মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, বুধবার, ৮ মে ২০২৪ ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পা দিয়ে সিনহার গলা চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করেন ওসি প্রদীপ! আদালতে প্রত্যক্ষদর্শী সিফাতের সাক্ষী


প্রকাশের সময় :২৪ আগস্ট, ২০২১ ৫:১৮ : অপরাহ্ণ

স্টাফ রিপোর্টারঃ

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় আজ মঙ্গলবার কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন সাহেদুল ইসলাম সিফাত। সিফাত মামলার ২ নম্বর সাক্ষী ও সিনহার সঙ্গী।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে সাহেদুল ইসলাম আদালতকে বলেন, সেদিন রাতে (৩১ জুলাই, ২০২০) লিয়াকত আলীর গুলিতে রাস্তায় ঢলে পড়ে কাতরাচ্ছিলেন সিনহা মো. রাশেদ খান। টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রথমে লিয়াকত আলীর সঙ্গে আড়ালে গিয়ে কথা বলেন। এরপর সিনহার কাছে গিয়ে উত্তেজিত কণ্ঠে আপত্তিকর ভাষায় গালমন্দ করেন প্রদীপ। এরপর তিনি নিজের পা দিয়ে সিনহার শরীর নড়াচড়া করে দেখেন, তখনো সিনহা জীবিত ছিলেন এবং ‘পানি পানি’ করছিলেন। তখন প্রদীপ সিনহার বুকে লাথি মারেন এবং পা দিয়ে গলা চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। তল্লাশিচৌকির ভেতরে নিয়ে তাঁকেও (সিফাত) মারধর করেন প্রদীপ।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত সিনহার সঙ্গে গাড়িতে ছিলেন সিফাত। আজ মঙ্গলবার আলোচিত হত্যা মামলাটির দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। আদালতের বিচারক ছিলেন জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল।

এর আগে আদালতে মামলার বাদী ও সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌসকে ঘটনার বিষয়ে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। সকাল সোয়া ১০টায় শুরু হওয়া দুজন সাক্ষীর (শারমিন ও সিফাত) জেরা ও সাক্ষ্য দেওয়া শেষ হয় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে। মধ্যখানে বেলা সোয়া দুইটার দিকে এক ঘণ্টা বিরতি দেন বিচারক। রাত পৌনে আটটার দিকে প্রদীপসহ মামলার ১৫ জন আসামিকে আদালত থেকে প্রিজন ভ্যানে তুলে পুনরায় কারাগারে পাঠানো হয়।

এ সময় আদালতের কাঠগড়ায় ছিলেন মামলার অন্যতম আসামি প্রদীপ কুমার দাশ, লিয়াকত আলীসহ ১৫ জন আসামি। সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আদালতকে দেওয়া সাক্ষ্য ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের জেরার মুখে মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বলেন, টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশের নির্দেশে পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে খুন হন সিনহা মো. রাশেদ। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণ জেনে গত বছরের ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি। এ হত্যাকাণ্ড ছিল পূর্বপরিকল্পিত। তিনি অভিযুক্ত ১৫ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন আদালতের কাছে।

মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে শুরু হয় দ্বিতীয় দিনের জেরা ও সাক্ষ্য গ্রহণ। শুরুতে মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌসকে হত্যাকাণ্ডের নানা বিষয়ে জেরা করেন আসামিপক্ষে তিনজন আইনজীবী। আইনজীবী রানাদাশ গুপ্ত লড়েন প্রদীপের পক্ষে। অপর দুজন আইনজীবী চন্দন দাশ ও সৈকত কান্তি দে লড়েন পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও এএসআই লিটন মিয়ার পক্ষে।

বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বাদীর জেরা শেষ হলে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ডাকা হয় মামলার ২ নম্বর সাক্ষী সাহেদুল ইসলাম সিফাতকে। সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত আদালতকে ঘটনার বিষয়ে সাক্ষ্য দেন সিফাত।

পরে আদালত প্রাঙ্গণে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি ফরিদুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, মঙ্গলবার বাদীর জেরা সম্পন্ন এবং সিফাতের সাক্ষ্য আংশিক সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার অবশিষ্ট সাক্ষ্য প্রদান শেষে তাঁকে জেরা করবেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। পর্যন্ত টানা তিন দিনে মোট ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের কথা রয়েছে। এ মামলার মোট সাক্ষী ৮৩ জন।

জেরা শেষে রাত পৌনে আটটায় আদালত প্রাঙ্গণে মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের প্রতি তাঁর আস্থা অনেক, আশা করছেন ন্যায়বিচার পাবেন।

জেরা শেষে আদালত প্রাঙ্গণে বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপের আইনজীবী রানা দাশ গুপ্ত সাংবাদিকদের বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রদীপ কুমার দাশ মোটেও জড়িত ছিলেন না। তিনি আদালতের কাছে সেটাই প্রমাণের চেষ্টা করছেন। তবে অভিযোগপত্রের বর্ণনার সঙ্গে বাদীর বক্তব্যের মিল পাচ্ছেন না দাবি করে এই আইনজীবী বলেন, আদালতের প্রতি তাঁরও আস্থা আছে। আদালতের কাছে ন্যায়বিচার পাবেন, আশা এই প্রবীণ আইনজীবীর।

আদালত সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি (টেকনাফে দুটি, রামুতে একটি) মামলা করে। পুলিশের মামলায় সিনহার সঙ্গে থাকা সাহেদুল ইসলাম সিফাতকে গ্রেপ্তার হন। এরপর সিনহা যেখানে ছিলেন, হিমছড়ির নীলিমা রিসোর্টে ঢুকে তাঁর ভিডিও দলের দুই সদস্য শিপ্রা দেবনাথ ও তাহসিন রিফাত নুরকেও আটক করে পুলিশ। পরে নুরকে ছেড়ে দিলেও শিপ্রা ও সিফাতকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। পরে তাঁরা জামিনে মুক্তি পান।

ঘটনার পাঁচ দিন পর অর্থাৎ ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। চারটি মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় র‌্যাব।

২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র‌্যাব-১৫ কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম।

ট্যাগ :