স্টাফ রিপোর্টারঃ
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় এবার পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও মাটি চাষের উপযুক্ত হওয়ায় পাট চাষে সফলতা পেয়েছেন এই উপজেলার কৃষকরা। যদিও এবছর অনাবৃষ্টির কারণে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে সমস্যায় পড়েছে কৃষকরা। পাট জাগ দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত অর্থ ব্যায় করতে হয়েছে তবে পাটের ভালো দাম পাওয়ায় তারা খুশি হয়েছে।
শনিবার (৬ আগষ্ট) উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায় পানির অভাব হলেও চাষিরা পাট কেটে তা নদী, নালা, খাল, বিল ও ডোবায় জাগ দিয়ে রেখেছে। কোথাও কোথাও দেখা গেছে নারী-পুরুষের অংশ গ্রহনে পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজ চলছে।
কেউ কেউ আঁশ ছাড়ানো, সেটা রোদে শুকিয়ে হাটে বাজারে তা বিক্রিসহ সব মিলিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
এ বছর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। এবার উপজেলায় পাটের আবাদ হয়েছে চার হাজার ৬৬০ হেক্টর জমিতে। পাট চাষের শুরুতে বৃষ্টিপাত কম থাকায় অনেক স্থানে চাষ কিছুটা দেরিতে শুরু হলেও ফলন ভালো হয়েছে। ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকেরা খুশি হয়েছে। কৃষকের মুখে এখন হাঁসির ঝিলিক।
গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে ভালো মানের পাটের মূল্য তিন হাজার টাকা মণ ও নিম্ন মানের পাটের মূল্য ২৮‘শ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। ফলে ন্যায্য মূল্য পেয়ে পাট চাষীদের মাঝে এখন পাট চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
গোয়ালন্দ বাজারের পদ্মার মোড় এলাকায় পাট কিনছেন খানখানা পুর থেকে আসা এলাম শেখ জানান এবার অন্যান্য বছর থেকে পাটের বাজার অনেক ভালো। একমন ভালো পাট তিন হাজার টাকা থেকে বত্রিশশো টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। কৃষক পাট জাগ দেওয়া নিয়ে সমস্যায় পড়লেও ভালো দাম পেয়ে তারা আনন্দিত।
উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের নাসির সরদার পাড়া গ্রামের কৃষক মো. আজিজল শেখ বলেন, ৯ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম পাটও ভালো হয়েছে এবং অন্য বছরের তুলনায় দাম বেশি হওয়ায় লোকসানে পড়তে হচ্ছে না।
উপজেলার উজান চর ইউনিয়নের রিয়াজ উদ্দিন গ্রামের কৃষক মো. আব্দুস ছামাদ জানান, মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় পাট নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম তবে পড়ে বৃষ্টি হওয়ার কারণে ফলন ও ভালো হয়েছে। এবার আমি ৪ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম বাজারে পাটের মূল্য বেশি হওয়ার কারণে আগামি বছর আরো বেশি জমিতে পাট চাষ করবো বলে মনেকরছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. খোকন উজ্জামান বলেন, এ মৌসুমে উপজেলায় চার হাজার ৬৬০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে অনাবৃষ্টি ও প্রচন্ড রোদের কারণে ডোবা, নালায় পাট জাগ দেওয়া নিয়ে সমস্যা তৈরি হলেও ভালো দাম পেয়ে কৃষকরা খুশি হয়েছে।