করি। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাজার বছর ধরে শৃঙ্খলিত বাঙালি জাতিকে মুক্ত করার প্রয়াসে সারা জীবন ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তিনি বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে গিয়ে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ প্রথম গ্রেপ্তার হন এবং কারাবরণ করেন। সেই থেকে ‘৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর একুশ দফা, ’৬২-এর আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানসহ সব আন্দোলন সংগ্রামে অত্যন্ত দূরদর্শীতার সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকীতে ঘোষণা করেছিলেন, ‘আজ হতে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় এদেশটির নাম হবে পূর্ব-পাকিস্তানের পরিবর্তে শুধুমাত্র বাংলাদেশ।’

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু মন্ত্রীত্ব ছেড়ে দলকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করেছিলেন এবং স্বাধীনতা অর্জনের জন্য পুরো জাতিকে প্রস্তুত করেছিলেন। জাতির পিতার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ’৭০-এর নির্বাচনে জাতীয় পরিষদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু, পাক-সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তরে নানা টালবাহানা শুরু করে। বৈঠকের মাধ্যমে সময় ক্ষেপণ করে নিরস্ত্র বাঙালি নিধনের উদ্দেশ্যে গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ২ মার্চ থেকে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন; ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে দীর্ঘ ২৩ বছরের শাসন-শোষণ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট রূপরেখা প্রদান করেন এবং ১৫ মার্চ থেকে ৩৫ দফা নির্দেশনা পালনের আহ্বান জানান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নির্দেশ সারা পূর্ব-বাংলায় অক্ষরে অক্ষরে পালিত হয়। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের সব প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড তার আদিষ্ট পথেই পরিচালিত হতে থাকে। বাংলাদেশে ইয়াহিয়ার শাসন সম্পূর্ণ অচল হয়ে যায়। ইয়াহিয়া-ভুট্টো বারবার সমঝোতার প্রস্তাব দিতে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা ক্ষমতার মোহ ত্যাগ করে এদেশের মুক্তিকামী মানুষের পক্ষে অটল থাকেন। ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবসে সারাদেশে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় অসহযোগ আন্দোলনের মধ্যেই ইয়াহিয়া গোপনে ঢাকা ত্যাগ করেন। মধ্য রাতে পাকিস্তানি সৈন্যরা সাঁজোয়া ট্যাঙ্ক নিয়ে ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ পরিচালনা করে ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালিদের হত্যা করতে শুরু করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানা এবং রাজারবাগে অতর্কিতে হামলা চালিয়ে ছাত্র-শিক্ষক, বাঙালি পুলিশ ও সামরিক সদস্যদের হত্যা করতে থাকে। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে গ্রেপ্তার করে। এর অব্যবহিত পূর্বেই জাতির পিতা স্বাধীনতার চূড়ান্ত ঘোষণা বার্তা লিখে যান- ‘ইহাই হয়তো আমার শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। —চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও।’—যা প্রথমে ইপিআর এর ওয়্যারলেস মাধ্যমে প্রচারিত হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মাধ্যমে এই বার্তা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। পাকিস্তানিরা বন্দি নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়; এমনকি তাকে হত্যা করার চেষ্টা করে। ১৩ জুন পাকিস্তানি সাংবাদিক অ্যান্থনি মাসকারেনহাস যুক্তরাজ্যের ‘দ্য সানডে টাইমস’ পত্রিকার প্রথম পাতায় ‘জেনোসাইড’ শিরোনামে বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানিদের নির্মম বর্বরতার বাস্তবচিত্র নির্ভর একটি বিস্তারিত নিবন্ধ প্রকাশ করলে বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্বজনমত সৃষ্টি ত্বরান্বিত হয়। দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র যুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়, ২ লাখ মা-বোন সম্ভ্রম হারায় এবং গোটা দেশ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

তিনি আরও বলেন, বাঙালি জাতির পিতা, রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের নির্জন কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তার প্রাণাধিক প্রিয় স্বাধীন মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তন করে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করেন। শূন্য হাতে বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর সহায়তা নিয়ে ছিন্নমূল মানুষকে পুনর্বাসন করেন, অবকাঠামো পুনঃস্থাপন ও উন্নয়ন করেন এবং উৎপাদন খাত ও অর্থনীতিকে একটি শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করান। মাত্র সাড়ে তিন বছরেই জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের স্বীকৃতি প্রদান করে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, ’৭১-এর পরাজিত স্বাধীনতা বিরোধী চক্র বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালাতে থাকে। ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট আরেক কালরাতে ঘাতকদের নির্মম বুলেটের আঘাতে ক্ষমতাসীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে শাহাদাতবরণ করেন। খুনি মোস্তাক-জিয়া ও তাদের উত্তরসূরিরা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে দেশে স্বৈরশাসন কায়েম করে।

ট্যাগ :