স্টাফ রিপোর্টারঃ
রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহ হত্যা মামলায় হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও দন্ড কমানো বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবীরা জানান, শুধু নয় আসামির আপিলে নথিপত্রে পৃষ্ঠার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৩৪ হাজার ৩’শ ৪৫। অন্য আসামির আপিলের ক্ষেত্রে এসব নথি থেকে রেহাই দিতে প্রধান বিচারপতি বরাবর আবেদন করা হয়েছে। অনুমতি পাওয়া গেলে অন্য আসামিদের আপিল ১৩ জানুয়ারির মধ্যে করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত কামাল মোল্লা, মনিরুজ্জামান, ইউসুফ আলী, আবু সাঈদ আলম সাঈদুর রহমান, আনিসুজ্জামান, ফজলুল করিম, বজলুর রশীদসহ নয়জনের আপিল আবেদন মঙ্গলবার ৫ জানুয়ারি আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় দায়ের করা হয়েছে। এসব আপিলে বিচারিক আদালতের রায়, হাইকোর্টের রায়, আনুষঙ্গিক কাগজপত্রসহ মোট পৃষ্ঠাসংখ্যা ৮ লাখ ৩৪ হাজার ৩৪৫ এ দাঁড়িয়েছে।
তিনি জানান, অন্য আসামিদের ক্ষেত্রে যেন এসব নথি না দিতে হয়, সে ব্যাপারে প্রধান বিচারপতি বরাবরে আবেদন করা হয়েছে। তিনি অনুমতি দিলে ১৩ জানুয়ারির মধ্যে তাদের বিষয়ে আপিল করতে পারবো।
হাইকোর্টে খালাসপ্রাপ্ত এবং যাদের সাজা কমানো হয়েছে সে সব আসামিদের বিরুদ্ধেও ইতোমধ্যে আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
এ ঘটনায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ১৫২ জন বিডিআর সদস্যকে মৃত্যুদন্ড, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড, ২৫৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড এবং ২৭৮ জনকে খালাস দিয়ে রায় দেন বিচারিক আদালত। ওই রায়ের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানিশেষে হাইকোর্ট ২০১৭ সালের ২৬ ও ২৭ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেন।
গত বছরের ৮ জানুয়ারি ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার হাইকোর্টের রায় প্রকাশ হয়।
বিচারিক আদালতে দেয়া মৃত্যুদন্ড দন্ডিতদের মধ্যে ১৩৯ জনের মৃত্যুদন্ড হাইকোর্টে বহাল রাখা হয়েছে। এছাড়া একজন মারা গেছেন। বাকি ১২ জনের মধ্যে আটজনের সর্বোচ্চ সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন ও অন্য চারজনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। যাবজ্জীবন দেয়া হয়েছে ১৮৫ জনকে। তার মধ্যে একজন মৃত্যুবরণ করেছেন।
১৩ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন দু’জনকে। ১৫৭ জনকে ১০ বছর করে কারাদন্ড দিয়েছেন। এর মধ্যে দু’জন মারা গেছেন। ১৩ জনকে সাত বছর করে, ১৪ জনকে তিন বছর করে, এক বছর করে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে দু’জনকে। মোট ৫৫২ জনকে সাজা এবং ২৮৩ জনকে খালাস দেয়া হয়েছে। মোট মারা গেছেন ১৪ জন।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর (বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি) বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। ওই বিদ্রোহের সময় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন।
আসামির সংখ্যার দিক থেকে এটিই দেশের ইতিহাসে বৃহত্তর মামলা।