মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যায়ে ‘ক্যারাভান হসপিটাল’ করে দিচ্ছেন শিল্পপতি হাসান মাহমুদ চৌধুরী


প্রকাশের সময় :১ জুন, ২০২০ ১১:৫১ : পূর্বাহ্ণ

এম.এইচ মুরাদঃ

করোনার এই দুর্যোগে সামর্থ্যবান ও ধন্যাঢ্য মানবতাবাদী, মানবদরদী মানুষগুলো যে যেভাবে পারছে অসহায় মানুষের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দাড়াঁতে চেষ্টা করছে। তারই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামের বিশিষ্ট শিল্পপতি, রাজনীতিবিদ ও দানবীর আলহাজ্ব হাসান মাহমুদ চৌধুরী সিআইপি এবং মানবতাবাদী সংগঠন হিসাবে খ্যাত কাশেম-নুর ফাউন্ডেশন করোনা সংকটের প্রথম থেকেই বিপুল পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ থেকে শুরু করে বিভিন্নভাবে অসহায় মানুষের পাশে ছিলেন এবং আছেন। এরই ধারাবাহিকতায় এখন করোনা আক্রান্ত রোগীদের সাস্হ্য সেবা দিতে নতুন আরেকটি সেবা যোগ করতে চলেছেন, তা হলো ‘ক্যারাভান হসপিটাল’।

ক্যারাভান হসপিটাল মূলত একটি বিশেষায়িত গাড়ি। এ গাড়িতে থাকবে আইসিইউ ও ভেন্টিলাইজেশন। থাকবে নার্স স্টেশন ও অপারেশন থিয়েটারও। প্রতিটি গাড়ির প্রস্থ সাড়ে আট ফুট ও উচ্চতা নয় ফুট। কোনটির দৈর্ঘ্য চল্লিশ ফুট, কোনটি বিশ ফুটের। ছোট গাড়িতে স্থাপন করা হবে দুটি শয্যা, বড়টিতে চারটি। এসব গাড়ি ছুটবে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে। করোনা আক্রান্তদের এসব গাড়িতে রেখেই দেওয়া হবে চিকিৎসা।

এই গাড়িকে বলা হয় ‘ক্যারাভান হসপিটাল’। চীনের উহান শহরে করোনা আক্রান্তদের এই ধরনের ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালেও চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল।

এবার চীনের উহানের আদলে বাংলাদেশেও ক্যারাভান হাসপাতাল নির্মিত হতে যাচ্ছে। এই হাসপাতালের উদ্যোক্তা কেএন হারবার কনসোর্টিয়ামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও হাসান মাহমুদ চৌধুরী সিআইপি। রাজধানী ঢাকার মীরপুর বাংলা কলেজ ক্যাম্পাসে এ হাসপাতালের কাজ চলছে।

ওই প্রতিষ্ঠান চার শয্যার ১১টি ও দুই শয্যার ১৪টি ক্যারাভানকে হাসপাতালে রূপান্তর করতে শুরু করেছে কাজ। মোট ২৫টি ক্যারাভানে তারা ৭২ শয্যার করোনা হাসপাতাল গড়তে চায়। ৭২ শয্যার এই হাসপাতাল চাইলেই দেশের যেকোন স্থানে স্থানান্তর করা যাবে।

হাসান মাহমুদ চৌধুরী এ হাসপাতালের বিষয়ে বলেন, ‘আমরা সরকারকে ৭২ শয্যার বিষেশায়িত ক্যারাভান হাসপাতাল নির্মাণের বিষয়ে চিঠি দিয়েছি। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল প্রফেসর ড. ইকবাল কবির আমাদের কাছে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ক্যারাভান হাসপাতাল স্থানান্তরের বিষয়গুলোও খতিয়ে দেখছেন। ইতোমধ্যে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক ক্যারাভান হাসপাতাল তৈরির পক্ষে মতামত দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়েছে। এই হাসপাতালের বড় বৈশিষ্ট্য হলো প্রয়োজনে দেশের যেকোন স্থানে স্থানান্তর করা যাবে। চীনের উহানেও ক্যারাভান হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছিল।’

কেএন হারবাল কনসোর্টিয়াম সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতাল করার উপযোগী তাদের ২৫টি ক্যারাভান রয়েছে। যার মধ্যে ১১টির দৈর্ঘ্য ৪০ ফুট এবং ১৪টির দৈর্ঘ্য ২০ ফুট। প্রতিটি ক্যারাভান সাড়ে ৮ ফুট প্রস্থ ও উচ্চতা ৯ ফুট। ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যরে ১১টি ক্যারাভানে ৪টি করে ৪৪টি শয্যা এবং ২০ ফুট দৈর্ঘ্যরে ১৪টি ক্যারাভানে ২টি করে ২৮টি শয্যা রয়েছে।

বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ এসব ক্যারাভানে মোট বেড রয়েছে ৭২টি। যাতে শুধুমাত্র স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অনুমোদিত চিকিৎসা সামগ্রী যেমন আইসিইউ ও ভেন্টিলাইজেশনসহ আনুষঙ্গিক চিকিৎসা সামগ্রী সংযোজন করলে হাসপাতালে রূপান্তর করা যাবে। প্রয়োজনে এটি দেশের যেকোন জায়গায় স্থানান্তরও করা যাবে।

৭২ শয্যার প্রস্তাবিত ক্যারাভান হাসপাতালে রয়েছে অফিস ক্যারাভান, কিচেন ক্যারাভান, প্রশস্ত ডাইনিং হল, সম্মেলন কক্ষ ও প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থাসমৃদ্ধ ক্যারাভান। ক্যারাভানগুলো সম্পূর্ণ স্ব-স্ব ক্ষেত্রে কার্যকর ও উপযোগী। সবগুলো ক্যারাভানই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, আসবাবপত্র এবং অভ্যন্তরীণ পয়ঃনিষ্কাশন সমৃদ্ধ।

এই ক্যারাভানগুলোতে আইসিইউ, ভেন্টিলাইজেশন, নার্স স্টেশন, অপারেশন থিয়েটার রূপান্তর করে আনুষঙ্গিক চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ করলে এখনই করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা শুরু করা যাবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা রোগীর আইসোলেশনের জন্য এ ধরনের হাসপাতাল হবে খুবই উপযোগী।

জানা গেছে, হাসপাতাল স্থাপনের ব্যয় নির্বাহ করবে কেএন হারবাল কনসোর্টিয়াম। তবে সরকারি নিয়ম মেনে সেখানে চিকিৎসা হবে এতে। আর চিকিৎসার বিষয়টি সমন্বয় করবেন সরকারি কর্মকর্তারা। পুরো কাজটি সম্পন্ন করতে প্রায় আট কোটি টাকা খরচ হতে পারে। সরকার চাইলে পরবর্তীতে এটির কার্যক্রম আরও সম্প্রসারণ করা যাবে বলেও জানান উদ্যোক্তারা।

কেএন হারবার কনসোর্টিয়াম লিমিটেড বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। যা গ্যাস উৎপাদন ও খননের কাজে যুক্ত। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ৪ নম্বর গ্যাস কূপ খননের কাজ করছে কেএন হারবার কনসোর্টিয়াম লিমিটেড। বেগমগঞ্জে কেএন হারবার কনসোর্টিয়াম লিমিটেডের ২৫টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিশেষায়িত ক্যারাভান আছে। সাতটি দেশের বিশেজ্ঞরা গ্যাস খনন ও উত্তোলনের কাজে এসে এসব বিশেষায়িত ক্যারাভানে অবস্থান করেন। করোনা মহামারি শুরু হওয়ার আগ মুহূর্তে বিশেষজ্ঞরা নিজ নিজ দেশে ফিরে যান। বর্তমানে ক্যারাভানগুলো অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে। তাই জাতীয় এই দুর্যোগে এসব ক্যারাভান কাজে লাগাতে এগিয়ে আসেন প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার হাসান মাহমুদ চৌধুরী।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা নিয়ে দেশের হাসপাতালগুলোতে চলছে সংকট। স্বাস্থ্য সরকারি হাসপাতালে ৫০৮টি আইসিইউ বেড ও বেসরকারি হাসপাতালে ৭৩৭টি আইসিইউ বেড আছে। করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেলে আইসিউ সংকট দেখা দিতে পারে। তাই কেএন হারবার কনসোর্টিয়ামের উদ্যোগে ক্যারাভান হাসপাতাল নির্মিত হয়ে গেলে এই সংকট কিছুটা হলেও কমবে।

ট্যাগ :